সাপ্তাহিক শিল্পকলায় “একটা পোস্টারের তিন নম্বরের গল্প”- লিখেছেন আলবার্ট অশোক (পর্ব – ১০)

আমি একবার একটা বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম,’বাবু, ছাগল বড়, না, গরু বড়?’ বাচ্চাটা উত্তর দিল, ছাগল বড়। আমি ভাবলাম বাচ্চাটা বুঝি না ভেবেই বলেছে। তাই ওকে আবার বুঝিয়ে বললাম, গরুর শরীর এত বড়, আর ছাগলের এত টুকুন। তুমি ছাগল গরু দেখেছে? বাচ্চাটা উত্তর দিল , হ্যা, দেখেছি। মা ছাগলের দুধ রাখে, গরুর দুধ রাখেনা। ছাগলের দুধে অসুখ সারে।
আমি হোঁচট খেলাম। আবার জিজ্ঞেস করলাম, তোমার বাবা বড় না তোমার মা বড়? না, দুজনে সমান সমান। আমি আসলে লম্বায় কে বড় জিজ্ঞেস করছিলাম।
বাচ্চাটা আগের মতনই উত্তর দিল, মা বড়।
আমি উত্তর দিলাম, কি করে? তোমার বাবা ৬ফুট লম্বা, তোমার মা সাড়ে চার ফুট। তোমার মা ছোট। বাচ্চাটা আমাকে বলল, তার মা তাকে খেতে দেয়, স্কুলে নিয়ে যায়, অসুখ করলে মাথায় জল দেয়, সে সেরে যায়। তার বাবা তো বাড়িতেই থাকেনা। শুধু রাতে ফিরে এসে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। আর মাকে বকা ঝকা করে।
বাচ্চারা ভুল বলে? অথচ আপনি একটা সত্য জানেন আর বাচ্চারা অন্য সত্য।
আপনি যদি সভ্যতা ও সংঘাতের ইতিহাস পড়েন , দেখবেন, সংঘাত সভ্যতার শুরু থেকেই ছিল। পুরুষ পুরুষে সংঘাত, নারীর সাথে পুরুষের সংঘাত। হাজার রকমের গোষ্ঠি। গোষ্ঠি গোষ্ঠিতে সংঘাত। সমস্ত সংঘাতের শেষ বা মীমাংসা আছে, ছিল, থাকবে, কিন্তু নারী পুরুষের সংঘাত অমীমাংসিত থেকেই যাবে। কারণ নারীদের দাবী ঐ বাচ্চাটার মত। নারী এক সত্য জানে আর আপনি বা প্রাজ্ঞরা আরেক সত্য জানে।
চতুর্দশ পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে, মূলত কিছু বিদুষী মহিলা নারী শিক্ষার আওয়াজ তুলেছিলেন। এবং ফ্রান্সের এক দার্শনিক নারীবাদী, নাম ক্রিস্টিন দ্য পিসান ( Christine de Pisan) ইতিহাসগত ভাবে তাকেই প্রথম নারীবাদী হিসাবে গণ্য করে পন্ডিতগণ।
ভাববাদী সমাজতন্ত্রের প্রবক্তা ফ্রান্সেস ম্যারি চার্লস ফুরিয়ার (François Marie Charles Fourier) যিনি একজন একজন ফরাসি দার্শনিক, প্রভাবশালী আদি সমাজতান্ত্রিক চিন্তাবিদ এবং ইউটোপীয় সমাজতন্ত্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি প্রথম ‘ফেমিনিজম'(“feminism” ১৮৩৭ সালে শন্দটা ব্যবহার করেন।১৮৭২ সালে ফ্রান্স ও নেদার ল্যান্ডে,ব্রিটেনে ১৮৯০ সালে ও আমেরিকায় ১৯১০ সালে প্রথম পাবলিক ভাবে ব্যবহৃত হয়।
ফেমিনিজম বা নারীবাদ হল একটা ধারণা/ বিশ্বাস যে, রাজনৈতিক, আর্থিক ও সাংস্কৃতিকভাবে নারীরা স্বাধীন ও পুরুষের সমান।বস্তুগত নয়। ভোটাধিকারের জন্য প্রাচীন গ্রীসের সময় থেকে আজ অবধি, মহিলাদের লড়াই চলছে পুরুষের বিরুদ্ধে। এর হাজার রকমের গোষ্ঠি, শ্রেণী এবং প্রবক্তা। লিখে শেষ করা যাবেনা। এই গোষ্ঠি / শ্রেণি বা প্রবক্তা অন্য গোষ্ঠির সাথে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে। সবই নারীর অধিকার নামে পরিচিত। সহমত সবাই নন। কিন্তু তারা নারীবাদী।
