হৈচৈ ছোটদের অণুগল্পে ড: অঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায়

চেতনা

সকাল থেকে ভীষণ ব্যস্ত অমলা। বাবাই কোলে আসার প্রায় ছয় বছর পরে আজ ঠাকুরের আশীর্বাদ নিতে যাবে কাশীপুরে। বাবাই ও খুব খুশি, অনেকদিন পর বাবা মা, দাদুর সাথে বাইরে যাবে ।

ঘর থেকে বেরোতে গিয়েই বাধা। ঘেয়ো একপেয়ে কুকুরটা খোঁড়াতে খোঁড়াতে বাচ্চা নিয়ে ঠিক হাজির দরজার সামনে।
মুখে আঁচল দিয়ে সরে যায় অমলা, যা গব্ধ…..

“হ্যাট,,হ্যাট ,যা,,”,বলতেই মাথা নিচু করে কুকুরটা দূরে সরে যায় ।
আহা রে,,,”ওর ক্ষিদে পেয়েছে মা।” বাবাই বলে।
“একদম আস্কারা দিবি না। মাথায় উঠবে।”

খুব খারাপ লাগে বাবাইএর , আসলে ওরা ওর বন্ধু। প্রতিদিন স্কুল বাস থেকে নামতেই দাদুর সাথে ওরা আসে, পায়ে পায়ে ঘোরে, ঘর পর্যন্ত যায়, তারপর বাইরে বসে থাকে, একদিন ওদের না দেখলে মন খারাপ লাগে, দাদু সব বোঝে, কিন্তু মা বোঝে না কেন??

আকাশ হর্ন দিতেই সবাই গিয়ে গাড়িতে বসে।

“তোমাদের চৈতন্য হউক”- ঠাকুরের ছবির সামনে মাথা নুয়ে আসে । বাবাই কিছু বোঝে না। অবাক হয়ে তাকায়।
প্রণাম করে। দাদুর কাছে জানতে হবে, এর মানে কি।

প্রশান্তি ও হাতে ভোগ নিয়ে সবাই বাড়ি ফেরে ।
“আমাকে দাও না প্রসাদ”,বলে মায়ের হাত
থেকে প্রসাদ নিয়ে ছুটে চলে যায় ।

মাটিতে ফেলিস না বাবাই, আমি আসছি।

কিন্তু কোথায় বাবাই?

একটা গাছের নিচে বাবাই তখন বন্ধু দের
প্রসাদ খাওয়াচ্ছে।
ভালো করে খাও তোমরা,বাচ্চা কুকুরটার মাথায় হাত বোলায় বাবাই। সামনে প্রসাদের বাটি।
দাদু মুচকি হাসেন,,,”জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর “।

“কাশীপুরে গিয়ে তোমাদের চৈতন্য হল কি না জানি না, তবে আমাদের বাবাই আশীর্বাদ পেয়ে গেছে।”
দাদু বাবাই-এর মাথায় হাত রাখেন,
বাবাই মুখে অনাবিল হাসি।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *