• Uncategorized
  • 0

গদ্যের পোডিয়ামে মালা মিত্র

তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই

যা যা কিছু চাহিদা, তাই চাই বললেই কি পাওয়া যেতে পারে? এ কি খোকার হাতের মোয়া নাকি?চাইলেই পাওয়া যাবে?
কম সময়ে উন্নতির শিখরে ওঠা একমাত্র লটারিতেই সম্ভব, নতুবা ঈশ্বর প্রদত্ত প্রতিভা যা কোটি তে হয়ত একজনের মেলে,সে অসম্ভব কে না হয় নাই ধরলাম।
যে কোনো সাফল্যের চাবিকাঠির মূলে থাকে একটা নিরলস প্রচেষ্টা একটা বিরাট বিন্যস্ত সময়ের অক্লান্ত অনুশীলন।
আর সব জিনিস সবার পাওয়ার নয়, এ কথাটা মাথায় রাখতে হবে।হয়ত গলায় এক্কেবারে সুর নেই, কানে সুরের বৈচিত্র্য বোঝার ক্ষমতা নেই, সে চায় বিখ্যাত গায়ক হ’তে।তার হয়ত যোগ্যতা অন্য কোনো দিকে,হতে পারে খেলা, আঁকা, পড়াশোনা,বা তার ব্যবসায়িক বুদ্ধি ভাল, যে কোনো শাখায় তার স্বচ্ছন্দ চলন হতে পারে, যে পথে চললে সে উন্নতির চরম সীমায় পৌঁছতে পারে।
কিছু মানুষ মনে করেন, যা কিছু দুর্বোদ্ধ লিখে বা অন্তমিল দিলেই বুঝি কবি হওয়া যায়,আদতে তা একদমই সম্ভব নয়।কবির আবশ্যিক অনেক গুণ থাকতে হবে।তার দার্শনিক চিন্তা ভাবনা, রূপকল্প গড়ার ক্ষমতা,আগে পরে বহু গুনীজনরা কবির কবিতা পাঠ, কবিতার ছন্দ মাত্রা লয়ের জ্ঞান, কিভাবে উপমা বসাতে হয় সেটা জানা এবং মানুষের মনের মনোবিজ্ঞান তাকে বুঝতে হয়।
যে কোনো বিষয়ে বড় হতে গেলে নিরবচ্ছিন্ন অনুশীলনের রাস্তা পার করে আসতে হয়, সাফল্যের কোনো সোজা রাস্তা হয় না,বহু পাঁপড় বেলেই উচ্চতার চরমে পৌঁছানো যায়, জুতোর কত শুকতলা ক্ষইয়ে তবে একটা মনোমত জায়গায় পৌঁছানো যায়, তা অল্পবিস্তর সবাই জানেন।
এখনকার অভিভাবকেরা তার সন্তানকে, পড়াশোনা, খেলা, আঁকা নাচ গান সবেতেই উৎকৃষ্ট দেখতে চান,কিন্তু আদতে যা কখনোই সম্ভব নয়।মাঝখানে এত কিছু শিখতে গিয়ে বাচ্চারা, ‘না ঘর করা, না ঘাট কা’রয়ে যায়,কোনোকিছুই পূর্ণ রূপে না শিখে দড়কচা মেরে যায়,যা শেখে তা জগাখিচুরি ছাড়া কিছু নয়।
কোনো বিষয়ে সিদ্ধিলাভ করতে চাই নিরলসভাবে সাধনা,ঠিক ঠিক গুরু নির্বাচন, যে তাকে সঠিক পথটা দেখিয়ে দেবে, যে বিষয় টি সে শিখতে চায় তার পুংখানুপুংখ ভাবে জানা,নিয়মিত অভ্যাস করা,সে বিষয়ের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে মেলামেশা,তাদের মতামত গ্রহন।
স্থির নিশ্চিত ধ্যান মানুষকে তার অভিষ্ট লক্ষে নিশ্চই পৌঁছে দেবে, কোনো সংকোচ না রেখেই পথে নামতে হবে শুরু করার শ্রেষ্ঠ সময় শৈশব কালেই, তবেই ঠিক সময়ে বোনা ফসল, গোলায় ভরা যাবে।
প্রেমের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা, ধরুন আমি যাকে ভালবাসি সে অন্য কাউকে ভালবাসে, আবার তার ভালবাসার পাত্র অন্য কাউকে চায় তাই,’যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই,যাহা পাই তাহা চাইনা’।
মানুষের মধ্যে এমন এক স্বতন্ত্র স্বত্তার জন্ম দিতে হবে, যে সে যেটুকু পায় তার মধ্যে খুশি খুঁজে পেতে পারে,আর যেটা না পাওয়ার সেটা না পাওয়াই থাক, তা নিয়ে মনে কোনো হীনমন্যতা দ্বিধাদন্দ্ব না রাখাই ভাল।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।