নাট্য-নাটিকায় দেবাশীষ মণ্ডল – ৪

কৌতুক নাটক-“কৈলাসে পদ বদল”

৩ য় দৃশ্য

(কৈলাসে শিবের গৃহ)
(শিব কম্পিউটার নিয়ে বসে হিসেব মিলাতে থাকে এমন সময় সরস্বতীর প্রবেশ)

সরস্বতী।বাবা !ও বাবা! কি করছেন বলুন তো। বাড়িতে খাবার চাল পর্যত নেই।যে যার দপ্তর যদি না চালাতে পারে।আমাকে বলুন কেউ ইস্তফা দিয়ে দিচ্ছেনা কেন।দেখুন আমি আমার দ্প্তর কি ভাবে সামাল দিয়ে এসেছিলাম এত দিন ধরে বলুন।

শিব।কি আর বলবো মা।বলার মতো অবস্থাতেও আমি আর নেই।কাকে যে কি বলি।সব দপ্তর তো আমার পরিবারেই আছে। কাউকেই চটানো যাবেনা। রাজনীতি এক আলাদা জিনিস।দেখ এই পরিবার কে প্রায় সব পদ গুলো দেওয়া আছে এটাও তো রাজনীতির একটা অংশ।

সরস্বতী।তাই বলে যে যেমন খুশি দপ্তর চালিয়ে যাবে তাই তো মেনে নেওয়া যায়না।আর যাই হোক আমি মানতে পারবো না। শিক্ষা দপ্তর আমার নেই বলে কি আমি সব কিছু মেনে নেব।বলি পেটে তো শিক্ষা টা আছে নাকি।

শিব। ভোটাররা যখন তোকে চাইনা।তখন আর কি করার আছে বল!সব তো ভোটে হয়েছে বল। আধুনিক যুগে তোকে ও তো এই আধুনিক পোশাক পরতে হচ্ছে নাকি বল মা।কালে কালে আরো কত কি হবে দেখ মা।

সরস্বতী। শেষের শুরু হয়েছে বাবা।আর কিছু করতে পারবেনা। আমি সিনেমা দেখতে চললাম। আমার যখন কোনো দায়িত্ব নেই সময় পার তো করতে হবে ।আসি বাবা।

(চলে যায়)

শিব। হ্যা আয় মা আয়।রাস্তা ঘাট ভালো না একটু সতর্ক থাকিস।দেখছিস তো এখন তো সবাই গরম ।

(অসূর এসে বলে)

অসূর। গরম মানে গরম একে বারে দেখেন কাঁঠাল পাকা গরম।শুধু তাই নয় বাবা দেখছেন বাবা সাথে রাজনৈতিক গরম ও কম নয়।তবে আমাকে এ ভাবে হারিয়ে দেবে ভাবতে পারিনি বাবা।

শিব।আমিও খুব দুঃখ পেয়েছি অসূর।তাই তো তোমার দ্প্তর কাউকে দিতে পারিনি, ফাঁকা আছে এখনও।

অসূর। রাজনীতি করবেন না বাবা।ঐ চোখে কুম্ভিরাশ্রু আনবেন না। আপনি বলুন তো আমার দপ্তর কে নিতে চাইছে?

শিব।না মানে , মানে—

অসূর।কে নেবে বলুন,পড়ে পড়ে মার খেতে আর কে চাইবে।সেই কবে থেকে মা দুর্গার পায়ের নিচে পড়ে থাকতে হয়েছে।একি কম কষ্টের বলুন।আমি শান্ত ভদ্র তাই সহ্য করেছি।এ যুগে কে নেবে এ দপ্তর তাই দেখতে চাই। দুঃখ করে লাভ নেই।তবে একটা দুঃখ আছে এই বুড়ো বয়সে মায়ের পদ সেবা করতে পারবোনা। তাই-

শিব। অসূর একটা কথা বলি,এ দপ্তর তুমি নিয়ে নাও বুঝলে।

অসূর। কিন্তু তাও কি সম্ভব!কি ভাবে এটা সম্ভব হবে বড়ো জানতে ইচ্ছে করে প্রভু।

শিব। রাজনীতি , রাজনীতি তে সব সম্ভব বুঝলে কিনা।যাক সে দায়িত্ব আমার। তুমি এখন তোমার ঘরে যাও,আমি সব দেখে নিচ্ছি।

অসূর।লোভ যে আমার নেই তা বলবো না।তবে –

শিব।তবে, কিন্তু এ সব বাদ দাও। আমি উপ নির্বাচন করিয়ে সব ব্যবস্থা করে দেব।তা ছাড়া ঐ দপ্তর তো খালি রাখলে চলবে না। মানুষ কি ভাববে বলো তো যখন সামনে বার তোমার মায়ের পূজোয় তোমাকে দেখতে পাবেনা। তাই-

অসূর। বুঝলাম বাবা , বুঝলাম ফান্দে পড়িয়া বাবা কান্দেরে। হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ—-
(চলে যায়)

শিব।হ্যা রে অসূর তাই বটে তাই। এই কৈলাস চালানো যে কি মুস্কিল তা যে চালায় সেই বুঝেছে সেই বুঝে।(নাক দিয়ে শুঁকে) কিন্তু এ কৈলাসে মানুষ মানুষ গন্ধ কেন!তবে কি এখানে কোন জ্যান্ত মানুষ কে কেউ নিয়ে এসেছে।দেখতে হবে আমাকে দেখতেই হবে আসল ঘটনা কি।

(ফ্রিজ।আলো নিভে)

ক্রমশ…..

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *