গদ্যকবিতায় শর্মিষ্ঠা মিত্র সেনগুপ্ত

আল্পনা

অরণ্যের ভেতর হেঁটে গেলে মনে হয় কতদিন এই সহজিয়া সুর বুকে টেনে নিইনি। সবুজের গাঢ়তার কথা আগেই লিখে ফেলেছি। লিখেছি প্রত্যেকটি মহীরুহের গায়ে নকশার মত ফুটে ওঠা কাটাকুটি। কিন্তু অরণ্যের ঘনত্বকে ভালোবেসে জড়িয়ে ধরার যে আন্তরিক আয়োজন, সেসব করার কথা কখনও মনে হয়নি আমাদের কারোরই। অথচ গভীরতার অদ্ভুত আকর্ষণ ছিল। যতটা আকর্ষণ থাকলে হরেক কিসিমের শুকনো পাতা দিয়ে আগুন জ্বালানো যায়। ঝুমঝুম বৃষ্টিতে যখন সেই পাতারা ঢাল বেয়ে গড়িয়ে হেঁটে লাগলো, তখন আমরা প্রতিপক্ষের মত মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি পাছে দৃষ্টির সামনে অবনত হতে হয়। শিশির ফোঁটার মত ঝরে পড়ছিল আমাদের দ্বন্দ্ব, ঈর্ষা, রিরংসা। অগভীর এইসব অনুভূতির দোলাচল আমাদের ইপ্সিত আলয়ে পৌঁছে দিতে পারেনি। অরণ্যের দুই প্রান্তে আমরা তখনও হয়তো আশা করছিলাম অন্যজন প্রান্তসীমা ছেড়ে আসুক। আর আলো আঁধার মেখে জলবাঁশির সুর তুলে চন্দ্রকলার আল্পনা আঁকবো।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *