ধারাবাহিক || ভ্রমণ সিরিজ || সুব্রত সরকার – ৩

|| জাপানের ডায়েরি – ৩ ||
জাপান যাত্রার শুরুর দিনে, অর্থ্যাৎ ২০ মার্চ, ২০২৫, বৃহস্পতিবার, আবহাওয়ার পূর্বাভাষ ছিল কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে বিকেলের দিকে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে! আমাদের ফ্লাইট গভীর রাতে। তবু সাবধানের মার নেই, একথা মনে রেখে রিপোর্টিং টাইমের অনেক আগেই পৌঁছে গেলাম দমদম বিমানবন্দরে।
নারায়ণ সান্যালের ” জাপান থেকে ফিরে” গ্রন্থে পড়েছি, প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়েছিল কলকাতায় তাঁর জাপান যাত্রার দিনে। দিনটা ছিল ১৯৭০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। ফলে সেদিন নাকি বিমানের অনেক যাত্রীরা আসতেই পারেন নি! মাত্র বাইশজন যাত্রী নিয়ে বিমান ছেড়েছিল রানওয়ে। নারায়ণ সান্যাল কিভাবে, কত ঝামেলা ঝঞ্ঝাট পেরিয়ে অবেশেষে পৌঁছে ছিলেন বিমানবন্দরে তাঁর সরস বর্ণনা পড়েছি। ফলে আমি অতিসাবধানী হয়ে অনেক আগেই পৌঁছে যাই এয়ারপোর্টে।
আমাদের প্রথম ফ্লাইট থাই এয়ারওয়েজ ইন্টারন্যাশনালে করে কলকাতা থেকে ব্যাঙ্কক। রাত দেড়টায়। আসলে পরেরদিন, শুক্রবার, ২১ তারিখ ভোর বলা যায়! অনেক আগে লাউঞ্জে ঢুকে একা একা কিছুটা সময় কাটানোর পরই পেয়ে গেলাম সহযাত্রীদের। এরপর বোর্ডিং পাস নিয়ে লাগেজ চেক ইন করিয়ে সিকিউরিটি চেকিং করে টার্মিনালে গিয়ে বসলাম। বিমান যাত্রার এই পর্বটা একদম ভালো লাগে না। নিজেকে এতবার পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে ওদের হাত থেকে মুক্তি পেতে হয় যে হাঁপিয়ে উঠি।
থাই এয়ারওয়েজের বিমানে প্রথমবার উঠলাম। সৌভাগ্যক্রমে জানলার ধারে সিট পেলাম। বিমানে রুমালের টুকরোর মত ছোট্ট জানলা দিয়ে রাতের মায়াবী সুন্দর আকাশ ও রানওয়েটা দেখে খুব ভালো লাগছিল। আজ পূর্বাভাষ মেলে নি, কলকাতায় ঝড়বৃষ্টি হয় নি। রাতের সুন্দর আকাশটার দিকে চেয়ে আপনমনে ভাবছিলাম, এই সব মুহূর্তগুলোয় মন ভাবুক হয়ে যায়! দিল দরিয়া হয়ে আসমানে ঘুড়ি ওড়ায়। অবশেষে জাপান যাচ্ছি!.. এ এক স্বপ্নের ভ্রমণ। আমি কত ভাগ্যবান। অনেক অপূর্ণতার মধ্যেও কত পরিপূর্ণ একটা জীবন অতিবাহিত করছি। সেই কোন ছোটবেলা থেকে বনে-বাঁদাড়ে, মাঠে-ঘাটে, হাটে- বাটে ঘুরতে ঘুরতে বড় হয়ে নিজের দেশের বনে-জলে- জঙ্গলে-পাহাড়ে-সমুদ্রে ঘুরেছি অনেক। আমার দেশটা বড় সুন্দর। ঘুরে বেড়ানোর জন্য এমন একটা দেশের সত্যি কোনও তুলনা হয় না। তাই সেই কবে থেকে শুধুই ঘুরে বেড়িয়েছি দেশের প্রান্তরে প্রান্তরে। তারপর বিদেশ ভ্রমণের স্বাদ নেওয়া শুরু করেছি চাকরী থেকে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার পর। এই দু’বছরে পাঁচটা বিদেশ ভ্রমণ করে ফেলেছি। জাপান হচ্ছে ষষ্ঠ। এই সব ভ্রমণগুলোই এখন আমার ভালো থাকার মেডিসিন। সুখে থাকার পাসওয়ার্ড!..সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার কথায় হেসে হেসে বলতে ইচ্ছে হয়, ‘আয় দেখে যা নিখিলেশ, কেমন করে বেঁচে আছি…’
কলকাতা থেকে ব্যাঙ্কক আড়াই ঘন্টার আকাশপথের ভ্রমণ শেষ করে একটা ছোট্ট লে- ওভার পেলাম। পরের বিমানে ব্যাঙ্কক থেকে ওসাকা। এবারও থাই এয়ারওয়েজের বিমানে উঠে বসলাম। কিন্তু জানলার ধারে বসার জায়গা পেলাম না!
