সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে অনিরুদ্ধ গোস্বামী (পর্ব – ৬)

অদৃশ্য প্রজাপতি

বাইক ঘুরিয়ে স্টার্ট দিতে বিন্সি কাছে এসে চোখে চোখ রেখে বললো “গুড নাইট নীল” আর তার সাথে আমার গালে দিয়ে গেল তার ভিজে ঠোঁটের ছোয়া .
কিছু বলার আগেই ছুটে বাড়িতে ঢুকে গেল.

আথিরা
প্রোডাক্ট লঞ্চ এর দুই মাস আগে।
আথিরা আর নেই .না কোনো সূত্র , না কোনো মেসেজ ,না কোনো ফোন কল। এটাকে এইভাবে বলা যায় সে ভ্যানিশ হয়ে গেল ।মন উত্তর চাই কোনো ?এবং এটা তখন আরো বেশি করে হয় যখন একে অপরকে জানে মন থেকে .সেই জানা এমনি এমনি হয় না , বেশ কিছু ঘটনা পরম্পরা ,তার সাথে জড়িয়ে থাকা আচরণ আর ছোট ছোট ইঙ্গিত ,অনেক বার্তা বহন করে আনে।
আথিরা র কথা মনে পড়লে তার সেই ছোট ছোট আচরণ মনের ধারণা কে আরো শক্ত করে দেয় যে সেও একই টান অনুভব করে ।তবুও সে আজ নেই ।
সকাল এ উঠে কফি করে এনে ব্যালকনি তে দাঁড়ালাম ।সব ঠিকঠাক চলছে সূর্যের আলো ব্যাক ওয়াটার এরওপর প্রতিফলিত হয়ে আমার চোখে লাগছে । মনে তার চেহারা ভাসছে ।এবং লক্ষ্য করলাম মনে এক অদ্ভুত প্রশান্তি বিরাজ করছে ।তার পরেই উতলা হচ্ছে একটা ফোন ও কেন এলো না।
আমার কাছে খোঁজ করার কোনো রাস্তা নেই.না জানি তার হোস্টেলএর ঠিকানা বা তার বাড়ির ঠিকানা।আর সেখানে গেলেই বা কি বলে খোঁজ করবো? ভিন রাজ্যে কোনো মেয়ের খোঁজ করা সমীচীন নয়।
উঠে পড়লাম ,বসে থাকা যাবে না আর বেশি দিন নেই নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ এর ট্রেড অফার এর সিদ্ধান্ত একটা ঠিক করেছি কিন্তু সেটা এখনই সার্কুলার দেব না।এটা এবং আরো কয়েকটি সিদ্ধান্ত একদম শেষ মুহূর্তে ডিস্ট্রিবিউটের ও সেলস টীম কে জানাবো.ম্যানেজিং ডিরেক্টৰ এর কাছে কাল রাতে ভিডিও কনফারেন্সিং এ কথা বলে সব অনুমোদন আনিয়ে নিয়েছি.ডিরেক্টর যেভাবে এগোচ্ছি ,তাতে খুশি।
বিকেলে একবার কোচিন ইউনিভার্সিটি যাবো ভাবলাম,পরে ভেবে দেখলাম যে যখন এসেছিলো তখন তো তো জানতে চাইনি কেন এসেছিলো , গ্রহন করেছিলাম . চলে যাওয়া কেন মেনে নিতে পারছি না ….মন কে বললাম “ব্লিস ইস ইন একসেপ্টেন্স ”
বাড়ির দিকে ফিরলাম।

নীল
বাড়ি ঢুকতেই বিন্সি র ফোন এলো .
বিন্সি :হেই নীল এনিথিং হেপেনড টু ইউ ? য়াই ফীল সামথিং ইস নট ওকে । হোয়াট হাপ্পেনেড ?
নীল : নাথিং বিন্সি । থাঙ্কস ফর ইওর কল .
বিন্সি :ইউ নো বস মাই মম উসড টু সে মি “নাথিং মিন্স সামথিং ” হোয়েন আই আনসার্ড দি সেম লাইক ইউ ফর এনি অফ মাই মমস কোয়েরি ।এন্ড টু গ্রেট এক্সটেন্ট -মাই মাদার ইস কারেক্ট ।
নীল :উইল টেল ইউ ইফ ইটস এনিথিং। …….ডোন্ট ওরি ।আই এম ফাইন ।
বিন্সি : গ্রেট (মুআহ্হ ) -গুড নাইট নীল ।
আজ রাতে ঘুমোবার জন্য ট্রাংকুলাইজার দরকার ।ক্লাসিকাল সংগীতের থেকে ভালো আর কি হতে পারে।পন্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার চন্দ্রাকোষ রাগের ওপর একটি ৪০ মিনিট এর পারফরমেন্স সিলেক্ট করলাম ।রাগ চন্দ্রাকোষ কাফি ঠাট ওপর তৈরী.. …। শোনার প্রকৃত সময় রাত ৯-১২। পাঁচটি সুর এতে লাগছে সা গা মা ধা নি ।পুরানো ফরমেট এ ,গা আর নি কোমল কিন্তু নতুন ফরমেট এ গা আর ধা কোমল.নি শুদ্ধ থাকার জন্য সুরের উত্তেজনা কে চরম পর্যায় এ নিয়ে যায়.তাতে রাগ টি তে বাড়তি এক কোমলতার সৃষ্টি করে।এ যেন উত্তেজনার চরম মূহ্র্তের পরে প্রশান্তি. ধীরে ধীরে ঘুম এলো চোখে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।