ইংরেজি ১৪ই জুন ২০২১ বাংলা ৩০ শে জৈষ্ঠ্যমাস ১৪২৮,সোমবার
একটা ছায়া ক্রমশ তাড়া করে বেরোচ্ছে। দিন রাত সকাল দুপুর অফিস বাড়ি বাজার, সর্বত্র। আমি বসলে সে বসছে আমি বিশ্রাম নিলে সেও বিশ্রাম। স্টেশনের দিকে রওনা দেব,সে হাজির।আমি যতই মুখে তার ওপর চিতকরি না কেন, বলি না কেন যে ‘উফফ অলটাইম আমার ওপর এই খবরদারি বন্ধ হোক’ কিন্তু এই আমিই ওই দেখভালটুকু না পেলে ভালো থাকতে পারছি না। কিভাবে যেন ওই ছায়া ধীরে ধীরে ছায়াসঙ্গী হয়ে উঠেছে
যখন ছোট ছিলাম, মায়ের সাথে রান্নাঘরের সামনে বস্তা পেতে বসে আলু পটল গুনে যোগ বিয়োগ শিখতাম তখন শেখার অর্থ ছিল স্বনির্ভর ।আক্ষরিক অর্থে তখনই আমরা বড় ছিলাম। এখন ছোট হবার তাড়না প্রতিদিন একটু একটু করে খেয়ে নিচ্ছে আমাদের বোধের ঘরকে।এখন আলুপটল গোনা অঙ্কের পাশে নাটক আর নৈতিকতা নিয়ে বসি রোজ।মা একটা প্রদীপ জ্বেলে, নিদেনপক্ষে একটা হ্যারিকেন ধরিয়ে এগিয়ে আসেন। বলেন ‘আলুপটল কিন্তু ফুরিয়ে যাবে না কোনোদিন, তুই গুনতে থাক’
আমি গুনি। আমার সাথে সাথে আরও কয়েক লক্ষ পিয়াংকীও রোজ গোনে। কতকিছু আছে গোনার মতো, জলজোনাকি, বাসনকোসন, কবিতায় শব্দসংখ্যা। আরও অনেক অনেক কিছু।
গুনতে গুনতেই ট্রেন আসে।উঠে পড়ি।এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে ছুটে যায় প্যাসেঞ্জার। তাদের ভরসা কিছু জমানো ছায়া আর কাটগুনতি। সবাই সবার দিকে তাকায় মাঝেমধ্যে, হাসে, অঙ্গভঙ্গি করে কিন্তু ঠোঁট ফাঁক করতে দেখা যায় না কাওকেই।