• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক উপন্যাসে সপ্তর্ষি মণ্ডল (পর্ব – ৫)

অজ্ঞাত

১৮।।
হতাশ আর নৈরাশ্য র সাথে সংসার পাতা এক অসম্ভভ কাজ হয়ে উঠছিল তার জন্য । একা ডিভিশনে ফাঁকা বসে বসে তার মনে পড়ছিল বন্ধু সমরেসের কথাগুলো আজ ভীষন রকম । সত্যি তো ! নিউ ইন্ডিয়ার চাকরি করে সে কি পেল , উল্টে সব হারিয়েছে । আজ মায়ের ওপর নেমে আসা এই অত্যাচার ব্যথিত করে সন্দীপনের মন , কিন্তু সে যে অসহায় । কি করে নিস্তার পাবে কিছুই জানা নেই তার । অফিসে বসেও মনে মনে ই এক করুনতার সুর বেজে চলেছে তার অন্তরে ,
” হে প্রভু , তোমার চরণে আজ প্রনাম
অনেক পাপে পূর্ণ পাপি এ মন আমার ,
অনুতপ্ত ভীষন আজ ।।
শুনেছি তোমার আলয় ভুলোকের কণায় কণায়
তাই তো এই ব্যথিত হৃদয় আজ
নতজানু , চোখের জলে গাইতে চায় তোমার জয়গান ।।
রক্ষা কর আমায় , দাও একটু শান্তির আশ্রয়
নিজের লক্ষ থেকে বিচ্ছুরিত যে মন
তাকে তোমার করুণায় দাও একটু অভয় ।।
হে প্রভু , তুমি তো সর্বজ্ঞানী ,
অজ্ঞান নয় কোন কিছুই পৃথিবীতে জানি
তোমার আদেশ ছাড়া যেখানে নড়ে না
একটি ধুলো কনা ,
সেখানে এত ভীত কেন আমি ?
কেন এত লোভ বেঁধেছে এই মনে ,
আমায় সদবুদ্ধি দাও , জয় দাও
মুক্তি দাও সমস্ত বদ হতে আজ ।।
তোমার শরনে আজ এসেছি ছুটে
একবার তো এই অভাগার দিকে ফিরে চাও ,
ভালবাসা দাও তার মনে
যাকে ভালবেসে আমি ভালবেসেছি জীবনে ,
যার জন্য কাঁদে পাগল মন বারবার
তাকে জয় দাও , প্রেম দাও , হে পয়গম্বর ।।
হে প্রভু , তোমার চরণে আজ কোটি কোটি প্রনাম ” ।।
এই গভীর চিন্তার স্রোত এসে বাঁধা পেলো মোবাইলের রিংটোনে । বেশ কিছুক্ষণ ব্যাপারটা বুঝে উঠতে না পারলেও , কিছুক্ষনের মধ্যেই চেতনা ফিরলো তার । মোবাইল বের করে দেখে মায়ের ফোন । ঈশ্বরের নাম নিয়ে পুনরায় সে কল দিলো ওই নম্বরে ।
কপাল যার অশান্ত , তার কি কোনদিন শান্তি নামতে পারে জীবনে । হাজার হাজার শুকনো ফুলে সে সুবাস থাকে না বলে , তাদের দিয়ে মালা হয় না গাঁথা । তবু তো আমরা চেষ্টা করে চলি ভালোর খোঁজে , পচাদের মধ্যেই ।
” জীবন , তোর ওপর কোন রাগ নেই আমার
শুধু অবাক হয়ে দেখছি এপার ওপার ,
তোর সরল কথায় অবাক হই আবার ,
সে যে অবাক হই বারবার ।
বাঁচার কথা মনে আসে না একবার
দুঃখ গুলো বয়ে যেতে পারি না যে আর ।।
হাসলে পরে থেমে আসে স্বাস্
মনে হয় এ যেন কোন কারাবাস ,
কোথাও কখনও হেসে দিলে একবার
মনে হয় জীবনে এ হাসি এক
গভীর দুঃখের বহির্প্রকাশ ।
আজ যখন ভেসে গেছে দুচোখ আমার ,
ফোঁটা ফোঁটা বর্ষেছে দু গাল বেয়ে ।
কাল কে জানে এরই জন্যে
খোলা চোখে রাত্রি থাকবে চেয়ে ।।
কে জানে কখন , কোথায় হারিয়ে যাবে
এক ফোঁটা লুকিয়ে রাখা জলে সেদিন
হয়তো আমায় আবার খুঁজে নেবে
অতীতের সেই দিন ।
জীবন , তোর ওপর কোন রাগ নেই আমার
শুধু অবাক হয়ে দেখছি এপার ওপার ,
শুধুই অবাক হয়ে দেখছি এপার ওপার ” ।
১৯।।
এতবার চেষ্টার পরে মা ফোন তুললো তার । আবহাওয়া শুনে মনে হচ্ছে একদম নীরব । নীরবতাও কখনো কখনো ঝড়ের ইঙ্গিত বয়ে নিয়ে আসে ; আর তাই সন্দীপনের এত ভয় ,
—– হ্যালো । তুমি কোথায় আছো মা ?
