হৈচৈ ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সুদীপ ঘোষাল

কিশোরবেলার ‘স্মৃতি- আয়নার’ প্রতিবিম্ব

এক

তখন ১৯৯০ সাল। বীরভূমজেলার জুঁইতা গ্রামে আমার খুড়তুতো দাদু ডাঃ হরেন রায় বাস করতেন বক্রেশ্বর নদীর ধারের এই গ্রামে।হরেনদাদু যেহেতু ডাক্তার তাই সকলে তাকে ডাঃ হরেনবাবু বলে মান্য করতেন।আমরাও মাঝে মাঝে হরেনবাবু বলতাম।দাদু বলতেন, হয় দাদু বলবি না হয় বলবি হরেন।আমি রাগ করব না।কিন্তু আমরা হরেনবাবু বা হরেনদাদু বলে মজা পেতাম।তার বড়ভাই মন্মথ রায় আমার নিজের দাদু ছিলেন। দুজনেই খুব রাশভারি, রাগী, সমাজসেবক ছিলেন।ডাক্তারদাদু গরীবমানুষের কাছে কখনও ওষুধের দাম নিতেন না।
ডাঃ হরেনবাবু,আমাদের সকলের দাদু, হোমিওপ্যাথির ডাক্তার।তাঁর খুড়তুতো, বড়ভাই মন্মথ রায় ও তার তিন মেয়ে, একছেলে নিয়ে সংসার। তার ডাক্তারখানা মানে ডিসপেনসারিতে ঝোলানো থাকত একটি মানুষের কঙ্কাল। দেখে ভয় লাগত।দাঁতবের করা গন্ধযুক্ত এক মানুষের কঙ্কাল দেখে, কার না ভয় লাগে? সর্দিকাশি, পেটখারাপ বা অন্যকোনরোগ হলেই আমাদের ত্রাতা ছিলো হরেনবাবুর চেম্বার।হরেনদাদু একডোজ ওষুধ খাইয়ে দিতেন প্রথমে তারপর কাগজকেটে কাঁচেরশিশিতে আঠা দিয়ে সাটিয়ে দিয়ে রোজকার ওষুধের পরিমাণ,নির্দিষ্ট করে দিতেন।হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেতে আমার মত সব কিশোর কিশোরীর মন্দ লাগে না।বেশ মিষ্টি, মিষ্টি। ছোট ছোট সাবুদানার মত দেখতে।আমি,রতন,হারু,বিনয় আরও অনেকবন্ধু একসঙ্গে থাকতাম। একই স্কুলে পড়ি।একই মাঠে খেলি।ডাক্তারদাদু খুব কড়া মেজাজের লোক হলেও আমাদের ক্রিকেট দলকে খুব ভালোবাসতেন।প্রয়োজনে তিনি ব্যাট,বল কিনে দিতেন।উৎসাহ দিয়ে বলতেন,যারা খেলা করে তাদের কোন রোগ সহজে কাবু করতে পারে না। খেলবি,দূরদূরান্তে গাঁয়ের নাম ছড়িয়ে দিবি ম্যাচ জিতে শিল্ড এনে।একদিন আমরা সকলবন্ধু একসঙ্গে খেলা দেখার জন্য , ট্রেন ধরে চলে গেলাম কুমোরপুর হাটতলা হল্ট। মনে করলাম, তাড়াতাড়ি চলে আসব, দুপুরের আগে। পরীক্ষা হয়ে গেছে। বাড়িতে শাসনের দড়িটা একটু ঢিলে হয়েছে। মা বলেছেন, খাওয়ার সময় যেন ডাকাডাকি করতে হয় না। আর সবসময় স্বাধীন এই কটা দিন। বন্ধুরা ডাকল ক্রিকেট খেলা দেখার জন্য। আমাদের ফুল টিম খেলা দেখতে চলে এলাম কুমোরপুর হল্টে বিনা টিকিটে। ভাবলাম খাওয়ার সময়ের আগে বেলা দুটোর সময় হাজির হয়ে যাব মায়ের কাছে। কিন্তু সব উল্টোপাল্টা হয়ে গেল।
