“এই শ্রাবণে আষাঢ়ে গপ্পো” বিশেষ সংখ্যায় অ্যাঞ্জেলিকা ভট্টাচার্য

রাতের অতিথি 

বইটা হাতে আসার পর থেকেই পরিমল ছটফট  করছিল । প্রতিটা গল্প শেষ করার তাড়া  থাকে পরিমলের । কিন্তু এই বইটা পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে এর শেষটা  কোথায়  ? মজার কথা , শেষ কিছুতেই হচ্ছে না । বইয়ের পাতাতে কোন সংখ্যা নেই ।পরিমল দেখে ভেবেছিল  ‘কত পাতার আর বই হবে ? ওই দুশো পাতা’  ।  পড়তে গিয়ে পাতার পর পাতা পড়ে যাচ্ছে  । কিন্তু  শেষ আর   হচ্ছে না । 
আসল কথা হল এটা কোন  বই নয় । একজনের ডায়েরি । কলেজস্ট্রিটের ফুটপাথ থেকে কিনেছিল মাত্র পঞ্চাশ  টাকায় । যদিও দাম চেয়েছিল একশ টাকা  । কিন্তু ডায়েরির অবস্থা দেখে পরিমল পঞ্চাশ  টাকার বেশি দিতে চায়নি । কয়েকটা পাতা উল্টে ইন্টারেস্ট লেগেছিল ।ডায়েরিটা এমন একজনের যে রীতিমতো ভূত নিয়ে রিসার্চ করেছে । ডায়েরিতে অনেক তথ্য , কিছু কাগজ কাটিং আঠা দিয়ে লাগানো । পরিমলের মনে হয়েছে এ যেন এক রিসার্চের ফল । আর বিষয়টা যখন পরিমলেরও প্রিয় । 
পরিমল জানতে চায় মানুষ মৃত্যুর পর কোথায় যায় ? সে প্ল্যানচেট করতে চায় । কিন্তু তেমন সাহসী বন্ধু  খুঁজে পায় না । সে নিজে যে খুব সাহসী সেটা বাড়ির সবাই জানে ।তার এই ভূত চর্চার খবরও বাড়ির সবাই জানে । প্রথম প্রথম ভেবেছিল কদিনের নেশা । কিন্তু এখন রীতিমতো পাগলামিতে পেয়েছে ।
পরিমল  ডায়েরিটা বন্ধ করে ঘড়ির দিকে তাকালো রাত দুটো পাঁচ । সে এখনো বুঝতে পারেনি ডায়েরির লেখক পুরুষ না মহিলা ।কারন ডায়েরি লেখকের নাম নেই শুধু একেকটা ঘটনার নীচে সন আর মাস লেখা , তারিখ নেই কোন । শেষে  ‘এস’ লেখা  তাহলে কি ‘এস’ দিয়ে কি লেখকের নাম শুরু হয় !  যেমন একটি ভূতুড়ে বাড়ির ঘটনার কথা লিখে নিচে লেখা ১৯০৩, মার্চ  । প্রায় একশ বছরের বেশী পুরনো এই ডায়েরি  । পাতাগুলো এতটাই মলিন হয়ে গেছে ধরলেই মনে হচ্ছে ঝুরঝুর করে পরে যাবে ।ডায়েরি  পড়ে পরিমলের মনে হয়েছে লোকটি নিশ্চই ভূত শিকারি । 
আজ দুমাস ধরে এই ডায়েরি  পড়ছে । রাত জেগে , দিন জেগে পড়ে যাচ্ছে , ঘটনার পর ঘটনা ১৯১৩ সালের সাতাশে জুলাই , থমকে গেল পরিমল ।  ক্যালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে অবাক হল আজকেও  জুলাই এর সাতাশ ।বাইরে অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছে ।
 ডায়েরিতে লেখা  সেদিনও এমন অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছিল । পরিমলের মতো লেখকও একা ছিল  । হঠাৎ বাইরের দরজায় কলিংবেল বেজে উঠেছিলো । 
কলিংবেলটা চারবার বেজে উঠল ।  পরিমল চমকে উঠেছে । ভেবেছিল মনের  ভুল । ডায়েরির  সঙ্গে একাত্ম হয়ে এসব শুনতে পাচ্ছে । কিন্তু সত্যি দরজায় কেউ এসেছে । এত রাতে কে এলো আবার ? মা , বাবা , বোন আজকে মাসির বাড়িতে থাকবে বলেছে ।
দরজা খোলার আগেই তীব্র আওয়াজ করে কোথাও বাজ পড়ল । সঙ্গে কারেন্ট অফ হয়ে গেল । টেবিল এর উপর রাখা মোমবাতিটা জ্বালিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেল পরিমল  ।দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল – কে , কে এসেছেন ?
