সম্পাদকীয়

শ্রাবণ শেষ হল। সাদা মেঘের ভেলা ইতি উতি ঘুরছে আকাশে । পুজোর আমেজ। মেলা,কেনাকাটা ইত্যাদি প্রভৃতি শুরু। তা সে যাই হোক, ‘শ্রাবণের দরবার’ আজ শেষ করব এক বর্ষীয়ান সহকর্মীর কাছে শোনা একটি ঘটনা দিয়ে ।
ভবানীপুরের দিকটায় ঝাঁ চকচকে মল, কমপ্লেক্স ইত্যাদি আছে গা ঘেষাঘেষি করে । শরৎ বোস রোড থেকে যে রাস্তাটা বাঁ দিকে ঢুকে গেছে পদ্মপুকুর ঘেঁষে সেই জায়গায় এই ঘটনা ঘটেছিল ।
আমাদের সেই সহকর্মী বাড়ী ফিরছেন হাঁটতে হাঁটতে, ঝুম বৃষ্টি নেমেছে । এক পরিত্যক্ত বাড়ীর নীচে আশ্রয় নিয়েছেন । বাড়ীটিতে ঝুল, ধূলো ভর্তি। মশা, ছুঁচোর কীর্তন ইত্যাদি চলে সারাক্ষণ। ভদ্রমহিলা দাঁড়িয়ে আছেন এমন সময় এক বৃদ্ধা লাঠি ঠুকতে ঠুকতে এলেন ওই ভাঙা বাড়ীর ভিতর থেকে । বললেন ‘এখান থেকে যাও। এখানে দাঁড়ানো যাবে না’। অমাদের সহকর্মীটি অবাঙালি হলেও তিনি বাঙলা ভাষা দিব্যি বলতে এবং বুঝতে পারেন । তিনি বেশ একটু রেগে গিয়েই বেড়িয়ে এলেন ওখান থেকে । আর তারপরই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল সেই বাড়ীর দরজার উপরের কার্ণিশ । যার নিচে ভদ্রমহিলা দাঁড়িয়েছিলেন । এরপর ভবানীপুরের রিকসাওয়ালারা ভদ্রমহিলাকে জল টল খাইয়ে বাড়ী দিয়ে এসেছিলেন । এই ঘটনার পর থেকে আমরা কেউ আর ওই বাড়ীর কোন দরজা বা জানলার কার্ণিশের নীচে দাঁড়াই না । আড়চোখে সেই ‘বিপজ্জনক বাড়ী’ র দিকে দেখি আর ছুটে বাসে উঠে পড়ি । নাঃ, কোনদিন কোন বৃদ্ধাকে ঢুকতে বা বেরোতে দেখি নি ।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
ইন্দ্রাণী ঘোষ।