মা মিষ্টি করে হেসে উত্তর দেয় ,
—– বাড়িতে । তোর মাসি স্নান করতে গেছে ….
মায়ের কথা ছেলের মন বুঝবে না , এও তবে পৃথিবীর এক আশ্চর্য । তার মেকি হাসির গন্ধ বিচলিত করছে সন্দীপনকে বারবার আর তাই সে একই প্রশ্ন ছুড়ে দিলো মায়ের দিকে আবার ,
—- তুমি কোথায় আছো মা এখন ?
মা ও বেশ বিরক্তি প্রকাশ করে উত্তর দিলো ,
—- উফ ! বললাম তো বাড়িতে ।
বেশ গম্ভীর হয়ে উত্তর গেলো এবার ,
—– মা ! বলবে কী । কি হয়েছে তোমার ? তুমি বাড়িতে নেই আমি বুঝতে পারছি …
ছেলের মুখের কথা শেষ হতে না হতেই মা এর গলার স্বর নেমে এলো হঠাৎ । বেশ কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো ,
—— এ আমাকে কোথায় ফাঁসিয়ে দিলি বাবু । কোথায় রেখে গেলি আমায় ? সকালে উঠে জানলা গুলো খুলে দিয়েছিলাম শুধু , ব্যাস , শুরু হয়ে গেল । পাড়ার লোকেদের ধরে ধরে চিৎকার করে যা নয় তাই বলে চললো । আমি এই বাড়ি দখল করতে এসেছি । আমি ওর ক্ষতি করে দেবো । আমায় বাঁচা বাবু ।
সন্দীপন চুপচাপ সব শুনে চলেছিল । তার কাছে আজ কোন উত্তর নেই দেওয়ার মতো । তবু শান্ত স্বরে সে জিজ্ঞাসা করলো ,
—– কিছু খেয়েছো , মা ?
ওপাশ থেকে উত্তর ভেসে এলো বেশ ঘৃণা ভরা স্বরে ,
—— ওই বাড়ির অন্ন জল গ্রহণ করতে আমার ঘেন্যা হয় ।
—— কিছু না খেলে শরীর খারাপ করবে । বাড়ি যাও , কিছু খেয়ে নাও ।
সন্দীপন বললো ।
মা এর দিক থেকে ভেসে এলো এবার বেশ রুঢ় কণ্ঠে একটা অপ্রত্যাশিত উত্তর ,
—– আমার খাওয়ার চিন্তা করতে হবে না । পথে বসিয়ে দিয়েছো যখন , তখন এসব খেয়াল দেখানো বন্ধ করো ।
এই টুকু বলে মা ফোন কেটে দিলো । সন্দীপন চুপচাপ দাঁড়িয়ে রয়ে গেল শুধু । মনের গভীরে বেজে উঠছিল আজ বারবার ,
” আঁধারের গায়ে গায়ে পরশ তব
সারা রাত ফোটাক তারা নব নব।
আঁধারের গায়ে গায়ে পরশ তব
সারা রাত ফোটাক তারা নব নব।
নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো
যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো–
নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো
যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো–
ব্যথা মোর উঠবে জ্বলে ঊর্ধ্ব পানে
ব্যথা মোর উঠবে জ্বলে ঊর্ধ্ব পানে
আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে।
এ জীবন পুণ্য করো
এ জীবন পুণ্য করো ” …
২০।।