দমদম থেকে ব্যাঙ্কক আসার থাই এয়ারওয়েজের বিমানটি এই বিমানটার তুলনায় ছিল ছোট এবং কম লাক্সারিয়াস। এই বিমানে প্রত্যেক সিটের পেছনে মনিটর রয়েছে। মন চাইলে তোমার পছন্দ মত জিনিস দেখতে শুনতে পারো। দীর্ঘ যাত্রাপথে বিরক্ত না হয়ে বেশ কেটে যাবে। মনিটরের পাশে এয়ারওয়েজের লোগো ও গর্বিত ঘোষণা- THAI Smooth as Silk.
বিমান টেক অফ করতেই মাঝখানে বসা সিট থেকেই কিছুটা ভাসমান দৃশ্য দেখলাম। মেঘের দেশে ভেসে যাওয়া, মেঘমুলুকে পথ খুঁজে খুঁজে এগিয়ে চলা, বিমানের ভেতরে বসে ভাবতে কেমন যেন আশ্চর্য লাগে! তারপর চোখের সামনের মনিটর খুলে দেখতে শুরু করলাম আমার আকাশপথের চলমান জায়গাগুলো অতিক্রম করে যাওয়ার টাটকা দৃশ্যরূপ।
ব্যাঙ্কক থেকে ওসাকা আকাশপথের দূরত্ব দেখলাম ২৭২৯ মাইল। বিমান ছাড়ল তখন ব্যাঙ্ককের সময় সকাল ৮.২৮। বিমান ওসাকায় ল্যান্ড করবে বিকেল ৩.০৪। প্রায় সাড়ে ছ’ ঘন্টার লম্বা সফর।
এই দীর্ঘ চলার পথে পরিচিত নামগুলো একে একে ভেসে এলো মনিটরে- আমরা যাব একের পর এক জায়গাগুলো টপকে টপকে- ব্যাঙ্কক, ইয়ানগন, ভিয়েনটাইন, হ্যানয়, হংকং, তাইপেই, নাগাসাকি পেরিয়ে ওসাকা। একপাশে পড়ে থাকবে ম্যানিলা, ফিলিপাইন সমুদ্র। এভাবে মনিটরে চোখ রেখে পুরো যাত্রা পথটাই আমি খুব উপভোগ করি। সেই কোন ছোটবেলা থেকে বইতে পড়ে আসছি, শুনে আসছি জায়গাগুলোর নাম। আজ তাদের ওপর দিয়ে বিমানের ডানায় ভর করে উড়ে উড়ে বহুদূরে চলে যাচ্ছি- এটা একটা রোমাঞ্চ তো বটেই!