কোন উত্তর এলো না ।কিন্তু পরিমল দরজার আইহোল দিয়ে দেখল যে , বর্ষাতি পরে একজন দাঁড়িয়ে আছেন  । সেই বর্ষাতি থেকে জল ঝরছে । অন্ধকারে  মুখ দেখা যাচ্ছে না ।
পরিমল আবার বলল – আপনি নাম না বললে আমি কিন্তু কিছুতেই দরজা খুলবো না ।
এবার একজন পুরুষ কণ্ঠে বলে উঠল – প্লিজ ওপেন দা ডোর । আপনি কি  শেষটা জানতে চান না  ?
 ভদ্রলোকের বাংলা পরিষ্কার নয় । বলা চলে একজন বিদেশি মানুষ বাংলা বললে যেমন শোনাবে ।
পরিমল অবাক হল “ কিসের শেষ জানাতে এসেছে লোকটা ?” দরজা খুলে দাঁড়াতেই দমকা হাওয়াতে মোমবাতি নিভে গেল ।ভদ্রলোক হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকে  সোজা পরিমলের ঘরে গিয়ে খাটের পাশে রাখা চেয়ারে বসে পরলেন । যেন এই ঘর , আসবাব তার সবকিছু খুব চেনা । অন্ধকারে কোথাও ধাক্কাও খেলেন না ।বর্ষাতিটিও ঠিক জায়গায় রেখে জল ঝড়তে দিলেন ।  
পরিমল এতে খুব অবাক হয়েছে ।কাছে গিয়ে বলল – আপনি বসুন, আমি মোমবাতিটা জ্বালিয়ে নিয়ে আসি। 
লোকটির গলায় বিরক্তি ফুটে উঠেছে – উফ , আবার আলো কেন ? কোন দরকার নেই । এই অন্ধকারেই আমার ভালো লাগছে । আপনি বরং বসুন , কথা বলি ।
পরিমল ইতস্তত করে বলল – আমি আপনাকে ঠিক চিনতে পারছি না । 
লোকটির হাসির শব্দ পাওয়া গেল – ভয় করছে আপনার ? 
পরিমল গলা শক্ত করে বলল – ভয় আমি কোন কিছুকেই পাইনা । আপনি চা খান । ভিজে এসেছেন ।মা ফ্লাক্সে চা রেখে গেছে । আর হটপটে সিঙ্গারা আছে । 
  • চা খেতে পারি । বহুদিন খাইনি । কিন্তু সিঙ্গারা ! ওটা কি  জিনিস ?
পরিমল অবাক এমন কেউ ভারতে আছেন নাকি যে সিঙ্গারা জানে না । নিজের মনে হেসে বলল – সমোসা বলেন বুঝি ! 
  • না না আমি কখনো ওসব খাইনি । 
পরিমল মনে মনে ভারি অবাক হয়েছে । লোকটা কি এই ঝড়জলের রাতে বিদেশ থেকে এলো নাকি ?
গরম চা আর সিঙ্গারা খেয়ে লোকটা টেবিল এর সামনে উঠে এলোডায়েরিটা পড়তে কেমন লাগছে  ? ‘স্পিরিচুয়ালিসম’ , বিশ্বাস করেন ?
‘প্রেততত্ববাদ’,  দুবার নিজের মনে শব্দটা  জপ করল পরিমল । আমি অনেক বই পড়েছি । হানা বাড়িতে গিয়ে রাত কাটিয়েছি কিন্তু কখনও দেখিনি কিছু । খুব ইন্টারেস্টিং ব্যাপার কিন্তু বিশ্বাস যে খুব করি বলতে পারবো না । আসলে কোনোদিন সেভাবে কিছু অনুভূত হয়নি । 
লোকটা কেমন তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললেন – দেখতে চান তাহলে আপনি !  
পরিমল সঙ্গে সঙ্গে বলে বসল – আপনি আমায় কিসের শেষ বলতে এসেছেন এই ঝড় জলের রাতে ? 