কত রাত কাটিয়েছে বিনিদ্র দুটো চোখ তার । কোন কিছুতেই মন নেই । কাজের দফতরের মানুষেরাও এই নিয়ে অনেক কথা বলছে । পাওরে জি একদিন সোলাঙ্কি জি-র সাথে এই নিয়েই কথা বলছিল । সন্দীপন তখনও অফিস আসেনি ।
—- উওহ একাউন্টেন্ট সাহাব কা খবর কুছ পতা হ্যায় , সোলাঙ্কি জি । বরে উদাস রহতে হ্যায় ।
প্রমোদ পাওরে আগ্রহ সহকারে প্রশ্ন করলো ।
—– আপন কো নেহি পতা । নয়া জগহ হ্যায় , সায়েদ ইসলিয়ে …
সোলাঙ্কি উত্তর দিলো ।
—– এক বার পতা করনা চাহিয়ে না ।
পাওরে বেশ ধীর স্বরে প্রশ্ন করলো তাকে ।
সোলাঙ্কি আড় চোখে তাকালো এবার , তারপর উত্তর দিলো ,
—– কেয়া জরুরত হ্যায় । আদত পর জাতা হ্যায় সবকো ।
এরই মাঝে অনিল এসে উপস্থিত । ঢুকতে ঢুকতেই সোলাঙ্কির সা এ সা মিলিয়ে উত্তর দিলো সে ,
—- সহি কহা । আদত হো জাতা হ্যায় ।
ঠিক এমনই সময় সন্দীপন এসে প্রবেশ করলো তার নিজস্ব কামড়ার আড়ালে । সকলকে দেখেও সে আজ কোন কথাই বললো না । এসি অন করে চুপ করে বসে রইল সে , সঙ্গি বানালো সেই ফেসবুকের ডিজিটাল চরিত্রদের । ফেসবুক জুড়ে আজ বেশ জবুথবু অবস্থা । একমাত্র ঈশ্বর ই জানেন এই নীরবতার কারন , হয়তো এও সন্দীপনের মনের প্রতিবিম্ব মাত্র । তবু কিছু শব্দ মনের বাঁধন ছিন্ন করে প্রতিধ্বনিত হয় মনের গভীরে । আমরা তাদেরই ভালোবাসা বলি ।
—– কি গো দেখা নেই , কথা নেই কেন এতদিন ?
ম্যাসেঞ্জারে ফুটে উঠলো একটা লেখা । মুখ তুলে , চোখ খুলে সে দেখে ম্যাসেজ করেছে সত্যবতী ।
—– ব্যস্ত ছিলাম ।
কি বলবে স্থির করতে না পেরে এই উত্তর দিলো সে ।
সত্যবতী সময় নষ্ট না করে সাথে সাথেই লিখে পাঠালো তাকে ,
—– বাবা ! ভীষণ ব্যস্ত মানুষ যে । তা একটুও সময় হয় নি তাও ।
সন্দীপন আজ কোন উত্তর দেওয়ার অবস্থায় নেই । তাই বাধ্য হয়েই সে লিখে পাঠালো বিরক্তি দেখিয়ে এবার ,
—– ভালো লাগছে না । ভালো লাগছে না আমার । মামার বাড়িতে , মা আর মাসির মধ্যে প্রতিদিন ঝগড়া লেগেই আছে । আমার মূর্খতার জন্য মা অভিশাপ কুড়াচ্ছে প্রতিদিন ।
—– অভিশাপ !! কে অভিশাপ দিলো আবার ।
বেশ অবাক হয়েই সত্যবতী উত্তর দিলো ।
সন্দীপ বেশ রাগি মুখ নিয়ে কিছু লিখতে গিয়েও লিখলো না । ওদিকে অপেক্ষা করে করে ক্লান্ত হয়ে সত্যবতী লিখে পাঠালো অফলাইন হওয়ার আগে শেষবার ,
—– যাও , বিশ্রাম নাও । সব ঠিক হয়ে যাবে । আর শোনো , সবসময় মনে রাখবে , শকুনের অভিশাপে কোনদিন গরু মরে না । তুমি যাও এবার । আমিও আশি । বাই ।
সত্যের কথাগুলো সন্দীপনকে কেমন যেন ছুঁয়ে গেল । একটা অন্য রকম শান্তি সে পেয়েছে খুঁজে আজ । একদম অন্য রকম ….
