মেহেফিল -এ- শায়র আবদুল লতিফ জনি (নির্বাচিত কবিতা)
পূণ্যভূমি
শাহজালালের পূণ্যে ধন্য- সিলেট, সুনামগঞ্জ;-
দেখতে বিভোর- মৌলভীবাজার, ছাতক, হবিগঞ্জ।।
হাওড়-বাওড় নদী-নালায় উড়ছে নৌকার পাল;-
সুরমা, মনু, সোনাই, ধলাই, কুশিয়ারার- খাল।।
শাহপরানের হৃদয় ভরা হাজার কবুতর;-
উড়ছে সদায় হাটে-মাঠে পাথর, বালুর পর।।
মাটির নীচে তেলের আধার, টিলায় সবুজ বন;-
চা-বাগানের মালীর গানে উদাস করে মন।।
উষ্ণ পানির খাবার খোঁজে আসে শীতের পাখি;-
গাছের ডালে বকের ছানায় করছে ডাকাডাকি।।
ফসলের মাঠ, ধানের ক্ষেতে পাখির কলতান;-
শিকারীদের নিষ্ঠুরতায় ঝরছে হাজার প্রাণ।।
ছাতকে আর হয়না কভু কমলা লেবুর চাষ;-
লাউয়াছড়ায় বিলীন হলো শাল, গজারী, বাঁশ।।
কমলগঞ্জে নেই কমলা, জকিগঞ্জে জোক;-
বেতের কাঁটায় কাটবে শরীর যতই শক্ত হোক।।
তামাবিলে নাই যে তামা, হরিপুরের তেল;-
জ্বালিয়ে দিয়ে ধ্বংস করলো, ষড়যন্ত্রের খেল।।
বড়লেখার নাই যে লেখা, শুধুই একটি নাম;-
মাধবকুন্ডে মাধবিনীর রূপের অনেক দাম।।
জলপ্রপাতের শীতল জলে সবাই সাঁতার কাটে;-
মাঝে মধ্যে আনাড়ীদের হঠাৎ মাথা ফাটে।।
পাথর কুড়ায়, বালি কুড়ায়, কুড়ায় চা-এর পাতা;-
বছর শেষে শ্রমের দামের থাকে শুন্য খাতা।।
কেউবা চালায় খাবার হোটেল বিলাত শহরে;-
দেশের মায়ায় কেঁদে ভাসায় প্রতি প্রহরে।।
নানান জনে নানা কর্মে, সবাই ব্যস্ত থাকে;-
সুযোগ পেলেই সবাই সবার সকল খবর রাখে।।
পাউন্ড পাঠায়, ডলার পাঠায়, বিলায় অনেক টাকা;-
নিজের গড়া বিলাস-বাড়ি থাকে শুধুই ফাঁকা।।
কেউবা আসে নিজের গ্রামে, থাকতে কয়টা মাস;-
কেউবা সারে বিয়ের কর্ম, কারো সর্বনাশ।।