লোকটা জানলার সামনে এসে দাঁড়ালো – ঠিক পনের ষোল বছর বয়েস থেকে আমি বুঝতে পারি যে আমি মৃত ব্যক্তিদের দেখতে পাই তাদের কথা শুনতে পাই ।এই কথাটা ছড়িয়ে পরতেই মানুষের কৌতূহল বাড়তে লাগলো । কারোর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর শুনলেই আমার ডাক পড়ত  । তার অন্তিম ইচ্ছে কিমবা তাকে কে হত্যা করেছে এরকম  বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে লোকে আমার কাছে আসত ।
পরিমল প্রশ্ন করল – আপনি ঠিক কি করে বুঝলেন মৃত ব্যক্তিদের আপনি দেখতে পাচ্ছেন , তারা  আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইছে ?
লোকটি আবার বলতে শুরু করল । – আমাদের গাড়িটা হাইওয়েতে একটি ট্র্যাকের সম্মুখীন হয় । গাড়িটা দুমড়ে মুচড়ে একদম চ্যাপটা হয়ে যায় । গাড়ির মধ্যে ছিলাম আমি আর আমাদের  ড্রাইভার স্টিফেন । 
পরিমল উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে পরেছে – আপনারা দুজনেই মারা গেছিলেন ! 
  • না না , সে যাত্রা আমি রক্ষা পেয়েছিলাম । আমার গায়ে একটা দাগও পরেনি । তবে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম । আমি কেমন স্বপ্নের মতো দেখছিলাম যে স্টিফেন পাঁজাকোলা করে আমাকে গাড়ি থেকে বার করছে । আশ্চর্যের  ব্যপার হল আমি গাড়ি থেকে প্রায় দশ হাত দূরে রাস্তায় অচেতন ভাবে শুয়ে ছিলাম । স্টিফেনের দেহটা গাড়ির দরজা কেটে বের করতে হয়েছিল ।তাহলে বুঝতে পারছেন কিছু ? 
পরিমল মাথা দোলাল – স্টিফেন নয় , স্টিফেনের আত্মা আপনাকে সেদিন রক্ষা করেছিল আপনি কি ঠিক এর পর থেকেই মৃত ব্যক্তিদের  দেখতে পেতেন ? 
  • ঠিক বলেছেন । এরপর আমার এক অদ্ভুত পরিবর্তন হল । আমাদের ঘরের মেড সারভেন্ট বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করল । তারপরেও আমি তাকে দেখতে পেতাম ঘরে ঘুরে  বেড়াচ্ছে । একদিন রাতে এসে সে জানালো – ‘ আমি একজনকে ভালবাসতাম ।কিন্তু সে আমায় প্রত্যাখ্যান করেছে । তাই আমি এই পথ বেছে নি । কিন্তু আমি ভুল করেছি । আমার অতৃপ্ত আত্মা শান্তি চায় ।’  
  • তারপর আপনি কি করলেন ? পরিমল উত্তরের অপেক্ষা করছে । 
  • আমি আমাদের সামনের  গির্জায় ফাদারের সঙ্গে কথা বলি । তিনি প্রে করেন । তারপর থেকে আমাদের সেই মেড সারভেন্টকে আর দেখিনি । কিন্তু ঘটনাটা চারিদিকে ছড়িয়ে পরলআরও কত যে ঘটনার সাক্ষী থাকলাম ।
পরিমল এক মনে শুনছিল , এবার বলল – ইস এরকম যদি আমি দেখতে পেতাম কি ভালো যে হত ! 
লোকটার হাসির শব্দ পাওয়া গেল । – আমারও প্রথম  প্রথম এরকমই মনে হয়েছিলযত বড় হতে লাগলাম , কেমন নেশা চেপে গেল । অনেকে বাড়ি থেকে ভূত তাড়াতে  চাইত আবার অনেক সময় আত্মা দখল করে থাকত কারোর শরীর ।কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখতাম যে তাদের কোন অপূর্ণ ইচ্ছে থাকত । সেটাই চরিতার্থ করতে চাইত ।আমি কোনোদিন সংসার করিনি ।অতি লৌকিক জীবনের পিছনে ছুটে বেরিয়েছি ।
পরিমল আশ্চর্য হয়ে বলল – এই যে ডায়েরিটা । এটাও এমনি একজনের লেখা । এক ভূত শিকারি মানুষের লেখা ।আপনার সঙ্গে বেশ মিল আছে । আপনি কি এই বইটা পড়েছেন ?কিছুতেই শেষ হয় না ।কে যে লিখেছেন , সঠিক ভাবে ঠিক নামটাও লেখা নেই । শুধু ‘এস’  লেখা ।  
লোকটার গম্ভীর গলার আওয়াজ পাওয়া গেল । -লেখকের নাম সিজার  । আমি তো ডায়েরির শেষটা বলতেই এসেছি ।শেষটা সিজার আর এই ডায়েরিতে লিখে যেতে  পারেনি ।
পরিমল বিরক্ত হয়ে বলল – তাহলে আপনি  কি করে জানলেন ? তাহলে কি এরকম আরও কোন ডায়েরি  আছে ?
