গল্পে অর্পিতা বোস

রোদ্দুর

বিজনবাবু আরামকেদারায় বসে মিঠির ছবিটা দেখছেন। এখানে বসেই মাতৃহারা ছোট্ট মিঠিকে পড়াতেন। সেই মিঠিই বড়ো হয়ে অনাথ ছেলেকে বিয়ে করতে চাইল। বিজনবাবু মানতে পারেননি।
বাচ্চারা একে একে এসে বসে মাদুরে। এই বাড়িটাকে এখন অনাথাশ্রম বানিয়েছেন। পড়ানোর দায়িত্বটাও নিজের কাঁধেই নিয়েছেন এবং আশ্রমের নামকরণ করেছেন মিঠে রোদ্দুর ।
প্রতিবাদটা মিঠি যে ঐভাবে করতে পারে তা কল্পনাও করতে পারেননি বিজনবাবু। মা মারা যাওয়ার পরে মিঠির জীবনে তিনিই তো মা এবং বাবা ছিলেন একাই। মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে পড়ত মিঠি। বাধ‍্য হয়ে বিজনবাবুকেও উঠে পড়তে হতো। এমন করেই কত বিনিদ্র রাত কেটেছে বিজনবাবুর জীবনে।
সেই মিঠিই যখন কেটে কেটে স্পষ্টভাবে বিজনবাবুকে বলেছিল,
শোনো বাবা ভালোবাসার কাছে নাম গোত্র কিছুই দরকার হয় না। আমরা দুজন দুজনকে ভালোবেসেছি। এটাই বড়ো পরিচয়। তুমি যদি মেনে নিতে না পারো তবে জীবনে বিরাট ভুল করবে। ”

সেই থেকে নিথর বিজনবাবু আজ আর নাম গোত্র খোঁজেননা।
শুধু এই ছোটছোট হাসিমুখগুলোর মাঝেই মিঠে রোদ্দুর খুঁজে পান।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!