সাপ্তাহিক ধারাবাহিক ঐতিহ্যে “কলকাতার চার্চ (কোম্পানীর যুগ)” (পর্ব – ১৮) – লিখেছেন অরুণিতা চন্দ্র

কলকাতার চার্চ (কোম্পানীর আমল) – পর্ব ১৮

কোম্পানীর শাসনকালে কলকাতায় নির্মিত ক্যাথলিক চার্চগুলির আলোচনা সেই চার্চের উল্লেখ ব্যতীত অসম্পূর্ণ থাকে কোম্পানির আমলে যার নির্মাণের সূচনা হয় কিন্তু পরবর্তীকালে তার এই নির্মাণকার্য সম্পূর্ণ হয়।
এই গীর্জাটি হল St. Francis Xavier’s Church. ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বউবাজার এলাকায় কোন চার্চ ছিল না। উনিশ শতকের প্রথমে মধ্য কলকাতার রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টান অধিবাসীরা একত্রিত হয়ে Catholic Community of Bowbazar গঠন করেন। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে একটি বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয় ক্যাথলিক ফ্রি স্কুলের জন্য। এই বাড়ি নীচের তলে চ্যাপেলটি এবং দ্বিতলে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতি রবিবার এবং Lord’s Feast – এর দিনগুলিতে মুর্গিহাটার পর্তুগীজ ক্যাথিড্রাল থেকে এক যাজক প্রার্থনা পরিচালনার জন্য আসতেন। ক্রমশ: এই অঞ্চলে রোমান ক্যাথলিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দে এই বাড়ির মালিক Mr. Cooper বাড়িটি এপোস্টলিক মিশনারী দান করেন। ১৮৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে চ্যাপেলটি নির্মিত St. Xavier অর্থাৎ পঞ্চদশ শতকের পর্তুগীজ মিশনারী সন্ত ফ্রান্সিস জেভিয়ারের নামে উৎসর্গীকৃত হয়। এর দায়িত্ব নেন Father Rabescall। Lorretto Nun’s Convent অর্থাৎ বৌবাজারের লোরেটো ডে স্কুলটিও একই বছর এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশপ Carrew ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দে Catholic Native Association এর আয়োজিত উপাসনা (Mass) এ অংশগ্রহণ ও করেন এখানে। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে এন্টালি কনভেন্ট বন্ধ হয়ে গেলে সেখানকার সন্ন্যাসিনী এবং ছাত্রীরাও এই চ্যাপেলে আশ্রয় নেন। এভাবে কোম্পানির আমলে নির্মিত এই চ্যাপেলের জনপ্রিয়তা এবং একে কেন্দ্র করে জনসংখ্যা এত বৃদ্ধি পায় যে উনিশ শতকের শেষে একটি পূর্ণ আকারের চার্চ গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ বর্তমান চার্চটি নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হয়।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।