একটি সুন্দর দেশ ও সুশীল সমাজ গঠনে সর্বোত্তম অবদান রাখতে পারে অভিভাবক ও শিক্ষক। আদর্শ রাষ্ট্র তৈরিতে উক্ত দুই মহলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। যে দেশে অভিভাবক ও শিক্ষক ধর্ম পরায়ণ নয়, সে দেশে দুর্নীতি অত্যন্ত সুলভ।
প্রত্যেক মানুষ কোন একটি পরিবারের সন্তান। সেই পরিবারে এক বা একাধিক অভিভাবক থাকে। সন্তানের চরিত্র গঠনের দায়িত্ব বর্তায় অভিভাবকের উপর সর্ব প্রথম। তার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষকের উপর। ইংরেজীতে একটি কথা আছে, Charity begins at home. এই মূল্যবান কথাটি আমরা ভুলে যাই। শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। সেই শিক্ষক সঠিক ভাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করে না। তাঁর প্রমাণ, Bangladesh needs good teacher.
আমাদের দেশের লোকেরা অভিভাবক ও শিক্ষকদের দোষারোপ করে না। দোষ চাপিয়ে দেয় ছেলে মেয়েদের উপর। প্রকৃত অপরাধী নিরপরাধী থেকে যায়। কোন সন্তান অন্যায় করলে তার দায় অভিভাবকের উপর বর্তায়। কোন ছাত্র অপরাধ করলে তার দায় শিক্ষকের উপর বর্তায়। এই সরল সত্যটা আমরা স্বীকার করি না।
দু’টি বিশেষ কারণে একটি সন্তান খারাপ হয়।
( 1 ) অবহেলা, ( 2 ) অতি আদর।
অবহেলা, অর্থাৎ অযত্ন। ভালোবাসার অভাব সন্তানকে বিপথ গামী করে। প্রত্যেক ছেলে মেয়ের অভিভাবক ও শিক্ষকের ভালোবাসা পাওয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। কিন্তু সেই অমূল্য প্রেম না পেয়ে অনেক সময় তাদের ভাগ্যে জোটে দুর্ব্যবহার। এর ফলে তারা খারাপ হয়।
অতি আদর সন্তানকে অমানুষে পরিণত করে। সন্তান যখন অভিভাবকের থেকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু পেয়ে যায়, তখন সে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হ’য়ে পড়ে। আদর্শ পথ থেকে বিচ্যুত হয়। অনেক অভিভাবক স্নেহের বশে সন্তানকে অনাবশ্যক বস্তু প্রদান করে। শাসন করতে ভুলে যায়। আদরের যেমন প্রয়োজন, তেমনি শাসনের আবশ্যকতা রয়েছে।
অভিভাবক ও শিক্ষকের দেখানো পথ ধ’রে প্রজন্ম এগিয়ে যায়। প্রকৃত পক্ষে তাঁরাই আদর্শের ধারক ও বাহক। যেখানে অভিভাবক সুন্দর, শিক্ষক সুন্দর, সেখানে সবই সুন্দর।