এবং সুবিধাবাদী। শ্রম না করে ফল অর্জন করার পক্ষপাতী। তবে এটা ঘটনা, নারীদের প্রায় দেড়শ বছরের ক্রমাগত প্রচার, এবং পুরুষের মাধ্যমে প্রচার, পুরুষকে মগজে নারীসমর্থক ও নারীবাদী বানিয়ে ফেলেছে। নারী বলেছে, নারীকে বিশ্বাস কর, পুরুষ নির্বিচারে বিশ্বাস করেছে। ফলে বিচার ব্যবস্থাকে নারী বিশ্বাসী বানিয়ে নারী তন্ত্র বা মাতৃতান্ত্রিক সমাজ গড়ে উঠেছে। সমাজে নারীর বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারবেনা। নারী কমিশন থেকে নারী সংরক্ষণ পৃথিবীর সব রাস্ট্রে। তাহলে তূলাদন্ডে সমান বিচার হয়না।
Meninism ও meninist বলে শব্দ আছে, যার মানে হল, আমরা পুরুষ এবং নারীবাদী। বুঝুন।মগজ ধোলাইয়ের স্তর কোথায় পৌছেছে।
মাতৃতান্ত্রিকতা এত বলিষ্ঠ হয়ে উঠছে হাওয়াতে ভর করে, তারা পুরুষের ভাবনাকেও হাইজ্যাক করে নিয়েছে। যেমন ধরুন “We Can Do It!” পোস্টারটা.
এই পোস্টারটা বিশ্ববিখ্যাত পোস্টার। নারীবাদীরা বেশি ব্যবহার করে।মানে ‘আমরা করতে পারি’। বিষয়টা এই, পুরুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে। মহিলারাও কম নন। সমান সমান যুজতে জানেন।
রোজি দ্য রিভেটার । রোজ উইল মনরো (Rose Will Monroe) যিনি ১৯২০ সালে কেনটাকি এর পুলাস্কি জেলায় (Pulaski County, Kentucky) জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিশিগানে (Michigan) চলে এসেছিলেন। তিনি মিশিগানের ইপসিল্যান্টিতে, উইলো রান এয়ার এয়ারক্র্যাফ্ট ফ্যাক্টরিতে (Willow Run Aircraft Factory , Ypsilanti) রিভেটার বা নাটবল্টু লাগাবার শ্রমিক হিসাবে কাজ করেছিলেন, সেই কোম্পানীতে মার্কিন সেনা বিমান বাহিনীর জন্য বি -২৪ বোমারু বিমান সেখানে তৈরি হচ্ছিল। রোজির কর্মক্ষমতা সাধারণ মেয়েদের চেয়ে বেশী ছিল। ফলে, তিনি একটা প্রচার পান। তাকে বলা হত ‘রোজি দ্য রিভেটার’। এই পোস্টারটির সাথে তিনি প্রচারের দৌলতে জড়িয়ে যান। এই জন্য এই পোস্টারিটিকে রোজি দ্য রিভেটার বলে।
আসল গল্প টা সবার জানা দরকার।
এই পোস্টারটা সৃষ্টি করেন এক পুরুষ শিল্পী, জে হাওয়ার্ড মিলার ( J. Howard Miller) জন্ম১৯১৫- মৃত্যু ১৯৯০; যিনি তখনকার দিনে বিজ্ঞাপনের জগতে কাজ করতেন। পোস্টারটি বানান ১৯৪২ সালে। একটা সিরিজ পোস্টার তার মধ্যে এই পোস্টারটি প্রচার পায় বেশি। কারণ পোস্টারটি ঘরের মেয়েদের ঘরের বাইরে এসে কাজ করার মনোবল যুগিয়েছিল। পুরুষদের মনোবলের জন্য প্রচার তেমন প্রয়োজন পড়েনা।Westinghouse Electric নামক কোম্পানী সরকারী কাজের বরাত পায়। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল।আমেরিকান ছেলেরা সব যুদ্ধে চলে গেলে, শ্রমিকের অভাব দেখা দিল যারা যুদ্ধের সরঞ্জাম বানাবে। তখন ভাবা হল, মেয়েদের যুদ্ধে পাঠানো যায়না, কিন্তু তাদের দিয়ে কিছু কাজ ফ্যাক্টরিতে, ছেলেদের বিকল্প হিসাবে লাগানো যায়।
