গল্পেরা জোনাকি তে রীতা পাল (ছোট গল্প সিরিজ)

জন্মদিন
ছোট্ট টুয়ার আজ ষষ্ঠতম জন্মদিন। সকাল থেকেই বায়না,আজ স্কুলে যাবো না মা। না সোনা —
—স্কুল থেকে ফিরে আমরা সেলিব্রেশন করবো কেমন।
—না,তুমি তো সেই রাতে ফিরবে
— না না, আমি আজ তাড়াতাড়ি ফিরব,প্রমিস। রেডি হয়ে নাও দেরী হয়ে যাবে।
ক্লাস ওয়ান পিঠে বইয়ের বোঝা।ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, ফাঁকির কোনো জায়গা নেই। মায়ের স্বপ্ন,এগিয়ে যাবার লড়াই, সব নিয়ে ছোট্ট টুয়া এগিয়ে চলেছে স্কুল গাড়ির দিকে। আজ পড়াশোনায় মন নেই টুয়ার। বার বার মনে পড়ছে গত বছরের জন্মদিনের কথা। বাবা এত্তোবড়ো একটা টেডিবিয়ার দিয়েছিল। কতো গিফ্ট।বাবার কথা মনে পড়তেই চোখ ভিজে গেলো টুয়ার।ও এখনো বোঝেনি, কেন ওর বাবাকে ছেড়ে আসতে হয়েছিল। শুধু মনে পড়ে মাঝে মাঝে রাতে ওর ঘুম ভেঙে যেত বাবা মার ঝগড়ায়। খুব ভয় পেত, জোর করে চোখ বুজিয়ে পড়ে থাকতো।
একদিন একঘর লোকের মাঝে একদিকে বাবা, একদিকে মা।একটা কালো কোটপরা লোক টুয়াকে জিগাসা করেছিল
—তুমি কার সাথে থাকবে মামনি?
—মা,বাবার সাথে।
মা বলেছিলো তুমি আমার সাথে থাকবে। বাবা যাবার সময় বলেছিল ভালো থাকিস, দুষ্টুমি করবি না কেমন। বাবা ছোট্ট আঙুলটা ছেড়ে চলে গেলো।
সন্ধ্যাবেলা সেজে উঠল ড্রয়িংরুম। টুয়ার বন্ধুতে ভরে উঠল। টুয়ার চোখ বাইরের দরজার দিকে।
—টুয়া এদিকে এসো কেক কাটব। টুয়া, সবাই এখানে বাইরে কি দেখছো?
—যাই মা।
—ফু দিয়ে মোমবাতিগুলো নেভাও
সবাই একসাথে,“হ্যাপি বার্থ ডে টু টুয়া”
দরজা দিয়ে একটা বড় টেডি বিয়ার ঢুকছে
—ওই দেখো রাজ আঙ্কেল এসে গেছে। তুমি তো টেডি ভালোবাসো তাই না?
টুয়ার চোখ দিয়ে জল গড়াচ্ছে।
—কি হলো কাঁদছো কেনো?
আচ্ছা কি চাই তোমার ?
—মা,বাবা আসবে না?