ত্রিবেণী রঙ্গরাজন থাকে টপ ফ্লোরে, লিফটের সামনে, ডানদিকের ফ্ল্যাটে।
ব্যাগ থেকে চাবি বের করে ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ফেলল ত্রিবেণী। নিঃশব্দ ঘরদোর। দু’কামরার ফ্ল্যাটের একটা ঘরে পড়াশোনার শেষে অঘোরে ঘুমিয়ে রয়েছে ত্রিবেণীর কলেজে পড়া ছেলে অদ্বৈত। আর একটা ঘর ফাঁকা। এটা ত্রিবেণী আর রামানুজের ঘর। চার বছর আগে রাতের বেলা মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় রোড অ্যাক্সিডেন্টে মৃত্যু হয় ত্রিবেণীর স্বামী রামানুজের।
আলতো হাতে দরজা খুলে ঘুমন্ত ছেলেকে একবার দেখে নিল ত্রিবেনী। তারপর জামাকাপড় ছেড়ে, হাতমুখ ধুয়ে এসে বসল ডাইনিং টেবিলে। টেবিলের মাঝখানে দুটো হট-পট, একটা ছোট, একটা বড়ো। বড়ো পাত্রটার ঢাকনা খুলে রাঁধুনির তৈরি করা মোটা মোটা রুটি দুটো বার করে ও প্লেটের ওপর রাখল। ছেলের খাওয়ার পর অবশিষ্ট ডালটুকু রয়েছে ছোট পাত্রে। বিস্বাদ ডালের মধ্যে ঠান্ডা, শক্ত রুটির টুকরোটা ডুবিয়ে মুখে তুলতে যাবে এমন সময় বেডরুম থেকে ভেসে এলো একটা অতি পরিচিত একটা সুরেলা আওয়াজ। মোবাইল বাজছে। ত্রিবেণী দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকালো। এতো রাতে আবার কে ফোন করলো ? চার বছর আগের সেই ভুলতে চাওয়া দিনটার স্মৃতি আবার একবার মুচড়ে দিল ত্রিবেণীর হৃদপিন্ডটাকে। খাবার ফেলে রেখে তাড়াতাড়ি হাত ধুয়ে নিয়ে শোওয়ার ঘরের দিকে পা বাড়ালো ত্রিবেণী।
_________________
কানের পাশে একটা টানা ঘষঘষানির আওয়াজে পাতলা ঘুমটা আরও পাতলা হয়ে এল ডাঃ, সুনীল গোড়বোলের। সাইলেন্ট মোডে রাখা মোবাইল ফোনটা বেজে চলেছে একনাগাড়ে। উনি আধবোজা চোখেই বেড-সাইড টেবিলটা হাতড়ালেন। চোখের কাছে মোবাইলটা এনে দেখলেন স্ক্রিনের ওপর ভেসে উঠেছে অতি পরিচিত একটা নাম, ত্রিবেণী আর; মানে ওঁর প্রতিবেশী ‘ডি-৩০৩’ এর ত্রিবেণী রঙ্গরাজন। ডাঃ, গোড়বোলে ভাবলেন এতো রাতে ওঁর সাথে আবার কি দরকার পড়ল ত্রিবেণীর?