Westinghouse Electric তখন হাওয়ার্ড মিলারকে দিয়ে পুরুষ ও মহিলাদের শ্রমিকের কাজে লাগাবার জন্য একটা সিরিজ পোস্টার বানাতে বলে প্রচার ও মেয়েদের উৎসাহী বানাতে। সেই মত অনেক পোস্টারের মধ্যে এই পোস্টারটিও হাওয়ার্ড মিলার বানান। তিনি পুরুষদের জন্যও অনেক পোস্টার বানান।যেমন এগুলি।
পার্ল হারবারে জাপানিদের বোমা ফেলার পরে মার্কিন সরকার অস্ত্রনির্মাতাদের আরও বেশি পরিমাণে যুদ্ধের পণ্য তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছিল। বড় বড় কারখানাগুলিতে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ ভাল ছিলনা। ১৯৩০ এর দশক জুড়ে ম্যানেজমেন্ট বা পরিচালনা বনাম শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল। জেনারেল মোটরস (General Motors) এর মতো সংস্থাগুলির পরিচালকরা অতীতের সংঘর্ষ শ কমিয়ে এবং দলবদ্ধভাবে উত্সাহ দিয়ে কাজ তোলার চেষ্টা করেছিলেন। ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের একটি গুজব জনসংযোগ প্রচারের জবাবে, জেনারেল মোটরস দ্রুত ১৯৪২ সালে একটি প্রচারমূলক পোস্টার তৈরি করেছিলেন যেখানে শ্রম ও পরিচালন উভয়ই তাদের জামার আস্তিন গুটিয়ে, যুদ্ধের সরঞ্জাম অবিচ্ছিন্ন হার বজায় রাখার দিকে জোট বাঁধার।। পোস্টারে লেখা ছিল, “একসাথে আম্রা এটা করতে পারি!” এবং “এম ফায়ারিং রাখুন!” এই জাতীয় পোস্টার তৈরি করার সময় কর্পোরেশনরা যুদ্ধের পক্ষে সরকারকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাধা দেওয়ার চূড়ান্ত লক্ষ্য নিয়ে, জনপ্রিয় যুদ্ধপন্থী অনুভূতি ব্যবহার কর্‌ উত্পাদন বাড়াতে চেয়েছিল।

এসব তো যুদ্ধের সময়কার ঘটনা। একটা ছবি কত প্রভাবশালী হতে পারে, তা না পড়াশুনা করলে বোঝা মুশকিল। ১৯১৩ সালের পর লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ‘মোনালিসা’ পেইন্টিংটি প্রচারের দৌলতে সবাই জেনে গেছিল, যে লিওনার্ডো বলে এক শিল্পী ছিলেন আর তার একটা ছবির নাম মোনালিসা। মোনালিসা ছবিটি, সিরিয়াস নেচারে কপি পেইন্টিং থেকে আরম্ভ করে তাকে কমিক্স কার্টুনে পরিণত করার শিল্পী হিসাব করলে অর্ধ কোটি বা ৫০ লাখ ছবি আঁকা হয়েছে। অথচ ১৯১৩র আগে অব্ধি লিওনার্ডোকে ৪০০ বছর ধরে কেউ তেমন জানতনা। লুভরে মোনালিসা উপেক্ষিত হয়েঝুলছিল কেউ তাকে দেখে আনন্দ পেতনা।যার সুযোগে চোর চুরি করতে পেরেছিল।
ঠিক তেমন হাওয়ার্ড মিলারের বিজ্ঞাপনের সিরিজের ছবিগুলি, আমেরিকার জনগণদের খুব উদ্বুদ্ধ করেছিল কাজের জন্য। শক্তিমানেরা যুদ্ধে চলে গেলে দুবলাদের কাজ করার জন্য চাঙ্গা করে তুলেছিল। এবং আমেরিকার জনমানসে এর প্রভাব বিস্তার হয়েছিল।মানুষ যে যা পারছিল তার উৎপাদন বাড়াচ্ছিল।
