ভারতবাসীরা অনেক গর্ব করে নিজস্ব সংস্কৃতি নিয়ে। কিন্তু আপনি দেখুন, প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে মেগা সিটি অব্দি, যেখানেই মানুষের বাস বসতি আছে, সেখানেই মানুষ ইংরেজ সাহেবদের নকল করে, শহর ও শহরাঞ্চলে মধ্যবিত্তররা বা কষ্টে সৃষ্টে চলে যাওয়া নিম্নবিত্তের লোকেরাও আমেরিকার লোকেদের জীবন যাপন নকল করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে মর্ণিং ওয়াক গুড মর্ণিং থেকে শুরু করে, অফিসে বা ব্যবসার গদী, ভিন্ন মানুষের সাথে যোগাযোগ/ কথা বলা আধো আধো ইংরাজী উচ্চারণ মেশানো কথা থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়া অব্দি মার্কিনী সাহেবদের নকল।
আমাদের পরিবার ব্যবস্থা ছিল যৌথ, তা ভেঙ্গে এখন ৩/৪ জনের। স্বামী স্ত্রী একটা বা দুটি সন্তান। বাবা মা শ্বশুর শ্বাশুড়ি আলাদা বা বৃদ্ধাবাসে। যৌথ সংসারের এই ভেংগে যাবার পিছনে অনেকেই বলেন মহিলাদের হাত। নববিবাহিত বৌয়েরা অনেক চালাক ও অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক ও স্বার্থপর।তরুণ স্বামীদের উপর তাদের আধিপত্যতা বিস্তার করে রাখেন, এদিক ওদিক হলেই স্বামীদের নানা বিপদ আছে। সমাজের কটু কথা থেকে জেল জরিমানাও কপালে থাকতে পারে।
মহিলা যাকে বিয়ে করেছেন তিনি আর সন্তান থাকলে সন্তান বাদে সংসার অন্য কারুর সেবা কেন দেবেন?
এ নিয়ে প্রতিটি ভারতীয় পরিবারে অশান্তি আছেই। আর আছে সরকারের/ প্রশাসনের নিরাপত্তা, ডমেস্টিক ভায়োলেন্স Domestic vilolence এর মামলা, মহিলার কথা না শুনলে সোজা তিনি বাপের বাড়ি চলে যাবেন।সেখানে মায়ের পরামর্শে জামাই বাবাজিকে টাইট দেবার আয়োজন ঘটে।
একটা ছেলে বিয়ে করে স্রেফ কাজ কর্ম থেকে ক্লান্ত হয়ে ফিরে এসে রাতে একজন মহিলার সাথে শুবে ও যৌন সংগম করবে, এই লোভে। এছাড়া অধিকাংশ ছেলেরই সময় কাটে ছেলেদের সাথে না ভাবনা চিন্তা নিয়ে, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে। ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের মামলা শিরে নেমে আসলে ভাবুন একটা ছেলের জীবন কিরকম নষ্ট হয়।
ভারতীয় মেয়েরা এমন ছিলনা। সতী সাবিত্রীর দেশে পতির সেবা করে আর সন্তান বড় করে সারাজীবন কাটাত। আজকে সতী সাবিত্রীর জীবন কেউ নিতে চায়না, শ্বশুর শাশুড়িকে কেন যত্ন আত্তি করবে? এই আত্মকেন্দ্রিক ভাবনার জন্মদাতা নারীবাদ। নারীবাদ হল নারীকে অধিক মুক্ত করা ও স্বাধীনচেতা তৈরি করা।