বেজে বেজে থেমে গেল মোবাইল ফোনটা। ফোন হাতে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন ডাঃ, গোড়বোলে। হালকা নীল নাইট ল্যাম্পের আলো ছড়িয়ে রয়েছে ঘরের চারদিকে। লাইট জ্বেলে ঘুমানোর অভ্যাস ওঁর কোনোকালেই ছিল না, চোখের ওপর আলো পড়লে ঘুম আসতে চাইতো না কিছুতেই। মাথার পাশে মোবাইল নিয়ে শোওয়ার অভ্যাসও ছিল না ওঁর। ভাবতেন মোবাইল ফোন থেকে বের হওয়া রেডিয়েশন ব্রেনের ক্ষতি করবে তাই শুতে যাওয়ার আগে টিভির সুইচ অফ করার পরই সুইচ অফ করে দিতেন মোবাইল ফোনটাকেও; রেখে দিতেন বসার ঘরে, টিভির সামনে। কিন্তু চেনা পরিচিত দু’একজনের রাতের বেলা হার্টঅ্যাটাকে মৃত্যু হওয়ার পর দূরে থেকে দূরত্ব বজায় রাখা ছেলে ও মেয়ে বাবা-মাকে চাপ দেয় সব সময় মোবাইল চালু রাখার জন্য, রাতের বেলা হালকা আলো জ্বালিয়ে শোওয়ার জন্য। ওদের এই অযাচিত দায়িত্ববোধে ডাঃ,গোড়বোলে একটু বিরক্তই হন। ছেলে, মেয়ে দুজনেই থাকে সান-ডিয়াগোতে। এখানে যখন রাত ওদের ওখানে তখন দিন, এখানের ঘুমানোর সময় মানে ওখানের অফিস আওয়ার্স। আলো জ্বালিয়ে ফোন চালিয়ে রেখে হবেটা কি ? বাবা-মায়ের, একজনের অসুস্থতার খবর যদি অপরজন ফোন করে জানায়, তাহলেই বা কি হবে ? অফিসের হাজার ব্যস্ততায়, নানান কাজের মাঝে ওদের কি আদৌ নজর পড়বে ফোনের দিকে ? ধরতে পারবে ফোনটা ? বাবা-মা অসুস্থ জানার পর পারবে কি হসপিটালাইজেশনের ব্যাবস্থা করতে ? মৃত্যুর খবর পেয়ে আসতে পারবে সময়মতো, দাহ-সংস্কার করার জন্য ??
কিন্তু মায়ের মন অতো সমীকরণ মানে না। জয়শ্রী গোড়বোলে ছেলেমেয়ের ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে তাদের অন্যায় আবদার মানতে বাধ্য করেন ডাঃ, গোড়বোলেকে।
বিছানার একপাশে চিৎ হয়ে শুয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে জয়শ্রী; অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তারের স্ত্রী, কৃতি সন্তানদের জননী। অল্প হাঁ করা মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে নাকডাকার মতোই একটা বিরক্তিকর আওয়াজ। প্রথম প্রথম এই আওয়াজটাতে বেশ বিরক্ত হতেন ডাঃ, গোড়বোলে, কিছুতেই ঘুম আসতে চাইতো না ওঁর, জয়শ্রীকে বলতেন পাশ ফিরে শুতে। তবে মানুষ অভ্যাসের দাস, তাই ধীরে ধীরে এই অস্বস্তিকর আওয়াজটাতেও অভ্যস্ত হয়ে গেলেন উনি।
মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে শোওয়ার ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন ডাঃ, গোড়বোলে। জয়শ্রী ঘুমোক নিশ্চিন্তে। বয়সকালে শরীরের তাড়নায় স্ত্রীকে মাঝরাতে ঘুম থেকে তুলে অনেক জ্বালাতন করেছেন উনি; চাহিদা, ইচ্ছা সবই এখনও আগের মতোই আছে তবে চরম উপভোগের বয়সটা পেরিয়েছে, তাই এখন আর আগের মতো রোজ দুধের দরকার পড়ে না, মাঝে মাঝে ঘোল দিয়েই পুষিয়ে নেন দুধের স্বাদ।
