কবিতায় স্বর্ণযুগে পিনাকী বসু (গুচ্ছ)
সূর্যগ্রহণ
চাঁদ, আগুনের সবকটা অক্ষর গিলে নিলে
সূর্যের গ্রহণ হয়
মাকড়সার জাল যদি আধবোনা থাকে
থাকুক – ক্ষতি কি
অমসৃণ দাগে তো তখনও
বিজ্ঞাপনের হাসি থাকে
পাথরকুচি পাতায় বয়োসন্ধির সুখ
বৃষ্টির গায়ে ঘামের গন্ধ- থাকে
এসব ও তো একধরনের জমাটবাঁধা আদর
শেষঘন্টা বাজলে কেউই বোধহয়
অভিমান পুষে রাখে না।।
সততা
আমাদের চোদ্দপুরুষও গরীব ছিলেন
গেরস্তালিতে তাদের, নুন আনতে পান্তা ফুরাতো
গণিতেও তাঁরা ছিলেন জন্মগত কাঁচা
পুঁজি বলতে ছিল একটা একরোখা অসুখ
” সততা ”
শরীরের প্রয়োজনীয় জলের মতন
তাঁরা তা আগলে রাখতেন
বলতেন,” নিন্দুকের ঘরেই সততা বাড়ন্ত হয়”
বলতেন, ” সস্তা-লোক” সততা কিনতে পারে না”
এখন দিনকাল বদলেছে
আমরা কিন্তু সততা বেচেই
দিন আনি – দিন খাই
ডায়নোসরের বাবাকেও খিস্তি দিই
পিঁপড়ে দেখলেই ভাতের হাঁড়িতে ঢাকা দিই
এই যে দিনবদল
এটাকেও আমরা সাধারণ পেটখারাপ ভেবে
গা সওয়া করে নিয়েছি।।
ঈশ্বরের জন্য দুঃখ হয়
যাকে দেখা যায় না
অথচ সব জায়গায় থাকেন
তাকেই আমরা ঈশ্বর মানি
এমন তেত্রিশকোটি ঈশ্বরকে আমি জানি
কাউকে প্রণাম করি
কাউকে বলি অপেক্ষায় থাকো
প্রয়োজনে ডেকে নেব
কত ঈশ্বরই আছেন যারা নিরাশ্রয়
অশালীন ভক্তেরা
তাদের দেবত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোলে
কোন কোন ঈশ্বর – রঙীন পুতুল
তাদের মুখ আর মুখোশ আলাদা
ঈশ্বরের জন্য আমার দুঃখ হয়
বেচারা জানে না
এই পৃথিবীটা আদৌ তার জন্য নয়
শুধুমাত্র ঈশ্বর হওয়ার কারণেই।।