আরেকটা কারণ হল, জীবন আগের মতন ব্যক্তিত্বপূর্ণ বা মানুষ তার নিজস্ব ভাবনায় আত্মবিশ্বাস রেখে চলা – সেটি আজ নেই। আজকের মানুষকে চালাচ্ছে গ্রাহক-সুখবাদ, ইংরেজীতে যাকে বলে consumerism। এই নীতিটির সাথে প্রশাসন ও শিল্প পতিরা একটা মূদ্রার এপিঠ ওপিঠ ভাবে যুক্ত। কিরকম? শিল্পপতিরা আপনাকে সুলভের চাকচিক্য দৈনিন্দিনের ব্যবহার্য খাবার বস্তু থেকে, বিলাসিতার জিনিস, আরাম করার বৈদ্যুতিন ওয়াশিং মেসিন থেকে এয়ার কন্ডিশন, যান বাহন, আপনি কালো চামড়া হলে আপনাকে সাদা চামড়ার বানিয়ে দেবার টোপ ইত্যাদি প্রলোভন দিয়ে আপনার পকেটের টাকা শূন্য করে দিচ্ছে। প্রশাসন বলছে আমরা আপনার নিরাপত্তার দায়িত্বে আছি, কেউ বাজে জিনিস দেবেনা, বেশি দাম নেবেনা, ঠকাতে পারবেনা।
আপনি আজ মোবাইল ব্যবহার করেন, মোবাইলটা আপনার দরকারি কি? যখন মোবাইল ছিলনা তখনও মানুষ কাজ কর্ম করেছিল, মোবাইল আসার পর আপনার কি উন্নতি বেশি কিছু হয়েছে? হয়নি। আপনি একটু সৌখীন হয়েছেন আর মাস গেলে মোবাইলের পিছনে খরচ, বছর পাঁচ বাদে আবার আরেকটা মোবাইল কিনতে হবে কেননা নানা সফট ওয়্যার অনেক আপ ডেট হয়েছে আরো বেশি মজা আছে। ঠিক এরকম আজকের সংসারে আপনি নিজের বুদ্ধিতে চলছেননা, আপনাকে গড্ডালিকা প্রবাহ চালিত করে নিয়ে যাচ্ছে।
আপনি কেন চালিত হচ্ছেন? কারণ আপনি আপনার পরিবেশের লোকজনকে ইমপ্রেস বা আলাদা ধারণা আপনার সম্পর্কে দিতে পারবেন, আপনি ভাবছেন । সেই ধারণা থেকে আপনি লোকের থেকে কোন স্বার্থ পেতে পারেন। যেমন ধরুন আপনার বন্ধু বা বান্ধবী একটা জোটাতে ইচ্ছে। আপনার বন্ধু/ বান্ধবী রয়েছে , কিন্তু আপনি আরো চান আরো মজা চাই আপনার।
এগুলির পিছনেও নারীবাদ আছে। দেখবেন কারণে অকারণে, টিভিতে শুধু মহিলার মুখ। বিজ্ঞাপনে মহিলা তার শরীর আপনাকেই দেবার জন্য বসে আছে এমন ব্যাপার আপনার মনে হবে। আপনি যত নামী বিখ্যাত মহিলা আছে তাদের যোনি ও স্তন, নাভি উরু, পিঠ ইত্যাদি আপনার কম্পিউটার থাকলেই দেখতে পাবেন। নারীরা বলছে আমার স্বল্পভূষণ আমার ইচ্ছা। কি পরব তা আমার খুশি। আসলে একধরণের বেশ্যা বৃত্তি করে এসব মহিলারা- সিনেমার, টিভি সিরিয়ালের, মিউজিক ভিডিওর নায়িকা বা পার্শ্বচরিত্রের নারীরা রোজগার করে। আর্টের নামে বাহানা তৈরি করে মধুচক্র বসিয়ে রোজগার করে। আপনি দীপিকা পাড়ুকোনের খোলা স্তন বা বহু বড় বড় তারকার যোনি প্রকাশ্যে দেখতে পাবেন। এবং তাদের নকল হিসাবে আপনার পাড়ার মেয়েটাও মিনিস্কার্ট স্তন উন্মুক্ত করার ছোট জামা পরা দেখতে পাবেন। এবং এর সাথে ভারসাম্য রেখে আপনার স্ত্রী ইতিমধ্যে তার বিয়ের পর নিরীহ চরিত্র আর নেই।তিনিও আধুনিকা হয়ে ছেঁড়া জিনস আর স্তন দেখানো জামায় অভ্যস্ত হয়েছেন। শ্বশুরশাশুড়ি নেই ফলে আপনার স্ত্রীই বাড়ির কর্তা, এবং আপনাকে কড়া হাতে বেঁধে রেখেছেন। আপনার স্ত্রীর অনেক পুরুষ বন্ধু হয়েছে, সারাক্ষণই ফোন আসছে, আর আপনি দূর থেকে শুনতে পাচ্ছেন আপনার স্ত্রীর হি হি করা অতিমাত্রার হাসি। আপনার অসহ্য হলেও কিছু করার নেই। আপনার পক্ষে কেউ কথা বলবেনা।