মাস্টারমশাই পড়াতে এলে অনিমার ভারি আনন্দ হয়।মাষ্টারমশাই পড়ানোর ফাঁকে গল্প শোনান চাঁদের পাহাড়,রামের সুমতি ও আরও অনেক গল্প।অনিমা পড়াশুনায় খুব ভাল, বিনয়ি ভদ্র ছাত্রী। সকলে তার খুব প্রশংসা করে।কিন্তু পড়াশুনার থেকে ক্রিকেট খেলায় তার ভক্তি বেশি।অনিমা তার স্যারকে বলে,স্যার মহিলা ক্রিকেট দলে আমি খেলতে চাই।স্যার বলেন,তারজন্য পড়াশুনার অবসরে তোমাকে মাঠে প্র্যাকটিশ করতে হবে খেলা।নিয়মিত শরীরচর্চায় শরীরকে খেলার উপযুক্ত করে তুলতে হবে।গ্রামের দিকে প্রথমে অনিমাকে খেলার মাঠে দেখলে ঠাট্টা করত অনেকেই।কোনখেলায় খেলতে গেলে মেয়ে বলে তাকে খেলায় নিত না কেউ।স্যার মহাদেবাবুও খেলাধুলা ভালোবাসেন। তিনিও স্কুলে খেলার শিক্ষক হিসেবেই পরিচিত। স্যার অনিমাকে বললেন,আমি মেয়েদের নিয়ে একটা ক্রিকেট দল তৈরি করব।তার ক্যাপটেন হবে তুমি।
অনিমা মাঠে প্র্যাকটিশ করে তিনঘন্টা। শরীরচর্চাও করে বাড়িতে। স্যার যা বলেন সব মন দিয়ে শোনে। স্যার বলেন মহিলা ক্রিকেটের ইতিহাস। তিনি বলেন,১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো মহিলাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শুরু হয়। ২৮-৩১ ডিসেম্বর, ১৯৩৪ তারিখে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্ট খেলায় ইংল্যান্ড দল জয় তুলে নেয়।পরের বছর নিউজিল্যান্ড প্রথম টেস্ট খেলে। ১৯৬০ সালে পর্যন্ত কেবলমাত্র ঐ তিন দেশই মহিলাদের ক্রিকেটে একমাত্র টেস্টভূক্ত দল ছিল। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বেশ কয়েকটি খেলায় অংশ নেয়।
অনিমা বলে,হ্যাঁ স্যার,১৯৬২ সালে ইংল্যান্ডের প্রথম-শ্রেণীর দলগুলো সীমিত ওভারের খেলায় প্রথমবারের মতো অংশ নেয়।এর নয় বছর পর পুরুষদের ক্রিকেটে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে প্রথমবারের মতো একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
স্যার বললেন,বিফলতগুলো সফলতার এক একটা স্তম্ভ।পরেরবারে জিতে দেখিয়ে দিবি তোরা,শপথ কর মনে মনে।
তারপর দুবছর পরে কাটোয়া স্টেডিয়ামে মহিলা ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু হল ওয়ার্ড ভিত্তিক। পরপর ম্যাচ জিতে অনিমার দল,( মহাদেব ক্রিকেট দল) ফাইনালে উঠল।আগামীকাল ফাইনাল খেলা।
অনিমা স্যারকে বলল,কি হবে স্যার কাল, জানি না।
স্যার বললেন,অনেকদিনের আশা যেন জলে না যায়।লড়াই করতে তো দোষ নেই।

