নূর তের কি, চোদ্দ বছরের এক কিশোর। পরিবারে তাঁর বাবা ও মা। কোন ভাই বোন নেই। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান নূর ক্লাস সেভেনে পড়া অবস্থায় হঠাৎ বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পড়াশোনা ছেড়ে পরিবারে হাল ধরতে হয়। সে প্রথমে একটি রুটির দোকানে কাজ নেয়। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই মালিক তাঁর সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে। সে কিছু না বলে কাজ করতে থাকে। মাস শেষে মালিকের থেকে তার বেতন নিতে যাবে, মালিক তাকে বেতন কম দিতে চায় এমনকি এক সময় তাকে কথায় কথায় মারতে চায়। একদিন সে ঐ রুটির দোকান থেকে বের হয়ে যায়।
এরপর সে কাপড়ের দোকান এ চাকরি নেয় । আগের চাকরি চেয়ে এখানে বেতন একটু বেশি হলেও তার এখানকার মালিক ও বদমেজাজি।
এদিকে তার বাবার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে।ডাক্তার দেখালে কিছু পরীক্ষা করার পর, এক পর্যায়ে তার বাবার একটা কিডনি সমস্যা দেখা দেয়। ডাক্তার তাকে তার বাবাকে আরো কিছু প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করার পর বলে তোমার বাবার একটা কিডনি বিকল হয়ে গেছে। আরেকটির অবস্থা বেশি ভালো না।
একদিন রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে নূর পাশের ঘর থেকে মা ডাকছে শুনে যেতেই তার মায়ের আত্মচিৎকারে সেই রাত ভারী হয়ে উঠে।
হাসপাতালে নিতে না নিতেই তার বাবা তাকে রেখে চিরদিনের জন্য চলে যায়।
মা’কে নিয়ে শহরে নতুন ভাবে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নূর চলে আসে। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই মা ও তাকে রেখে চিরদিনের জন্য চলে যায়। নূর একা হয়ে যায়।
মনের ভিতরে শক্তি সঞ্চয় করে করে একটা দোকানে চাকরি নেয়। এবারের মালিক তার খুব ভালো ছিল। অল্প সময়ে সে মালিকের বিশ্বস্ত হয়ে ওঠে।
মালিকের কোন ছেলে মেয়ে না থাকার কারণে তার মালিক ছেলের মতোই আদর যত্ন করে তাকে তার বাসায় ঠিকানা করে দেয়। একদিন মালিক খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে নূরকে সে তার ব্যবসা বাণিজ্য বুঝিয়ে দেয়। একদিন নূরের মালিক ও চলে যায় সেই না ফেরার দেশে। সে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে তার কাজকর্মে মনোযোগ দেয়। একদিন সে দেশ সেরা ব্যবসায়ী হয়ে ওঠে।
সে তার জীবনের গল্প সবাইকে একদিন বলে, আর বলে যে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে জীবনের গল্পে লড়াই করতে হবে।