২১।।
উদাসীনতা আর মানসিক অস্থিরতাকে সঙ্গী করে কাটতে লাগলো সন্দীপনের জীবন । খুব যখন অসহায় মনে হয় নিজেকে তখন মহাকালের চরণে ঠাঁই নিতে চলে যায় । ভীষন শান্তি পায় জীবন চঞ্চল নদী বুকে । অসহায় যে মনে হয় না তা নয় , তবে পুরাতন স্মৃতিরা আজও আছে , তাদের সাথেই কেটে যায় সময় ।
সময়টা ২০১৫ সাল । নিউ ইন্ডিয়ার নাগরিক হওয়ার সময় প্রথম প্রেমের উপলব্ধি হয় তার । ঝাঁসির মঞ্জলি মনজিল ছিল তার । কত দেখা , কত কথা , এক নিমেষে ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে লিখে রাখা কিছু চিঠি আজ খুঁজে পেয়েছিল হঠাৎ করে । বিকেলের শান্ত আঁচলের ছাওয়ায় চলন্ত বর্ধমান থেকে আসানসোলের ট্রেনে বসে বসে সে লিখেছিল কিছু চিঠি । আজকে সে সব উড়িয়ে দিলো সে ফেস বুকে ; নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেতে ; নতুন সে সুন্দরীর ঠিকানায় ।
উজ্জয়িনের ছটা মাস এভাবেই কেটে গেল , এবার ট্রেনিংয়ের ডাক আসতেই ভোপাল ফেরত যাওয়ার পালা ।
” ১।।
Dear love ,
আজ এক বছর পর এই জন্মাষ্টমীর সন্ধ্যায় দাঁড়িয়ে তোকে একটা চিঠি লিখছি । ভাবতে পারিস , আজ হটাৎ কেন ! এত দিন পর তোকে মনে পরল ! উত্তরে আগেই জানিয়ে রাখি , মনে তোকে রোজ পরে , প্রতি মুহূর্তে তোর জন্য বুকটা হাহাকার করে । মানতেই পারি না যে তুই আজ আমার সঙ্গে নেই , আর তাই বারবার খুঁজি তোকে , অবশেষে ভুল ভাঙে ।
আজ জন্মাষ্টমী , কৃষ্ণের জন্মদিন । কৃষ্ণ মানেই ভালোবাসার প্রতীক আর তাই আজ এই চিঠিটা লিখতে বসলাম । প্রথমেই বলি ধন্যবাদ তোকে , আজ যে এত নির্ভেজাল অভিনয় করে বেঁচে আছি , এ তোর জন্যই । তুই সেদিন শিখিয়েছিলিস যে তোকে ছাড়াও বর্তমানে বেঁচে থাকা যায় , হাসা যায় । দ্বিতীয়টা তবে পারি নি । ওটা অভিনয় করে যাই সবার সামনে । আজ এক বছর হয়ে গেল তোর সাথে কথা হয়েছিল । আর এই একটি বছরে অনেক পরিবর্তন এসে গেছে । জানিস , তোকে তো বলাই হয়নি , আর বলবো বা কি করে , আগের চাকরিটা ছেড়ে দেবো , একটা আরো ভালো চাকরি পেয়েছি । সেই ছাড়া নিয়ে বেশ চাপে রয়েছি । কারণটা আর নাই বা শুনলি ।।
এদিকে বাবার শরীর টাও বেশ খারাপের দিকে, দিন কে দিন । এখন বেশ কষ্ট পাচ্ছে । চলতে গিয়ে প্রায় পড়ে যাচ্ছে , বাড়িতে মা একলা আর এই বর্ধমান শহরে আমি ভীষণ একা , খুব চাপে থাকি । মাঝে মাঝে রাতে খাওয়া দাওয়া টাও ঠিক মতো করা হয় না । এখন বন্ধু বলতে এই ফেস বুক আর আমি , কথা হয় , বা বলতে পারিস কথা বলি এরই সাথে মাঝে মাঝে । খুব একটা অনলাইন থাকাও হয় না , আজকাল ।
