|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় রাই পারমিতা আইচ
by
·
Published
· Updated
স্নেহ প্রলেপ
অশক্ত, ভেঙ্গেপড়া শরীরটা থেকে এখন কেমন পুতীগন্ধ ছাড়ে। পিচুটিফোটা চোখদুটোতে ছানির বাড়বাড়ন্ত। দাওয়ার এক কোণের খাটিয়াটাতে পড়ে থাকে রোদেজলে কোনমতে এক কাপড়ে। হেগেমুতে ভরালে মাছি ভনভন করে। ডাকতে ডাকতে গলার জল শুইকে যায়। এমনিই আধপেটা জোটে, যেদিন কাপড়েচোপড়ে করে বুড়ির শোকের শব্দ কয়েকঘর ছাপিয়ে যায়। দিনান্তে দয়া করে কেউ যদি পরিষ্কার করে দেয়, যুতসই গাল শোনাতেও ছাড়েনা…।
নিজের অদৃষ্টকেই শাপ শাপান্ত করে। এককালে “আমার বৌয়ের নক্ষ্মী পাদুখান এবাড়ির উন্নুতির সব, বুইলি” বলে শ্বাশুরি গর্বে বুক ফুলাতেন। প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতেন।
স্বামীটা মরতেই সোনার দিন শেষ। ভরভরন্ত সংসারটাকে জীর্ণতার দৈন্য খেয়েছে। “অপয়া”, “কালনাগিনীর মুখদর্শনে”… কত কি শোনে এখনো! হঠাৎ …শাঁখের আওয়াজে কম্পিত শরীরেই উঁকিঝুঁকি দিয়ে দেখে পুতিবৌ এসেছে।
সবার বারণ সত্বেও ঠানদিকে প্রণাম করতে যায় নতুন বৌ। কতদিনের ফাটা, খড়িফোটা, রক্তাক্ত পা’দুটো, তবু বোঝা যায় এককালের….বডড মায়া হয়। পুতিবৌ পুঁটলি খুলে নতুন বোরোলীনের টিউবটা বারকরে। একখাবলা ঘষে দেয় বেশকরে গোড়ালিতে। চিলতেটুকু তখন সাদাকালো ছবির সাথে ভরে উঠছে গন্ধে।।