একটা টিম খেলতে আসে নি। এত আয়োজন ব্যর্থ হয়ে যাবে ভেবে আমরা কমিটির কাছে একশ টাকা দিয়ে আবেদন করলাম। কমিটি রাজি হল। আমরা মাঠে নামলাম ফুল টিম নিয়ে।পরপর অনেক টিমকে হারিয়ে আমরা ফাইনালে উঠলাম। ফাইনাল খেলা শুরু হবে বিকেল তিনটের সময়। এখন দুটো বাজে। মায়ের মুখটা মনে পরছে। ভাতের থালা সাজিয়ে বসে আছেন নিজে না খেয়ে। যেতে পারলাম না বাড়ি। খিদে লেগেছে খুব । পাশের বাড়ির কাকিমা মাঠের ধারেই বাড়ি। কাকু, কাকিমা দুজনে এসে বললেন, তোমাদের খেলা দেখে ভাল লেগেছে আমাদের। আমরা তোমাদের সাপোর্টারস। এই নাও এক থালা পিঠে তোমরা খাও। আমরা ভালোবেসে বানিয়েছি। আহা খিদে পেটে অই পিঠে একদম অমৃত। পেট ভরে খেলাম। আমার ভাই বাবু বলল, দাদা আজ বাবা চামড়া তুলবে পিটিয়ে। আমি বললাম, কি আর করা যাবে। অন্যায় করলে তো কেউ ছাড়বে না।
তারপর ফাইনালে জিতে শিল্ড নিয়ে আমরা ট্রেনে চেপে বাড়ি ফিরলাম। আমাদের বিজয় নাচ দেখতে হাজির হল গ্রামের লোকজন। ডাক্তার হরেনবাবুকেও ভিড়ে দেখলাম,হাত নাড়ছেন হাসিমুখে । বাবা,লাঠি হাতে চিৎকার করছিলেন।খেলায় জেতা,বড় শিল্ড দেখে চুপ করে গেলেন। মাকে ডেকে দিয়ে নিজে চলে গেলেন ছাদে।তারপর বাড়ি ঢুকলাম সন্ধ্যাবেলায়। মা তখনও উপোসি। একসঙ্গে খেলাম পিঠে আর খেজুর গুড়। মা পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন, তোদের বাবা খুব খুশি। আমাকে ডেকে দিয়ে বললেন, যাও দেখ গিয়ে গ্রামের ছেলেরা খেলে শিল্ড এনেছে। গর্বের খবর গো।তারপর থেকে বাবা আমাদের আর কোনদিন গায়ে হাত দেন নি।

দুই
টমেটোর গাছে অধিক ফলনের জন্য বেশি পরিমাণে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে। হাইব্রিড টমেটো চাষাবাদের কারণে অধিক পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন হয়। চলতি মৌসুমে কৃষকেরা খেতে সিতারা ও সিক্সআর জাতের বিষাক্ত কীটনাশক চার-পাঁচ দিন পরপর প্রয়োগ করছেন। কীটনাশক প্রয়োগ করলে খেতের আশপাশের নদী, ছড়া, নালা এমনকি জলাভূমিতে তা ছড়িয়ে পড়ে উদ্ভিদ, সাপ, ব্যাঙ, মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী মারা যায়।
বাজারের চকচক করা টমেটো বা সব্জি কিনে না খাওয়াই উত্তম। এমনকি এগুলো কেউ বিনা মূল্যে দিলেও নেওয়া ঠিক হবে না। এ ছাড়া এ সময় তাঁরা কীটনাশকের দুর্গন্ধও পেয়েছেন। এগুলো মুছতে না মুছতে আবারও কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত কৃষকদের সহনীয় পর্যায়ে সার ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে জৈব সার, ফেরোমোন বড়ি এবং হাত দিয়ে পোকা দমনসহ যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