বিমান আকাশে ভাসতে ভাসতে চলেছে, যাত্রীরা সবাই নিজেকে একটু গুছিয়ে নিয়েছি। এবার থাই এয়ারওয়েজের হাসিখুশি মেঘকন্যারা খাবার পরিবেশন শুরু করলেন। আমাদের জন্য আগে থেকেই চিকেন মিল বলা ছিল। তাই হাতে পেয়ে সেই সুস্বাদু খাবারগুলো খেয়ে বেশ তৃপ্তি পেলাম। এরপরেই এলো ড্রিংক্স। সব রকম ড্রিংক্স এর অপশন রয়েছে। আমি নিলাম হোয়াইট ওয়াইন। প্রায় পয়ত্রিশ-ছত্রিশ হাজার ফুট উচ্চতায় বিমানের রাজকীয় আরামের মধ্যে বসে হাতে নিয়ে হোয়াইট ওয়াইন খাওয়ার মজা উপভোগ করতে ভালোই লাগছিল। জীবন তো অনেক ওঠা- নামা, ভাঙা- গড়া, পাওয়া- হারানোর গল্প- চেষ্টা করেছি সব অবস্থাতেই নিজেকে মানিয়ে নিয়ে আশাবাদী একটা জীবন যাপনের আনন্দের মধ্যে বাঁচতে। নিত্যদিনের বেঁচে থাকার উষ্ণতাটাকে আমি বরাবরই ভালোবেসে এসেছি।
আজ আমাদের জাপানে পৌঁছে কোনও সাইট সিয়িং নেই। এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে ডিনার করে হোটেলে চেক ইন করব। আগামীকাল থেকে শুরু হবে দৌড়, ছুটে ছুটে বেড়ানো আর নতুন দেশ দেখার আনন্দ!
ওসাকা বিমানবন্দরে বিমান একদম ঘড়ির কাঁটা ধরে ল্যান্ড করল। আমার হঠাৎ তখন একটা সুন্দর অনুভূতি হল- জাপানে চলে এলাম!..মনে মনে বেশ খুশি হলাম। সেই স্বপ্নের দেশ ভ্রমণ!..
ওসাকায় নেমে প্রথম অভিজ্ঞতাটা একদমই ভালো হলো না। বিমান থেকে নেমে টার্মিনাল পেরিয়ে এসে ইমিগ্রেশন কাউন্টারের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কিন্তু লাইন আর যেন এগোয় না। ক্লান্ত শ্রান্ত শরীরে এভাবে অপেক্ষা করতে বেশ বিরক্তি লাগে। এত সময় কেন নিচ্ছে? জাপানের মত উন্নত দেশ সময়কে তো অমূল্য মনে করে। ওদের হাতে রয়েছে, পাশে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির সব কিছু। তাহলে ইমিগ্রেশন চেকে কেন এত সময় লাগবে? আমরা তো টুরিস্ট ভিসা নিয়ে এসেছি!.. টুরিস্টদের জন্য কি আলাদা একটা কাউন্টার করা যায় না!..
আমেরিকায় প্রথম পা দিয়ে নিউইয়র্ক এয়ারপোর্টের অভিজ্ঞতাও এমনই ছিল!.. বুঝলাম এই ব্যাপারে বোধহয় সব দেশই এক- ধীরে চলো বৎস!.. তোমাকে স্বাগত! কিন্তু তুমি সন্দেহের উর্ধে নও। ভালো করে দেখে বুঝে নিয়েই তোমাকে দেশে ঢুকতে দেব!..
ইমিগ্রেশন পর্ব মিটিয়ে লাগেজ বেল্ট থেকে নিজেদের বাক্স-প্যাঁটরা সব নিয়ে যখন ওসাকা এয়ারপোর্টের বাইরে এসে দাঁড়ালাম, তখন আকাশ রক্তিম বর্ণে বর্ণময়। ঘড়িতে পাঁচটা বিয়াল্লিশ। দিন শেষের আলোয় আলোময় জাপানের আকাশটাকে দেখে বেশ ভালো লাগল!
