T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় আলোক মণ্ডল
by
·
Published
· Updated
অনুদান
কৃষ্ণচূড়া আর অমলতাসে সুন্দর করে সাজানো টেবিলে হাত রেখে বসে আছেন হলুদ পাঞ্জাবি পরিহিত মাননীয় সরিৎ খান – বিধায়ক,পাশের বিধানসভার। সরকারী দলের।
সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে পাড়ার ছেলে-মেয়েরা “আরও দাও প্রাণ” শীর্ষক গীতি আলেখ্য নিয়ে হাজির।রবীন্দ্রজয়ন্তী। সারা গ্রামে তীব্র উন্মাদনা।
আবৃত্তি, গান নাচ শেষ হওয়ার পরই গীতি আলেখ্য পরিবেশন হোল। মুগ্ধতায় তুমুল হাততালি।
এরপর সভার প্রধান অতিথির ভাষণ, সরিৎ বাবু প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলেন। দীর্ঘ ভাষণের পর ঘোষণা করলেন যে তিনি আলেখ্যের টীমটিকে পুরস্কৃত করতে চান,সঙ্গে আনা প্যাকেট থেকে একটি করে বই এগারো জনের হাতে তুলে দিয়ে বললেন,” কবিগুরুর এই যে বইটি তোমাদের উপহার দিলাম, আহা! তার কী ভাষা,কী ছন্দ! পড়বে, মন দিয়ে পড়বে! এমন কবিতা,পড়লে প্রাণ জুড়িয়ে যায়! আমি তোমাদের মতো বয়সে কত দুলে-দুলে পড়েছি,সে সব স্মৃতি, বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে! মুগ্ধ হয়েছি তোমাদের পরিবেশনায়। তাই আগেই ঠিক করেছিলাম বেস্ট-পারফরমেন্সের জন্য কিছু উপহার দেব। এজন্য কবিগুরুর সবচেয়ে ভালোলাগা ও শ্রেষ্ঠ কবিতার বইটি দোকান গিয়ে নিজে কিনে এনেছিলাম! এর কবিতা গুলি পড়বে,বুঝলে!”
বক্তৃতা শেষ। আবার হাততালির বৃষ্টি।
প্যাকেট খুলে অনিমেষ দেখল,বইটি “শেষের কবিতা”।
ঠোঁটকাটা অনিমেষ প্রধান অতিথির ভুল শুধরে দিতে স্টেজে উঠতেই ক্লাবের সম্পাদক তাকে আটকে রেখে বলল, “বুঝতে পারছি, এখন যাও,কিছু বলতে যাবে না,অনুদান আটকে যাবে!”