একটা জিনিস বলবো , রাগ করিস না যেন । করলে আই এম সরি । মাঝে মধ্যে তোর একাউন্ট টা লুকিয়ে চেক করি । কি করবো বল , তোর জন্য খুব মন কেমন করে রে । ভালো লাগে না আর । মাঝে মাঝে কেঁদে মনটা হালকা করে নি । কেউ তো আর এসব শুনবে না , আর বললেও ঠাট্টা করবে আমাকে নিয়ে । ওরা রোজ প্রেম বদল করতে পারে , তবে আমি তো পারি না । তোকে ছাড়া ভাবতেই পারি না , কাউকে । আজ ও তুই আছিস জীবনে আমার ।
লেখাটা একটা বদ অভ্যেস হয়ে দাঁড়াচ্ছে । একটা নেশার মতো , তোর দুঃখ গুলো এরই মধ্যে পুষে রাখছি । আসলে তোর মতো পারফেক্ট কাউকে পাইনি আর পাবোও না । সবাই এখন ভেজাল মেশানো । শুধু লেন দেন এর সম্পর্ক । বাড়িতে প্রায় চাপ দেয় বিয়ে করার জন্য । না বলে দিয়েছি । কথা দিয়ে তোকে কথার খেলাপ করি কি করে ?
তোর খবর কি রে ? কেমন আছিস ? মা কেমন আছে ? আর বাবা ? চাকরির চেষ্টা করছিস না ছেড়ে দিয়েছিস । লেগে থাক , আমি চাই তুই অনেক বড় পোস্টে চাকরি কর । শেষ বার বলেছিলিস , তোর নাকি বিয়ে হয়ে গেছে । জানি , বিশ্বাস করি যে ওটা মিথ্যে ছিল । তুই আমাকে এত সহজে ভুলে যাবি , এটা হতে পারে না । কারণ তুই তো ওদের মতো নোস । তোর চাহিদাও সিমিত । কিন্তু এই মিথ্যের কারণটা কি তা আজও বুঝলাম না রে ।
খুব ভালো মেয়ে তুই । দেখিস একটা সুন্দর বর পাবি , যে তোকে আমার থেকেও বেশি ভালো বাসবে , খুব ভালো বাসবে ।
আমি দু দিনের যোগী , ভালোবাসা কি তাই বুঝি না । তাই তো বড্ডো খেয়াল রেখে ফেলেছিলাম ।
আমার কষ্ট নিয়ে একদম ভাবিস না যেন ।দুদিনের জীবন , দেখিস ঠিক কাটিয়ে দেবো । নিজের খেয়াল রাখিস , আর বাবা মা র যত্ন নিস । চাকরি পেলে জানাস কিন্তু । অপেক্ষায় থাকলাম । আর নিজের বিয়েতে নিমন্ত্রণটা করতে ভুলিস না যেন ।
আজ চলি রে । রাত অনেক হলো , কাল আবার অফিস আছে ।
ইতি
তোর দুষ্টু প্রেমিক
২৫/০৮/২০১৬
২।।
Dear love ,
শুভ বিকাল । আজ শুক্রবার আর শুক্রবার মানেই সপ্তাহের শেষ । এখন দুদিন ছুটি । তাই এই মুহূর্তে ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার পালা । ভাগ্য আর ভগবান মানি না যদিও , সে তো তুমি জানোই , তবু ভাগ্যের কি ফের দেখো , প্রতি শুক্রবার এই চম্বল এক্সপ্রেস ধরে বাড়ি ফিরতে হয় । এই ট্রেনটি আবার গোয়ালিয়র অবধি যায় , মানে তোমার বাড়ির খুব কাছে । মনে হচ্ছে , তুমি যেন আমার জীবনে এমনি জড়িয়ে গেছো , যে যত্ন সহকারে আজও বাড়ি পৌঁছানোর পথে , এক দিশারী হয়ে ফুটে উঠছো , বার বার । ইচ্ছে হয় মাঝে মাঝে ছুটে চলে যাই ওই গাড়িতেই তোমার ঠিকানায় । অফিস চুলোয় যাক ।