আমাদের জন্য জাপানের গাইড মিস্টার কাওয়াসাকি উপস্থিত ছিলেন আগে থেকেই। ট্রাভেল লাইভের গাইড অশোক মুখার্জি ও কাওয়াসাকি আমাদের সারিবদ্ধ ভাবে নিয়ে গিয়ে বাসে তুললেন। এর মাঝখানে আমি এয়ারপোর্টে ডলার ভাঙ্গিয়ে জাপানি ইয়েন নিয়ে নিলাম। রেট পেলাম এক ডলারে একশো চল্লিশ ইয়েন। আপাতত চল্লিশ ডলার ভাঙিয়ে পকেটে পাঁচহাজার ছশো ইয়েন রাখলাম।
ওসাকা এয়ারপোর্ট থেকে আমরা যাচ্ছি কিওটো। সেখানে আজ ও কাল থাকব। কিওটো ঘুরে বেড়িয়ে দেখব। জাপানের পথে প্রথমদিন চলেছি। সন্ধে নেমে এসেছে। বাইরে সুন্দর একটা বাতাস বইছে। পথ ঘাট একদম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। রাস্তার ধারের দেওয়ালগুলো পর্যন্ত নিপাট সুন্দর। দেখতে বেশ লাগছিল। গাড়ি ছুটছে। রাস্তা তো চমৎকার। পৌঁছাতে সময় লাগবে নাকি প্রায় দু’ঘন্টা। ক্লান্ত শরীরে এই দু’ঘন্টা বাস জার্নি করতে একটু বিরক্তি লাগলেও নতুন দেশ ও চারপাশকে দেখার আনন্দে চলেও এলাম কিওটো।
কিওটো খুব শান্ত শহর। রাস্তাঘাটে লোকজন কম। কোথাও কোনও শব্দ নেই। একটু বেশি যেন চুপচাপ। রাত বেশি হয় নি। আটটা বেজে কয়েক মিনিট হয়েছে। পথের ধারে রেস্তোরাঁ চোখে পড়ল অনেক। রেস্তোরাঁগুলোয় লোকজন রয়েছে। তবে বেশির ভাগ যুবক যুবতী। ওরা বেশ গল্প করে খাওয়া দাওয়া করছে। অন্তরঙ্গ আড্ডায় মজে আছে।
আজ আমাদের ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে ডিনার। দোকানের নাম দেখলাম “রাজু।” খুব বড় রেস্টুরেন্ট নয়। আমাদের জন্য বুফে ডিনার রেডিই ছিল। একদম ভাত, ডাল, রুটি, সব্জি, বিরিয়ানি, চিকেন থেকে শুরু করে ডেজার্ট, ফ্রুট জুস অনেক কিছু ছিল। যে যার পছন্দ মত খেয়ে নিলাম। রান্নাগুলো ভালো ছিল। খেয়ে সকলেই খুশি।
এবার আমরা ফিরে যাব হোটেলে। শহরের বুকেই আমাদের হোটেল-KANSEI।
আমার রুমমেট পেলাম ভূপেন রায়কে। অমায়িক সুভদ্র মানুষ একজন। বয়স প্রায় একাত্তর। কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার কর্মী ছিলেন। পরিবার সহ বেড়াতে এসেছেন। মেয়ে ও স্ত্রী একটা রুমে। ভূপেনদা আর আমি রুম শেয়ার করেছি।
এর আগে মিশর ভ্রমণে আমার রুমমেট ছিলেন একজন অসমীয়া প্রফেসর। সুরেশ শইকিয়া। তিনিও অতি সুভদ্র ছিলেন। বয়স তখন তার ছিল একাশি। দিব্যি সুস্থ শরীর। আমাদের দুজনের রুম বোঝাপড়া ছিল খুব ভালো। একজন অপরিচিত মানুষের সঙ্গে একরুমে একসঙ্গে থাকতে গেলে একটা সুন্দর বোঝাপড়া থাকাটা বড় জরুরী।