হাটুমোড়ল খুব মন দিয়ে কথাগুলো শুনে বলল,মাটি হচ্ছে মা। মা কে বিষ খাইয়ে মেরে দিলে পাপ হবে।ছেলেমেয়েরা আর শুদ্ধ মাটি পাবে না। বিষাক্ত, কালো হয়ে যাবে মাটি।শিক্ষিত না হয়েও হাটু মোড়লের কৃষিজ্ঞান দেখে সকলে অবাক হয়ে যান।কয়েকবছরের মধ্যেই রাস্তারধারে লাগানো গাছগুলো বেশ বড় আর সবুজ হয়ে উঠেছে। হাটে যাওয়ার পথে হাটু দেখল,গাছগুলোতে গজাল ঠুকে লেখা হচ্ছে, বেলুন পঞ্চায়েতে ঢুকুন, সবুজ উপভোগ করুন। গজালগুলো হাটুর বুকেও আঘাত হানল।হাটু বলল,ছোটগাছে গজাল ঠুকো না, ওদের ব্যাথা লাগবে। লোকটা হেসে উত্তর দিল,তোমার না লাগলেই হল, হাটু মোড়ল। নিজের কাজে যাও।হাটু আর কথা না বাড়িয়ে হাট থেকে ফিরে ফাঁকা রাস্তা দেখে আবার গাছ লাগাতে শুরু করে।

তিন
হরেনদাদু, আমাদের সঙ্গে সময় কাটাতেন সময় পেলে।তার কঙ্কালে হাত দিয়ে তিনি আমাদের শেখাতেন মানুষের শারীরবৃত্তীয় গঠন।হরেনবাবুর ডিসপেনসারি যখন ফাঁকা থাকত তখন আমরা বসতাম তার কাছে।তিনি বোঝাতেন, হাড় এবং কার্টিলেজ আমাদের কঙ্কাল গঠন করে। এটি কারও কাছে গোপনীয় বিষয় নয়। তবে একজন ব্যক্তির কতগুলি হাড় রয়েছে এবং তার বৈশিষ্ট্যগুলি কী তা নিয়ে প্রশ্নগুলি প্রায়শই অনেককে বোকা বানায়। আজ আমি তাদের উত্তর দেব।
আমি বললাম,একজন মানুষের কয়টি হাড় থাকে?হরেনদাদু বলতেন,এটি হ’ল মানব কঙ্কাল অধ্যয়নরত প্রথম প্রশ্নগুলির মধ্যে একটি। এবং এর সঠিক উত্তর কেউ জানে না। বিভিন্ন সময়ে, তারা একটি পৃথক চিত্র বলেছিল – কখনও কখনও 300, তারপর 360 360 এখন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একটি মতামত রয়েছে যে একজন প্রাপ্তবয়স্কের শরীরে 206 হাড় রয়েছে। অবিকল একটি প্রাপ্তবয়স্ক, কারণ শিশুদের মধ্যে প্রায় 300 টি কার্তিলেজ থাকে, যার ossication 20-25 বছর শেষ হয়। সুতরাং, একজন ব্যক্তির কয়টি হাড় রয়েছে তার প্রশ্নের উত্তর তার কত বছর বেঁচে রয়েছে তার উপর নির্ভর করে।
রমেন জিজ্ঞস করল, মানুষের হাড়ের গঠন কী? তিনি বললেন হাড়গুলি দীর্ঘ,, সংক্ষিপ্ত এবং প্রশস্ত। লম্বা হাড়ের ভিতরে একটি গহ্বর থাকে যা হলুদ অস্থি মজ্জাতে ভরা থাকে। তাদের নলাকার কাঠামোর কারণে এ জাতীয় হাড়গুলি হালকা এবং শক্তিশালী হয়। উপরের দিক থেকে, হাড়টি পেরিওস্টিয়ামের একটি পাতলা সংযোগকারী টিস্যু শিট দ্বারা আচ্ছাদিত হয়, যার পিছনে নলাকার হাড়ের আসল প্রাচীর। এটি একটি ঘন ফ্যাব্রিক সমন্বিত একটি কমপ্যাক্ট পদার্থ গঠিত। পরবর্তীটির প্রধান কাঠামোয় ইউনিট অস্টিওন; এটির কাঠামোর মধ্যে হাড়ের প্লেটগুলি 5-20 টুকরা পরিমাণে অন্তর্ভুক্ত। অস্টিয়নের মাঝখানে একটি চ্যানেল রয়েছে যার মাধ্যমে রক্তনালীগুলি পাস করে।এইভাবে,সহজেই শিখে যেতাম মানুষের হাড়ের গঠন।
