• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে পিয়াংকী (পর্ব – ৮)

স্টেশন থেকে সরাসরি

ইংরেজি ১৪ই জুন ২০২১
বাংলা ৩০ শে জৈষ্ঠ্যমাস ১৪২৮,সোমবার

একটা ছায়া ক্রমশ তাড়া করে বেরোচ্ছে। দিন রাত সকাল দুপুর অফিস বাড়ি বাজার, সর্বত্র। আমি বসলে সে বসছে আমি বিশ্রাম নিলে সেও বিশ্রাম। স্টেশনের দিকে রওনা দেব,সে হাজির।আমি যতই মুখে তার ওপর চিতকরি না কেন, বলি না কেন যে ‘উফফ অলটাইম আমার ওপর এই খবরদারি বন্ধ হোক’ কিন্তু এই আমিই ওই দেখভালটুকু না পেলে ভালো থাকতে পারছি না। কিভাবে যেন ওই ছায়া ধীরে ধীরে ছায়াসঙ্গী হয়ে উঠেছে
যখন ছোট ছিলাম, মায়ের সাথে রান্নাঘরের সামনে বস্তা পেতে বসে আলু পটল গুনে যোগ বিয়োগ শিখতাম তখন শেখার অর্থ ছিল স্বনির্ভর ।আক্ষরিক অর্থে তখনই আমরা বড় ছিলাম। এখন ছোট হবার তাড়না প্রতিদিন একটু একটু করে খেয়ে নিচ্ছে আমাদের বোধের ঘরকে।এখন আলুপটল গোনা অঙ্কের পাশে নাটক আর নৈতিকতা নিয়ে বসি রোজ।মা একটা প্রদীপ জ্বেলে, নিদেনপক্ষে একটা হ্যারিকেন ধরিয়ে এগিয়ে আসেন। বলেন ‘আলুপটল কিন্তু ফুরিয়ে যাবে না কোনোদিন, তুই গুনতে থাক’
আমি গুনি। আমার সাথে সাথে আরও কয়েক লক্ষ পিয়াংকীও রোজ গোনে। কতকিছু আছে গোনার মতো, জলজোনাকি, বাসনকোসন, কবিতায় শব্দসংখ্যা। আরও অনেক অনেক কিছু।
গুনতে গুনতেই ট্রেন আসে।উঠে পড়ি।এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে ছুটে যায় প্যাসেঞ্জার। তাদের ভরসা কিছু জমানো ছায়া আর কাটগুনতি। সবাই সবার দিকে তাকায় মাঝেমধ্যে, হাসে, অঙ্গভঙ্গি করে কিন্তু ঠোঁট ফাঁক করতে দেখা যায় না কাওকেই।
মাথাপিছু মূল্য সংযোজন হয়েছে, আলু পটল উচ্ছে ঝিঙে দাম বাড়ছে সবকিছুর।
ছায়াদের কোনো দাম নেই, বসতভিটে নেই। শুধু আছে খুঁটি হয়ে ওঠার ইচ্ছে। মাচার ওপর বসে এরাই তো পা দোলায় প্রতিটা ভরা কোটালে…
আমি এতক্ষণ ধরে তাহলে কী বলতে চাইছি? নিজেকে প্রশ্ন করলাম। আসলে তোমার ঘরে হারিয়ে গেছে আস্ত একটা উপন্যাস আর আমার কামরায় এসে পড়েছে তার ম্রিয়মাণ আলো।
আমি পিয়াংকী। স্টেশন থেকে সরাসরি ছিলাম আপনাদের সাথে।পরবর্তী স্টেশনে কি নিয়ে বলব?
আসলে, সমঝদারো কে লিয়ে সির্ফ ইশারা হি কাফি হোতা হ্যায়…
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।