ক্যাফে কাব্যে ঐন্দ্রিলা বন্দোপাধ্যায়

সংসারতত্ত্ব


কখনো কখনো শোকতাপ মুছে ফেললে আরও ফুটে বেরিয়ে আসতে চায়। যেন সে ফুরোতেই চায় না!
গভীর হয় ক্ষত।
আর ক্ষত গভীর হলেই নাড়ীনক্ষত্র তোলপাড় করে দেয় বেহিসাবি দীনতা।
কোনোকিছুর তোয়াক্কা না করেই সে বুঝে নিতে চায় নিজের পাওনাগন্ডা।
তখন দুচোখের পাতা এক করে দিয়ে নিমেষে নেমে আসে উড়নচণ্ডী স্বপ্ন।
ঈশ্বরের দূত পাশে এসে বসলেই ঈষৎ চঞ্চলতায় পাশ ফিরে দেখি কখন ভোর হয়ে গেছে!

সাত সতেরো চাওয়ারও কত রঙ!
পথ এত দীর্ঘ যে শেষ হতেই চায় না..
অনির্বাণ প্রশ্রয় আর নিষ্পাপ শিশুর মতো নিভৃত স্পর্শে আমি ত্রয়োদশবর্ষীয়া হয়ে যাই বার বার!

জ্বরে পোড়ে নবমীর বিকেল।
ধূসর মায়াবী আলোয় ঘোলাটে চোখে চেয়ে দেখি বিসর্জনের বাজনা বাজছে, অথচ আমার খোঁজ করেনি কেউ !
উৎসব শেষে সাত পাগলের ঘরে আজ কত বেমানান আমি!

তারাদের ভিড়ে হারিয়ে যায় মৃত মানুষজন। মেলার জমায়েতে বাবাকে খুঁজেছি কতদিন!

কুমোরের মূর্তি গড়া যেমন কখনো শেষ হয় না তেমনই বেলা বেড়ে যায়। রান্নাঘরের এককোণে জন্মদিনে সযত্নে পায়েস রাঁধেন, মা।

সূর্য ডুবে গেলে নক্ষত্ররা ফুটে ওঠে আকাশের গায়ে। তেমন করেই বেকসুর জলবৎ তরলং হয় নিত্যদিন।
তোমার শরীরে শীতের হাওয়া বয় আজকাল।
আমারও স্নান নেই কতদিন!
তবুও নক্ষত্রের আলোয় আপ্লুত হয়ে ওঠে অজানা কত রাত।

মাঝরাতে ঝিঁঝি ডাকে একটানা।
অন্ধকারের সাথে কথা বলার মুহূর্তে পরম সুখ এসে জমা হলে ক্ষণিকের খেলাঘর বাঁধা শেষে জলই জীবন।

মৃত শরীর জেগে উঠলেই ভয় হয়! লোভাতুর নেশায় এই বুঝি সবকিছু নিভে যায়!

পুণ্যলাভের আশায় সূর্যস্নানেই পুণ্য অর্জন সেরে আগামীর দিকে মন দিই।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।