জাপানে হোটেলের রুমগুলো নাকি হয় খুব ছোট ছোট। একথা আগেই জেনে এসেছিলাম। কথাটা যে সত্যি তা টের পেলাম রুমে প্রবেশ করে। ডবল বেড রুম বলছে বটে, কিন্তু ভালো ভাবে একজন থাকলেই ভালো হয়। যাই হোক মানিয়ে নেওয়ার মধ্যেই সমাধান লুকিয়ে আছে। এসেছি বেড়াতে, ভালো ভাবে যেন বেড়ানোটা হয়।
মিস্টার কাওয়াসাকি ও অশোকদা আগামীকাল সকালের সফরসূচী আগাম ভালো করে বুঝিয়ে দিলেন। বেড টির ব্যবস্থা ঘরেই রয়েছে। স্নান করে নিচে এসে বুফে ব্রেকফাস্ট। তারপরই আমরা বেরিয়ে পড়ব সারাদিনের ভ্রমণে।
আগামীকাল আমরা যাব কিওটো থেকে নারা। সেখানকার বিখ্যাত টোডাজি টেম্পল, গোল্ডেন টেম্পল, কিনকাকুজি টেম্পল, নারা পার্ক দেখে জাপানি লাঞ্চ করব হোটেলে। তারপর আরাশিয়ামা ব্যাম্বু গ্রোভ দেখে আবার সেই ইন্ডিয়ান রাজু রেস্টুরেন্টে ডিনার করে ফিরে আসব কিওটো শহরে, এই কানসেই হোটেলে।
জাপানে এসে প্রথম দিনটা কেমন দ্রুত শেষ হয়ে গেল। ভালো করে যেন বুঝতে পারলাম না। নতুন একটা দেশে এসেছি। তাকে জানতে বুঝতে তো কিছুটা সময় লাগবেই। কিন্তু অত সময় তো আমাদের নেই। এসেছি প্যাকেজ টুরে। এখানে সময়ের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বুড়ি ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাওয়ার ব্যাপার স্যাপার রয়েছে। চাইলেই নিজের স্বাধীন ইচ্ছে মত ঘুরে বেড়ানো যাবে না। আমি এভাবে বেড়াতে একদমই পছন্দ করি না। আমার বেড়ানো নিজের মত করে বেড়ানোর আনন্দ। নিজের দেশে সেভাবেই বেশি ঘুরে বেড়াই। কিন্তু এতদূর অজানা বিদেশে একা একা আসতে, ঘুরে বেড়াতে সেই সাহসটা পেলাম না। তাই এলাম এই দলবেঁধে বেড়ানোর চেনা ছকের ভ্রমণে। যাই হোক, তার মধ্যেই আমার মত আমার ভ্রমণ করে নিতে হবে।
রবীন্দ্রনাথ জাপানে এসেছিলেন তিনবার। সে সময় জাহাজে করেই আসতেন। প্রথমবার এসেছিলেন ১৯১৬ সালে। দ্বিতীয়বার এসেছিলেন আট বছর পর ১৯২৪ সালে। তারপর আবার এসেছিলেন, পাঁচ বছর পর ১৯২৯ সালে। এভাবে মোট তিনবার এসেছিলেন জাপানে।
একটা নতুন দেশের মানুষকে, তাঁদের জীবনযাপন, শিল্প, সংস্কৃতি, আচার ব্যবহার সব কিছুকে ভালো ভাবে জানতে বুঝতে গেলে এভাবেই বারেবার আসা যাওয়ার মধ্যে সেটা সম্ভব।
আমি আসা যাওয়া নিয়ে দশ দিনের জাপান ভ্রমণে এসে “জাপানের ডায়েরি” লিখছি। তাই হয়তো অনেক না দেখা, না বুঝতে পারার অপূর্ণতা থেকে যাবে ডায়েরিতে। একজন ভ্রামণিক হিসেবেও এর জন্য দুঃখ পাব, আবার লিখিয়ে হিসেবেও সবটা না লিখতে পারার যন্ত্রণা বয়ে বেরাব!…
আজ তৃতীয় পর্ব এখানেই শেষ করলাম।
ক্রমশ…
আবার আগামী সপ্তাহে, শনিবার।