এই নারীবাদের জন্ম প্রায় ১০০ বছরের উপর।নারীর ভোটাধিকারের ১৯২০ সালের পর নারীরা হঠাৎ সাপের পাঁচ পা দেখেছে। যা কিছু করেই তারা শাস্তি মুক্ত। মূলতঃ নারীদের ঘরের বার করেছে যুদ্ধ ও বিপ্লব। ইউরোপ আমেরিকার প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ ১৯১৪ থেকে ১৯১৮। পুরুষেরা যুদ্ধে চলে গেলে তাদের কর্মস্থানে নারীদের কাজ চালাবার জন্য আহবান করা হয়েছিল। নারীরা সব পারেনা কিন্তু যতটুকু পারে ততটুকুই লাভ।
বিশ্বযুদ্ধের রাস্ট্রগুলি হল গ্রেট ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ডের যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স রাশিয়ান সাম্রাজ্য, ইতালি, জাপান, পর্তুগাল এবং পূর্বোক্ত বালকান রাজ্য যেমন সার্বিয়া এবং মন্টিনিগ্রো; এবং কেন্দ্রীয় শক্তি, প্রাথমিকভাবে জার্মান সাম্রাজ্য, অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য, অটোমান সাম্রাজ্য এবং বুলগেরিয়া নিয়ে গঠিত।
এটি ছয়(৬)কোটি ইউরোপীয়সহ সাত (৭) কোটিরও বেশি সামরিক কর্মীদের নিয়ে লড়াই, যা ইতিহাসের বৃহত্তম যুদ্ধের দৃষ্টান্ত। এটি ছিল ইতিহাসের অন্যতম মারাত্মক সংঘাত, আনুমানিক ৮কোটি ৫০ লক্ষ যোদ্ধার মৃত্যু এবং ১কোটি ৩০ লক্ষ বেসামরিক মৃত্যু ফলস্বরূপ ঘটেছিল, যুদ্ধের সাথে গণহত্যা চলছিল।এবংএবং যুদ্ধ শেষ হতেই ১৯১৮ সালে Spanish flu pandemic স্প্যানিশ ফ্লু মহামারীর কারণে আরও বিশ্বব্যাপী ১০ কোটি লোকের মৃত্যু ঘটে, ইউরোপে আনুমানিক ৩০ লক্ষের মত স্প্যানিশ ফ্লু্র মৃত্যু এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৭লক্ষের এর মতো মৃত্যু।ঘটেছিল।
ফলে মেয়েদের পুরুষের কর্মস্থলে কিছু সাহায্য যোগান আবশ্যিক ছিল।
অন্যদিকে রাশিয়ায় আবার কম্যুনিস্ট বিপ্লব শুরু হয় ১৯১৭ সালের অক্টোবর মাসে বলশেভিকদের নিয়ে। সেখানে কম্যতুনিস্টরা মহিলাদের ডেকে ঘরের বার করল। এবং তাদের স্বাধীনতা দিল। শুরু হল নারীর স্বেচ্ছাচারিতা। উলংগ হওয়ার ইতিহাস। তবু ১৯৬০ সাল নাগাদ মহিলাবাদের আস্ফালন পরিস্কার সারাবিশ্বে প্রতিফলিত হতে লাগল। আজ নারীবাদ এক অভিশাপ সমাজে। গত ১০০ বছরে নারীর উলংগ হওয়া বাদে তুলনামূলক আর কোন উন্নতি নারীরা ঘটাতে পারেনি। নারীদের সাহায্য করতে প্রতিটি রাস্ট্র তাদের নারীর দৃষ্টিকোন থেকে আইন শৃঙ্খলা বানিয়ে নিল, জাতিসঙ্ঘ মহিলাদের কমিশন আলাদা করে তৈরি করে দিল।
এর ফলে পুরুষের ঘামের মূল্যে পুরুষকে সাজা পেতে হচ্ছে।