আমাদের মাটির দোতলা বাড়ি ছিলো।সন্ধ্যাবেলা হলেই হ্যারিকেন নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উঠে যেতাম দোতলার ঘরে।আমরা ভাই বোন একসাথে পড়ছি, এমন সময়ে কালোদার গলা শুনতে পেলাম। পড়ার থেকে গল্প হত আমাদের বেশি। বড়দা সবাইকে চুপ করতে বললো,কিসের চিৎকার হচ্ছে। শুনলাম নিচে হৈ হট্টগোলে সবাই ছোটাছুটি করছে।কালোদা আমাদের বাড়ির লোকাল গার্জেন। তিনি নিচে থেকে বলছেন,ওপরে যারা আছো,কেউ নিচে নামবে না। বড়দা জিজ্ঞাসা করলো,কেন কালো দা? কালোদা জোরে চেঁচিয়ে বললেন,গোলার তলায় গুলবাঘ ঢুকেছে। সাবধান। ওরা মানুষের রক্ত খায়। বড়দা বললো,গুলবাঘ আবার কি? কালোদা বললো,বাঘের মত দেখতে। কিন্তু বাঘ নয়। সাইজে একটু ছোটো।ঠিক হায়েনার মত। ওরা খুব হিংস্র।বাড়িতে সবাই আতঙ্কিত। সকলে ঘরে ঢুকে খিল দিয়ে বসে আছে। উঠোন একদম ফাঁকা। আমার বড়দার ভালো নাম দিলীপ। কিন্তু বড় শ্রদ্ধায় ডাকনাম আমরা দিয়েছি,বাহাদুর বিশু।বাহাদুর বিশু পরোপকারী,বুদ্ধিমান,দরদী এবং সাহসী যুবক।বিশুর কাহিনী আমার স্মৃতিকথা,সাদা পাতায় জীবনরেখা গল্পে বিস্তারিত বর্ণনায় পাবেন।যাইহোক বিশু বললো,আর পারা যাচ্ছে না। গুলবাঘ গোলার তলায় ঢুকে আছে। বের হচ্ছে না। দেখি খুঁচিয়ে বের করি।এই বলে একটা গিঁট তোলা লাঠি নিয়ে নিচে নেমে এলো বিশু। একহাতে তিন ব্যাটারীর টর্চ আর এক হাতে লাঠি।সকলে চিৎকার করে উঠলো,যাস না হতভাগা। কিন্তু বিশু মনস্থির করে ফেলেছে।তার বুদ্ধিতে সে বুঝতে পারছে এটা ভয়ংকর কিছু নয়। কিন্তু বিশু লাঠি দিয়ে খোঁচা মারার সঙ্গে সঙ্গে গুলবাঘ বিশুর কাছে চলে এলো।সে দেখলো,একটা ভোঁতা মাথা। টর্চ রেখে বিশু মারলো চার লাঠি। কিন্তু একটাও গুলবাঘের শরীরে পড়লো না। জন্তুটা লাফিয়ে উঠছে তিন ফুট।তারপর বিশু মাথা ঠান্ডা করে অপেক্ষা করলো কিছুক্ষণ।সে দেখলো,জন্তুটা বসে আছে আর মাথাটা নাড়াচ্ছে। তিন ব্যাটরীর টর্চের আলোয় দেখলো বিশু, ওটা মাথা নয়। একটা ঘটি। জলেরঘটি। অই ঘটিতে চারটে ট্যাংরা মাছ বিশু ছিপে ধরে রেখে ভুলে গেছে বাড়িতে বলতে। বিশু ঘটিটা হাত দিয়ে ধরে টান মারতেই খুলে গেলো। একটা বিড়াল মাছ খেতে গিয়ে ঘটিতে মাথা আটকে যাওয়ায় এই বিপত্তি। বিশু লাঠি রেখে বিড়ালটাকে ধরে আদর করলো। সবাই বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। কালোদা বললো,শালা বিড়ালের লোভ আর যাবে না। মারো শালাকে। বিড়ালটা আদরে আব্দারে ডেকে উঠলো,ম্যাঁও

ক্রমশ

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *