দেবী দুর্গা হলেন অখণ্ড শক্তির অধিকারিণী। উনি পরমা প্রকৃতি। তাঁর কোন প্রাকৃতিক রূপ বা নেই। এই বিশ্ব প্রকৃতির মাঝেই তাঁর অনন্ত বহিঃপ্রকাশ। দেবী স্বয়ং ব্রহ্মস্বরূপিনী। তাই এই ব্রহ্মান্ড পরিচালনায় নিজেকে নবরূপে বিভক্ত করেছেন। আজ নবরাত্রির তৃতীয় দিন। দেবী শৈলপুত্রী ও ব্রহ্মচারিণীর পর আজ দেবী চন্দ্রঘন্টার উপাসনায় এই মর্তবাসী নিজেদের উৎসর্গ করেছেন।
দেবীর এই রূপ মূলত দেবী দুর্গার কথাই মনে করায়। দেবী দশভূজা। দশ প্রহরধারিণী। দেবী অতীব ভক্তবৎসলা। নিরন্তর আশীষ বর্ষণ করে চলেছেন। দেবীর কৃপায় তাঁর ভক্তবৃন্দ লাভ করে এক দৈব ক্ষমতা। এক বিরল দৈব জ্ঞানের প্রকাশ ঘটে তাঁদের অন্তরে, তাঁদের চেতনায়। শিবের ন্যায় দেবী চন্দ্রকে আপন শিরে স্থান দিয়েছেন বলেই দেবীর নাম চন্দ্রঘন্টা। দেবী অশুভ শক্তিকে নাশ করবার অভিপ্রায়ে বারংবার অবতীর্ণ হয়েছেন সমর ভূমিতে। কথিত আছে দেবীর শঙ্খ নিনাদে এবং ঘন্টার ধ্বনিতে অসুরকুল যমালায়ে গমন করে। দেবীর তৃতীয় নেত্র থেকে যে অগ্নিতেজ নির্গত হয়, তাতে এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের সকল অশুভ শক্তি বিনষ্ট হয়ে থাকে। এমন অনুমান করা হয় যে যদি কেউ কোন মুহূর্তে দৈবঘ্রাণ এবং দৈবশক্তি, একত্রে প্রাপ্ত হয়ে থাকেন, তবে দেবীর এই রূপের অশেষ কৃপা তিনি প্রাপ্ত করেছেন!
আজ দেবী এই রূপে স্বর্ণ সিংহাসনে বিরাজিতা। ভক্তের আকুল প্রার্থনায় তিনি সাড়া দিতে ব্যাকুল আজ! বসুন্ধরার মাঝে যে ত্রাসের আজ জন্ম হয়েছে, তাঁর কৃপায় মুছে যাবে চিরতরে।ধুপধুনো, শঙ্খ ও কাসর ঘন্টার মাঝে হচ্ছে তাঁর আরতি। কল্যাণীর এই শুভ আগমনে এই গগন, এই ধরিত্রী আনন্দে মুখরিত!!