বসার ঘরে এসে ত্রিবেণীকে কলব্যাক করলেন ডাঃ, গোড়বোলে। চোস্ত ইংরেজিতে ত্রিবেণী যা বলল আর উনি যা বুঝলেন তা হল, অফিস থেকে ফিরে দেবাঙ্গীর ফোন পায় ত্রিবেণী। মিসেস রিন্দানী খুবই অসুস্থ। এই লকডাউনের মধ্যে এতো রাতে কি করবে কিছু বুঝতে না পেরে দেবাঙ্গী ফোন করে ত্রিবেণীকে। সময় নষ্ট না করে তৎক্ষনাৎ ওদের ফ্ল্যাটে চলে যায় ত্রিবেণী। সব দেখেশুনে মিসেস রিন্দানীর অবস্থা ওর খুব একটা ভালো ঠেকে না। তাই বাধ্য হয়ে এই রাতদুপুরে ডাঃ, গোড়বোলেকে ফোন করে বিরক্ত করছেন।
ওখানে তিনজন মহিলা ছাড়া যে আর কেউ নেই সেটা সহজেই অনুমেয়। বয়স হয়ে গেলেও ডাঃ, গোড়বোলে পুরুষমানুষ, রাতের বেলা একা একা ওখানে যাওয়াটা ঠিক হবে না। নিরুপায় হয়ে আলতো আলতো করে ঠেলা দিয়ে জয়শ্রীর ঘুম ভাঙালেন উনি। অঘটনের আতঙ্কে ধড়মড় করে উঠে বসলেন জয়শ্রী। তারপর স্বামীর কাছে সবকিছু শুনে একটু ধাতস্থ হলেন। তাড়াতাড়ি রাতপোশাক ছেড়ে একটা ঢিলেঢালা সালোয়ার-কামিজ পরে তৈরি হয়ে নিলেন স্বামীর সাথে বেরিয়ে পড়ার জন্য।
‘এ-২০২’ ফ্ল্যাটটার কারুকাজ করা কাঠের দরজার ওপর আছে কালো নকশাদার লোহার গ্রিলের বর্ম। ডাঃ, গোড়বোলের চেনাজানা বেশিরভাগ গুজরাতির ফ্ল্যাটেই এই একই রকম ব্যাবস্থা, কাঠের তৈরি দরজার গায়ে নামী-দামী কোম্পানির দু’তিনটে অত্যাধুনিক লক আর তার বাইরে লোহার মজবুত গেট। সবাই বলে লেখাপড়া শিখলেও গুজ্জুরা সারাজীবন বেনিয়াই থেকে যায়, সারাক্ষন খালি লাভ-লোকসানের চিন্তা করে। ডাঃ, গোড়বোলের মনে হয় গৃহে সঞ্চিত অর্থ-সম্পদ চোরের হাত থেকে রক্ষা করার জন্যই হয়তো এতগুলো তালাচাবির পরেও এই লৌহকপাটের সাবধানতা।
কলিং বেল বাজিয়ে বেশিক্ষন অপেক্ষা করতে হল না। ত্রিবেণী দ্রুতপায়ে এসে দরজা খুলে দিল। তাড়াতাড়ি আসার জন্য ঘন ঘন নিঃশ্বাস পড়ছে ওর, আর তার সাথে তাল মিলিয়ে ওঠানামা করছে ওর ভরাট বুক; ভারি স্তন দুটো দামী অর্ন্তবাসে ঢাকা থাকলেও ওপরের কুর্তিটা পাতলা হওয়ার জন্য সবই বেশ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। অনিচ্ছাসত্বেও ত্রিবেণীর বুকের দিকে চোখ চলে গেল ডাঃ, গোড়বোলের। বকবক করতে করতে মিসেস রিন্দানীর বেডরুমের দিকে এগিয়ে চলেছে ত্রিবেণী। ডাঃ, গোড়বোলের চোখ আটকে রয়েছে ওর গুরু নিতম্ভে। পা ফেলার তালে তালে ত্রিবেণীর মোটা বিনুনিটা কালসাপের মতো হিলহিলিয়ে উঠছে ওর নিতম্ভের ওপর আর ছোবল মারছে ডাঃ, গোড়বোলের দু’পায়ের মাঝখানে; নীল বিষ ঢেলে অবশ করে দিতে চাইছে ডাঃ, গোড়বোলের সব চেতনাকে।