তো আমেরিকা একদিকে শক্তিমানদের যুদ্ধে পাঠিয়ে অন্য দিকে শক্তিহীনদের মানসিক শক্তি যুগিয়ে কলকারখানা চাষবাস ইত্যাদি করিয়ে দেশের স্থিতি বজায় রেখেছে। আর প্রচার এবং শিল্পকলাকে বিচক্ষণভাবে ব্যবহার করেছে। আপনি পোস্টারগুলি দেখলেই বুঝবেন কত শক্তিশালী প্রচার।যুদ্ধ থেকে গেলে, ব্যবসায়ীরা পোস্টারগুলি আবার ব্যবহার শুরু করল, সমস্ত রকম কাজ কর্মে।
স্ব-ক্ষমতায়নএর প্রচার, বিজ্ঞাপন এবং প্যারোডি সহ চিত্রটিকে অনেকগুলি রূপে সাধারণ মানুষ পুনর্নির্মাণ করে ব্যবহার করেছে। শিল্পীর নাম হারিয়ে গেছে। ছবিটা মানুষ মনে রেখেছে। উই ক্যান ডু বলে হিট গান আমেরিকানদের মনে গেঁথে গেছে।
মানুষ এতটাই অন্ধ হয়ে গেছে এই ক্যান ডু র জন্য তারা এক ভুল মহিলাকে পোস্টারের মত দেখে ধরে নিল রোজি এই মহিলাটিই। সেই মহিলাটির নাম জেরালডিন হফ ডয়েল (Geraldine Hoff Doyle) যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুগে সম্ভাব্য “আমরা করতে পারি!” বাস্তব জীবনের মডেল হিসাবে ভাবতে শুরু করেন। আসলে ১৯৯৪ সালে Smithsonian ম্যাগাজিনের cover “We Can Do It!” র পোস্টার দেখে এ জেরাল্ডিন তার মুখের সাথে পোস্টারের মিল খুঁজে পান। তিনি মিডিয়াকে জানান। মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে এবং ভুলভাবে ডয়েল কে প্রচার করেছিল। মিডিয়া বলল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চরিত্র রোজি দ্য রিভেটারের মূর্ত প্রতীক । হাওয়ার্ড মিলার তাকে দেখেই পোস্টারটি বানান।ব্যস! অমনি অনেক সংগঠন ডয়েলকে সংবর্ধনা দিয়ে প্রচার করতে লাগল তিনিই সেই শক্তিমান মহিলা যুদ্ধের বোমারু বিমান বানিয়েছেন। শুধু তাই নয় স্টেটের সর্বোচ্চ পদক ভুল বশতঃ তাকে দেওয়া হয় “the Michigan Women’s Historical Center and Hall of Fame”। পুরস্কার ও সুনাম নিতে কার না ভাল লাগে? জেরাল্ডিন ডয়েল চুপ চাপ সকল সম্মান গ্রহণ করেন। এবং ভাবতে শুরু করেন তিনিই সেই রোজি।
২০১৫ সালে, যুদ্ধের সময়ের অনেক মহিলা শ্রমিকের ফটো পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে নাওমি পার্কার ফ্রেলে (Naomi Parker Fraley) (২৬আগস্ট, ১৯২১ – জানুয়ারী ২০, ২০১৮) একজন আমেরিকান যুদ্ধ কর্মী ছিলেন যাকে এখন “উই ক্যান ডু ইট!” আইকনিকের জন্য সবচেয়ে সম্ভাব্য মডেল হিসাবে বিবেচনা করা হয়! পোস্টার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, তিনি নেভাল এয়ার স্টেশন আলমেডায় এয়ারক্রাফট অ্যাসেম্বলীতে কাজ করেছিলেন। তিনি একটি লেদ মেশিন টুল অপারেটিংয়ের সময় কোন খবর মিডিয়া সে ছবি তোলেন। এছাড়া সারা জীবন ক্যালিফোর্নিয়াতে একজন পরিচারিকা হিসাবে (waitress in Palm Springs and married three times. When she died, aged 96 )কাজ করছিলেন। এবং এই বহুল ব্যবহৃত ছবিটি পোস্টারের অনুপ্রেরণা বলে মনে করা হয়। জেরালডিন হফ ডয়েল প্রথমে বিষয় হিসাবে কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন কিন্তু সেটন হল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের গবেষণা ( research by a professor at Seton Hall University ) সরাসরি সত্য প্রতিস্থাপন করেছিল। এখন হাওয়ার্ড মিলার নিজের মন থেকে এঁকেছেন না কোন মডেল ছিল তা জানা যায়নি।
