বীর বলবান সৈনিক হয়েও আমি
নারীর কাছে আকাশ সমান ঋণী
তোমার আকুতির দীর্ঘ যন্ত্রণার অন্তিমে
আমার দেহ তোমার যৌন দ্বার হতে ভূমিতে নামে।
ছিলনা জ্ঞান , ছিলনা হুঁশ
বুঝিনি কে নারী কেবা পুরুষ ,
মানুষ জনমে নারীর শ্রেষ্ঠ অবদান
বেঁচে আছি যাঁর দ্বারা সেই অমৃত মাতৃদুগ্ধ পান ।
পদাক্রমে ধাপেধাপে
সময় তার নিজস্ব গতি বোঝে গুরুত্বের মাপে ,
মায়ের কোলে স্নিগ্ধ আঁচলের দোলনায়
নারীর সাথে এ জীবনের হয় প্রথম পরিচয় ,
স্নেহের তারে মায়ার গান শুনেই
জীবনের গল্পে সংকল্প লিখেছি তাই ।
স্বপ্নের সূচনায় দেখেছিলাম
এমনই কোন নারীর হাসি ,
শত সৃষ্টির জাল বোনা জন্ম লয়
সেখানে হয় ভালোবাসা বাসি ।
জীবনের শুরু থেকে শেষ নারী তুমি পেয়েছ শুধুই ক্লেশ
ভোগের বদলে দিয়েছ অনন্ত ত্যাগ
বিধাতার চরম লেখনীতে এই তোমার প্রাপ্তি
আমি শুধু দেখে যাই ,
কেটে যায় জীবন হয়ে যায় সমাপ্তি ।
২| কালের নিয়ম
ভেঙে যাবে সময়
ভেঙে যাবে হৃদয়
ভেঙে যাবে সম্পর্কের সব বাঁধন,
ভেঙে যেতে যেতে থেমে যাবে একদিন-
মায়ের দুধের সাথে সদ্যোজাত শিশুর আনাগোনা,
ভেঙে যাবে একদিন মায়ের আঁচল ধরে চলা বাধ্য ছেলের গল্প।
ভেঙে যেতে যেতে থেমে যাবে একদিন সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের সকল দায়,
দায়সারা সমাজে একদিন ভেঙে যাবে সকল সম্পর্ক।
ভেঙে যেতে যেতে থেমে যাবে একদিন
মাতৃসম বৌদির স্নেহের আশ্রয় নিতে চাওয়া-
ব্যর্থ প্রেমিক বা কষ্টে কাতর সরল দেবরের ভাষা,
থেমে যেতে যেতে ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে একদিন
অগ্নি সাক্ষী আর শুভদৃষ্টির সকল অনুভূতির সংকল্প
একদিন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা থাকবে দাড়িয়ে একটি মস্ত সন্দেহের কাঁটাতারে
ভেঙে যেতে যেতে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে একদিন
ননদ আর বৌদির গোপন আলাপের বাহার,
ভেঙে যেতে যেতে ভেঙে শ্মশান হবে শাশুড়ি বৌমার যৌথ রান্নাঘর
থেমে যাবে একদিন সব সম্পর্কের বিচার।
বাবা; কাকা; মামা; জ্যাঠা; আছে যত সম্পর্কের বান্ডিল
আসছে এক ভয়ানক প্রজন্ম।সেখানে এগুলো হবে অমিল,
নতুন প্রজন্মের কাছে নেই এই সম্পর্কের বিশ্লেষণ-
নেই মা; মাসি; মামি; কাকি; ঠাকুমা; দিদিমার সম্পর্কের ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ
ভারতীয় সংস্কৃতি গেছে ডুবে বহু আগে
এসেছে ইউরোপিয়ান কালচার তাই নিজেদের সংস্কৃতির পুরোটাই বাদ।
ভেঙে যাবে সময়
ভেঙে যাবে হৃদয়
এমন একদিন আসবে।থাকবে না মানুষের মনুষ্যত্ববোধ, থাকবেনা হুশ
সম্পর্ক নামক থাকবে একটাই পরিচয় নারী আর পুরুষ।
৩| প্রজন্মের পরিহার
এই রাস্তার ধারে ছিল কত বসবাস
কেউ মনে রাখবে না হয়তো কোনদিন
এখানে দুর্গ গড়ে উঠেছে আজ
উঠেছে করে বড় লোকের এক মস্ত সমাজ।
আসে বেগ চলে যায় আবেগ
মাটিটা শক্ত আছে হয়তো তাই এখনও টিকছে সবই,
শুরু হলো আরও একটা বিপ্লব-
হতে হবে নাকাল
শুরু হলো আরও একটা সকাল
শূন্য হাতে ছুটে চলে ক্লান্ত রমণী,
এই প্রজন্মের ভার সে সইতে পারছে না আর
হতে পারেনি সে ন্যায্য জননী।
সুস্থ নগর অশৌচ প্রহর
তারা গতি বেচে খায় মোহর মোহর
সারি সারি গাড়ির দ্রুত গতি
ওড়ে ধুলো; ওড়ে ইট পাথরের গুঁড়ো;
আবেগশূন্য হয়ে যায় ক্রমশ এই ধরণী,
সবুজের মৃত্যুতে পাথর উঠে দাঁড়ায় আরও আরও শক্ত হয়ে।
সস্তার জীবনেরা আর সহজে করবেনা যাপন
হঠাৎ উত্থান হয় ইমারত আর প্রসাধনীর মহড়া,
খেটে খাওয়া মানুষেরা খেটেও পালিয়ে যায়
ঠাঁই পায় হেথা কৃত্তিম রচনা।
মায়ারা চিন্তায় কাঁদে
কাঁদে জীবনের সংযম
সম্ভ্রম বলে কিছুই নেই
আছে শুধু কালো কালো টাকার পাহাড়ের সাদা সাদা জৌলুস,
সময়ের হাতেই ছেড়ে দিই সময়ের বিচার
সময়তো চিরসত্য তাই কতক সময়ই প্রজন্মের পরিহার।