|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় অলোক মুখোপাধ্যায়
by
·
Published
· Updated
ভিন্নস্বর
শেয়ার ট্যাক্সিতে অফিস থেকে ফিরছি।এক যুবক সহযাত্রী মুঠোফোনে তার বন্ধুকে বলছে-আমার ফ্ল্যাটে চলে আয়,ফরেন স্কচ খাওয়াব।বহুদিন পর ওদের মোক্ষম জবাব দেওয়া গিয়েছে।
সকালে খবরের কাগজ়ে দেখছিলাম সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নিহত এক জওয়ানের বাবার বিবৃতি-“সন্তান হারানোর কষ্ট অনেকটাই লাঘব হলো। প্রতিশোধ কিছুটা হলেও নেওয়া গিয়েছে।’’ পাশাপাশি অন্যরকম বহিঃপ্রকাশের খবরও ছিল। পুত্রশোকে পাথর সন্তানহারা এক মা বলছেন –প্রত্যাঘাতে কি লাভ, আমার ছেলে তো আর ঘরে ফিরবে না। স্বামীকে হারিয়ে স্ত্রী বলছেন –যুদ্ধ কোন সমাধান নয়।
কয়েকদিন আগে আমার দাদামশায় কথা বলতে বলতেই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। দুটো বছর বেঁচে থাকলে শতায়ু হতেন।বিলুপ্তপ্রায় প্রজন্মের মানুষটির কাছে দাঙ্গা, মন্বন্তর, যুদ্ধ, দেশভাগ এসব ভাঙাচোরা অতীতের ঘটনাক্রম শুনেই বেড়ে উঠেছি।ভূস্বর্গে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নিহত জওয়ানদের জন্য নীরব অশ্রু সেদিন দেখেছিলাম দাদামশায়ের চোখে। ক্ষীণকন্ঠে আমায় বলেছিলেন -উপদ্রুত এলাকা দিয়ে দেশের প্রতি বিশ্বস্ত এবং দায়বদ্ধ সন্তানদের কনভয় যাচ্ছে নিরাপত্তাহীনতায়? জীবনে ভাঙা-গড়া কম তো দেখলাম না দাদুভাই। আমি আর ক’দিন! তবে নির্দ্বিধায় বলতে পারি এই সন্ত্রাসবাদী হানার পিছনে নির্ঘাত বড় কোন পরিকল্পনার উপাদান আছে।