এছাড়া কয়েক লক্ষ মহিলা, “We Can Do It!” র মত ফটো তুলে নিজেকে পেশীবতী দেখান। একটা ফ্যাশান হয়ে গেছিল। আজও অনেক মেয়ে পুরুষের সমান ভেবে এরকম পোজ নেয়।
১৯৮০ সাল থেকে পোস্টারটি রাজনৈতিক ও নারীবাদীদের খপ্পরে পড়ে, ও প্রচার পায়। সবাই পোস্টারটি ব্যবহার করে, কিন্তু শিল্পীর নাম ব্যবহার করেনা।.১৯৯৪ সালে পোস্টারটি একটি বিখ্যাত ম্যাগাজিন the Smithsonian magazin তার প্রচ্ছদে ব্যবহার করে ও প্রচার পায়। ১৯৯৯ সালে আমেরিকার ডাকটিকিটের (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম শ্রেণির মেল স্ট্যাম্পে রূপান্তরিত) মর্যাদা পায় পোস্টারটি। এছাড়া, রাজনৈতিক প্রচার ২০০৮ সালে আমেরিকায় ও ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হওয়াতে এই পোস্টারটি আরো প্রচার পায়। দেখা গেল মহিলারা নিজের পুরুষের সমান প্রচার করার জন্য এই পোস্টারটি ব্যবহার করে। ভাবুন একটা পোস্টার, তার কত প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা।
নরম্যান পার্সভেল রকওয়েল (Norman Percevel Rockwell) (৩রা ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৪- ৮নভেম্বর , ১৯৭৮) একজন আমেরিকান চিত্রশিল্পী এবং ইলাস্ট্রেটর ছিলেন। তার অনেক বিখ্যাত কাজ আছে। আমেরিকান সংস্কৃতি তার ছবিতে প্রতিফলিত হবার জন্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে তার বিস্তৃত জনপ্রিয় আবেদন রয়েছে। রকওয়েল প্রায় পাঁচ দশক ধরে আমেরিকার প্রাত্যহিক জীবনের সাংস্কৃতিক দিক তুলে শনিবার সন্ধ্যা পোস্ট ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ করার জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত হন। ‘রোজি দ্য রিভেটার ‘হাওয়ার্ড মিলারের পোস্টারটি তিনি নিজের মতন করে আঁকেন। এবং সেখানে মহিলাকে কারখানার যন্ত্র নিয়ে কাজ করতে দেখান।
অস্বীকার করার কিছুই নেই, মহিলারা ঠিক মত ট্রেনিং পেলে অনেক ক্ষেত্রে, সব ক্ষেত্রে নয়, পুরুষের বিকল্প কাজ করতে পারেন। কারণ তারা একটা পুরুষের উচ্চতার ৪ ভাগের ৩ ভাগ পর্যন্ত লম্বা হতেই পারেন।বাকী একভাগ হলে তো পুরুষের সমান উচ্চতায় পৌছে যেতেন।
ফিরে যাই আবার সেই বাচ্চাটার কাছে। যার কাছে ছাগলের দুধের জন্য গরুর চেয়ে ছাগল বড় ভাবনা আছে বা বাবার চেয়ে মা বড় গল্পটা লুকানো আছে। পুরুষ বাদের প্রয়োজন হয়না পুরুষকে শক্তিশালী দেখাবার কিন্তু নারীবাদের দরকার মিথ্যা প্রচারের। অন্ততঃ আমার কাছে এটাই মনে হয়।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।