সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে অভিজিৎ চৌধুরী (পর্ব – ৭১)

না মানুষের সংসদ

হাওয়া দিচ্ছে । স্নান করলেন নন্দ-স্যার । খুব আরাম হচ্ছে । গোল চাঁদ উঠেছে । এর মধ্যে কোকিলের ডাক শুনতে পেলেন । পুরুষ কোকিল গাইছে । সুরেলা কণ্ঠ । নন্দ-স্যার কথা বোঝার চেষ্টা করলেন । আরে নির্বাচনের কথাই তো বলছে ওরা । ওদের সুরে মানুষের মতো কোন যান্ত্রিকতা নেই, বড্ডো মধুর । বিমোহিত হলেন নন্দ-স্যার । গানের কথাগুলিও ধীরে ধীরে বোঝার চেষ্টা করলেন ।
নন্দ-স্যারের বাড়ির উঠোনে দেখতে দেখতে জড়ো হলো ভুলু কুকুর, বুধু ঘোড়া, মা-হাঁস, রাণি মৌমাছি, শ্রমিক মৌমাছি, বিভিন্ন পাখির দল প্রভৃতি । শেয়াল ছাড়া সকলেই এলো । নন্দ স্যার ওদের নিয়ে চললেন মুক্তধারা মঞ্চে ।
তখনও নিশুতি রাত । বাবুই পাখি সামান্য সময়ের মধ্যে নির্মাণ করল ভোট বাক্স ।
দুজন প্রার্থীকে সর্ব-সম্মতিক্রমে মনোনয়ন পত্র পেশ করতে বলা হল ।
ওরা হল টিকটিকি এবং মা-হাঁস ।
বংশ পরিচয় নিল ইন্দ্র । তপশিলি জাতি কিনা শংসাপত্র চাওয়া হলে কিছুই দেওয়া গেল না । ফলে দুজনেই সাধারণ বিভাগ পুরুষ ও মহিলা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেল । টিকটিকির বয়সের শংসাপত্র দিলেন নন্দ-স্যার আর মা-হাঁসের বয়সের শংসাপত্র দিল উড়ুক্কু-মাছ ।
নন্দ-স্যার টিকটিকির বয়স লিখলেন আনুমানিক ২০ ।।
কিন্তু মা-হাঁসের বয়সের শংসাপত্র দিতে গিয়ে মুশকিলে পড়ল উড়ুক্কু মাছ । দেখা গেল মা-হাঁস অপ্রাপ্তবয়স্কা হয়ে যাচ্ছে । উড়ুক্কু মাছও তাই ।
যদিও সংবিধান এখনও খসড়ার আকারে রয়েছে তবুও তো একদিন হবেই । নন্দ-স্যার নিজে হস্তক্ষেপ না করে পেঁচাকে ডাকলেন ।
বলো হে, তুমি তো সংবিধান আত্মস্থ করেছ, ব্যতিক্রম কিছু হয় কি !
পেঁচা বলল,
আশু প্রয়োজনে এরকম করা যেতে পারে । তবে একটা কমিটি গঠন করতে হবে এবং সেই কমিটির সংখ্যা-গরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের মান্যতা দিতে হবে ।
টিকটিকিকে বলা হল পাঁচজনের কমিটির সদস্যদের নাম বলতে যেহেতু মা-হাঁসের মনোনয়ন আটকে যাচ্ছে । মা-হাঁস নিজে প্রস্তাব দিলে পক্ষপাত চলে আসতে পারে । বিরোধী মত তেমন এলো না কারণ টিকটিকি খুবই আদর্শবান, নেতা হওয়ার বাসনাও নেই ।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।