|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় শরণ্যা মুখোপাধ্যায়
by
·
Published
· Updated
সত্যিকারের বন্ধু
১
মিষ্টি হলুদ রঙের পাথরটা রাস্তার ধারেই পড়েছিল। প্রসন্নদের স্কুল-গেটের ঠিক বাইরেই। যদিও মা রাস্তায় পড়ে থাকা জিনিসে হাত দিতে বারণ করেছে, কিন্তু এই পাথরটা দেখে তার বড্ড ইচ্ছে করল। পাথরটা তুলে পকেটে ভরে নিল সে। রঙিন পাথরের ওপর তার বড্ড ঝোঁক। ঢংঢং করে প্রথম ক্লাসের ঘণ্টা পড়ল। মন বসছিল না প্রসন্নর।আসলে তার বাঁদিকের সেই দাঁতটা নড়ছে।ক্লাস ফাইভের দাদাটা বলেছিল ওই দাঁতটা পড়ে গেলেই… তার মা…
২
মনটা খুব খারাপ। বাড়ি ফিরেই দাঁতটা পড়ে গেছে। মা খাইয়ে দিতেই শুয়ে পড়েছে সে।তখনই শব্দটা এলো। ঝুমঝুমঝুমঝুম। প্যাণ্টের পকেট থেকে।হলুদ পাথরটা! উজ্জ্বল হয়ে জ্বলছে।“প্রসন্ন, শুনতে পাচ্ছ?” আওয়াজটা পাথরটা থেকেই আসছে!
“ভয় পেয়ো না। আমি হোপারিস! শুকতারার কথা পড়েছ ত? আকাশে যে পথহারা নাবিকদের পথ দেখায়? আমি ওই শুকতারায় থাকি।তোমাদের মত কেউ ভয় পেলে আমরা আসি। দাঁত পড়লে কেউ কখনো মারা যায় না।তোমার মায়েরও কিচ্ছু হবে না।ওই দাদাটা তোমায় মিথ্যে ভয় দেখিয়েছে। কাল সকালে মাকে সব বলবে, মায়ের থেকে কিচ্ছু লুকোবে না কখনো। দেখবে, সব ঠিক আছে।”
নিভে এলো হোপারিসের আলো।
রোজকার মত মা-ই ঘুম থেকে তুলল।মাকে জড়িয়ে ধরে সব বলতেই মা স্কুলে ওই দাদাটাকে ডেকে বোঝাল।
দাদাটা এখন তার বন্ধু হয়ে গেছে।
একটাই দুঃখ, সেই পাথরটা আর কখনো দেখতে পায়নি প্রসন্ন।