অণুগল্প রত্না দাস

কচিবুড়ো সম্মিলন

ওরা চারজন, দেবদ্বৈপায়ন, মরিয়ম, শৌরসেনী আর বিদুর। কলেজ শেষে প্রত্যেকেই যে যার কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকলেও বন্ধুত্বে ভাটা পড়েনি। এক বিকেলে কফিশপে বসে প্রত্যেকেই ভাবলো, জীবনটা বড় এলেবেলে চলে যাচ্ছে। শোন দেব, মরিয়ম বলে আমাদের কিছু একটা করলে হয়।

‘তুই তো ক’ দিন পরেই কবুল হ্যায় বলবি’ তবে! মরিয়ম জানে দেবের লেগপুলিং করার অভ্যাসটাকে, তাই পাত্তা না দিয়ে বললো, সে যখন বলবো তখন বলবো, তুই কথা কম বল। এখন কিছু একটা ভাব।

শৌরসেনী সবাইকে চমকে দিয়ে বললো, শোন, আমি কিন্তু আমাদের কমপ্লেক্সের কচিকাঁচা আর বয়স্কদের নিয়ে ক্লাস করা শুরু করে দিয়েছি। বিদুর বলে ওঠে, তবে আমাদের পাশের বস্তির লোকদেরও বলি! তোর আবার বর্ণাশ্রম ধর্মে বিশ্বাস নেই তো! ধ্যাৎ কি যে বলিস শৌরসেনী বলে ওঠে।

দ্বৈপায়ন বলে, কিন্তু ভাবতে হবে এটা কি এনজিও টাইপ হয়ে যাচ্ছে! আমি কিন্তু নেই তবে! শেষে লোকে বলবে বিদেশী ফান্ড কালেক্ট করতেই আমাদের এসব উদ্যোগ।

না রে, আমরা চারজনে মিলেই যা করার করবো, কোনও এনজিওটিও না। পড়ানোর ফাঁকে হাইজিনের দিকে নজর দেওয়া, স্বনির্ভরতায় জোর দেওয়া, প্রয়োজনে যতটা সম্ভব অন্যকে সাহায্য করা এগুলোও শেখাতে হবে— মরিয়ম বলে। হ্যাঁ বয়স্করা একটু একাকিত্বে ভোগেন, তারাও সকলের সাথে ভালো থাকবেন।

বিদুর বলে, নাম কি হবে রে? কচিবুড়ো সম্মেলন, হাসতে হাসতে বলে শৌরসেনী। হাসিটা সবাইকে ছুঁয়ে যায়। ভরাট গলায় দেবদ্বৈপায়নের কন্ঠে বেজে ওঠে… প্রাণ আছে… প্রাণ আছে… প্রাণ থাকলে… মান আছে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।