সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে অভিজিৎ চৌধুরী (পর্ব – ৮)

না – মানুষের সংসদ

পাখি তেমন পুষতেন না । বলতেন মানুষের তো ডানা নেই ওদের আছে । ওদের আটকে রাখলে যদি পৃথিবীতে ডানাওয়ালা জীবেদের সংকট দেখা দেয় ।
মাছেদের জন্যও কোন অ্যাকোরিয়াম বা জলাশয় ছিল না । যুক্তি প্রায় একই – জলচর প্রাণিদের ডাঙার আবহাওয়ায় কষ্ট দিয়ে লাভ নেই ।
মন তখন আরো ছোট । খুব আদর করতেন মনকে । মনও তাই । দাদুর দু-গালে চুমু দিলে জল গড়িয়ে পড়ত ওঁর চোখ দুটো দিয়ে ।
কৈলাশ বোস লেনের সেই দাদুকে স্বপ্নে দেখেছে মন । ড. মন্মথ চৌধুরী ।
চিত্রলেখা আপন মনে খেলায় ব্যস্ত মনকে কোলে তুলে নিয়ে চুমু দিল । তারপর বলল –
স্বপ্নে সেই দাদুটা কি বলল !
বলল – পক্ষীরাজ ঘোড়ার কথা । বুধুইতো আসলে পক্ষীরাজ ।
চিত্রলেখা বলল –
এটা আবার কে বলল !
দাদু ।
ধুস্ – দাদু তো কখনও পলাশিপাড়ায় আসেননি । তিনি চেনেন লণ্ডন আর কৈলাস বোস লেন।
বাঃ – দাদুর তো পক্ষীরাজ ঘোড়া আছে । সেটা চেপে দাদু যেখানে খুশি যেতে পারে ।
চিত্রলেখা মুচকি হেসে বলল –
তারপর ।
দাদু চেনে বুধুকে । জ্যোৎস্না রাতে যেদিন খুব সুন্দর করে থালার মতন গোল হয়ে চাঁদ ওঠে – বুধুকে পরিরা ডানা পরিয়ে দেয় । সেকথা কেউ জানে না । শুধু দাদু আর আমি । এখন তুমি জানলে মা ।
দূর পাগলি । দাদু কি এখন আর বেঁচে আছেন !
সামান্য চুপ করে রইল মন । তারপর বলল –
আকাশের ‘তারা’ হয়ে গেছে ‘মা’ ।
চিত্রলেখার হঠাৎ মনে পড়ল – ছাদ থেকে শাড়ি, জামা-কাপড় কিছুই আনা হয়নি । সব তো ভিজে একসা হয়ে গেছে । ঝড়ও তো ছিল । জামা- কাপড় নিশ্চয় নোংরাও হয়ে গেছে । আবার কাচতে হবে ।

( চলবে )

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।