  • ১৯১০, সিজার ইংল্যান্ডে যায় । সেখানে একটি হানা বাড়িতে রাত কাটায় । রাতে সে দেখতে পেল একটি কঙ্কাল  এসে তার খাবার , টাকা লুট করছে ।তার বন্দুক দিয়ে সাবধান করলেও কঙ্কালটি একটি ছুড়ি ছুঁড়ে দেয় তার দিকে ।সিজার বন্দুক চালাবার সঙ্গে সঙ্গে কঙ্কালটি মাটিতে লুটিয়ে পরে এবং মারা যায় ।সিজার কাছে গিয়ে কঙ্কালের মুখোশ খুলতেই দেখতে পেল একটি কুড়ি একুশ বছরের ছেলে ।
সেই প্রথম সিজার   ভুল করে একটি মানুষ হত্যা  করল । এর পর থেকে সিজার ভূত শিকার করেনি আর ।নিজেকে গৃহ বন্দি করে ফেলে । সারা জীবনের অভিজ্ঞতা একটা ডায়েরিতে লিখতে শুরু করে ।বাইরের জগতের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রাখে না । 
১৯১৩  সাল , আগস্ট মাসের দশ  তারিখ  সিজারের বাড়ি থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হতে লাগলো । দরজা নক করলেও কেউ খুলল না । দরজা ভেঙে যখন পুলিশ ভিতরে ঢুকল । দেখল সিজারের পচাগলা মৃতদেহ  কেউ তার মাথায় গুলি করেছে ।
পরিমল আঁতকে উঠে বলল – তাকে কি কোন অশরীরী হত্যা করেছে ? 
  • সবাই তাই ভাবল । কিন্তু তাকে হত্যা করেছিল ইংল্যান্ডের সেই কঙ্কাল সাজা ছেলেটির দিদি । ভাইয়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে এসেছিল সে সাতাশে জুলাই  রাতের বেলায় প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে সিজার শুনতে পায় কলিং বেলের শব্দ । বেশ কয়েকবার বেজে যায় । সিজার দরজায় গিয়ে দেখে কেউ নেই ।
গাছ বেয়ে খিড়কির দরজা দিয়ে সিজারের ঘরে উঠে এসেছে একটি মেয়ে সিজার লক্ষ্য করেনি ।  তখন এক মনে লিখে চলেছে তার প্রানের ডায়েরি। 
মেয়েটি এসে সিজারের সামনে দাঁড়িয়ে  বলে – আমি সেই হতভাগ্য দিদি ।আমার ভাইয়ের হত্যাকারীর একমাত্র শাস্তি মৃত্যু । 
সিজারের বুঝতে অসুবিধা হয় না ।কারন সে জীবনে ভুল বশত একটি হত্যাই  করেছিল ।তবে অনুরোধ  করে যেন কিছুদিন সময় দেওয়া হয় তাকে । তার ডায়েরির  লেখা শেষ করতে এখনও অনেকটা বাকি ।এই ডায়েরিটা তার খুবই প্রিয় । 
মেয়েটি কোন কথা শোনে না । সিজারের মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায় । আর তার প্রিয় সেই  ডায়েরিটা নিজে নিয়ে যায় । পরে হয়ত অভাবে তাকে সেটা বিক্রি করতে হয়েছে । আর সেই ডায়েরি হাত ঘুরতে ঘুরতে চলে এসেছে আপনার কাছে । 
পরিমলের মনে নানা  প্রশ্ন   উঠেছে –  আপনি এত কথা কি করে জানলেন ?এই ডায়েরি প্রায় একশ বছরের বেশি পুরনো ।
লোকটা  জানলার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়েছিল । এখন পরিমলের দিকে মুখ ফেরাল । বাইরে ভয়ঙ্কর বিদ্যুৎ চমকে উঠল । সেই আলোয় পরিমল দেখল রক্তমাংস হীন একটি খুলি , তার চক্ষু কোটরে নিকষ কালো অন্ধকার । খুলির চোয়াল কেঁপে উঠছে । কি ভীষণ অট্টহাসি !  – আমি সিজার । অনেক দূর থেকে আমার প্রিয় জিনিস নিতে এসেছি । টেবিলে রাখা ডায়েরিটা শুন্যে ভাসছে । তারপর পরিমলের আর কিছু মনে নেই ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।