ট্রেনে খুব ভিড় নেই , আরামে বসে বসে যাচ্ছি । নাহলে কষ্ট করে যাওয়াটা আমার পোশায় না , একটু ভারী শরীর তো , তাই আর কি । তবে আমি বসে নেই চুপ করে , তোমার কথাই ভাবছিলাম ।
এই সন্ধ্যা সাতটা মানেই এক অদ্ভুত নস্টালজিক ফিলিংস । সেই দিন গুলোর মতো যদি আবার ফোনটা বেজে উঠতো , সেই আসাতেই বারবার ফোনটা দেখি । আমার তো আর অধিকার নেই তোমাকে ফোন করবো । তুমি কি ভাববে তাতে কে জানে ? আর তাছাড়া আমি তো জানিও না যে তুমি কখন কখন ফ্রি আছো । তাই অপেক্ষা টা তোমার দিকেই ছেড়ে দিলাম ।
আজ শরীরটাও বেশ খারাপ । কাল রাত থেকে পেটে হালকা একটা ব্যথা হচ্ছে । জানিনা , এ ব্যথা কিসের । তবে , আসা করছি কমে যাবে ।
সময়টাও খুব একটা ভালো চলছে না । এই কদিনের মধ্যে দু দুবার একসিডেন্ট হয়ে গেল । একবার তো বেশ ভালোই আঘাত পেয়েছিলাম । হাতের কনুই টা বেশ কেটে গেছিলো । তবে এখন সুস্থ আছি ।
এদিকে বাড়িতে বাবাকে নিয়ে একটা চিন্তা রয়েই যাচ্ছে । সারা গায়ে আঘাত নিয়ে কি যে হবে কে জানে । এখন তো ঠিক করে বসে থাকতেও পারছে না , বয়স টাও তো কম হলো না । জানো, এখন মনে হয় , তোমার সেদিনের কথাটাই ফলে যাচ্ছে । আমি সত্যি বড় একা হয়ে যাচ্ছি ।ব্রাহ্মণের অভিশাপ , না ফলে যায় কোথায় বলো । এতেও খারাপ লাগে না , শুধু খারাপ লাগে যখন আমার বন্ধু তোমায় খারাপ বলে , ও বলে নাকি তুমি এরামি , এই পুরো গল্পটা নাকি তোমার লেখা , আর এটা আগে থেকে ঠিক করাই ছিল । আমি মানি না, বিশ্বাস করি না , ওর কথা । এই নিয়ে ওর সাথে বেশ কবার ঝগড়াও হয়ে গেছে আমার । কারণ অন্য কেউ হলেও হতো , তুমি অন্তত এরাম করতেই পার না । নিশ্চই কোনো দায় ছিল , তাই তুমি দূরে সরে গেছো । তবে , একবার আমাকে বলে দেখলেই পারতে ।
যাই হোক তোমার সে স্কুল এখনো আছে ,মানে পড়াতে যাও না ছেড়ে দিয়েছ ? ছেড়ে দিলে ভালোই করবে , সময়টা নিজের পড়ায় দিতে পারবে । মন দিয়ে , পড়া করে যাও । চাকরিটা কিন্তু চাই ।
আর কি বলবো বল ? বাবা আর মা এর খেয়াল রেখো , নিজের প্রতি খেয়াল রেখো । আর আমাকে নিয়ে যেন একদম ভেবো না । সামনে তোমার বিশাল ভবিষ্যৎ , সেই নিয়ে একটু ভাবনাচিন্তা করো , আর আমি তো সবসময় রইলাম ই তোমার পাশে সব সময় ।
আসানসোল ঢুকছে ট্রেন , নামতে হবে । আজ তাই আসি কেমন , পরে আবার কথা হবে ।
ইতি
তোর দুষ্টু প্রেমিক
২৬/০৮/২০১৬
৩।।
Dear Love ,
রাত কেটে সকাল হতে চললো । সূর্যি মামা আকাশে উকি মারছে । সকাল সকাল ওঠার পুরোনো অভ্যেস টা এখনো পুরোপুরি যায় নি । কিন্তু ফারাক তো অবশ্যই দেখছি , এই একটি বছরে । এখন সকাল টা ভালো হোক এ আশীর্বাদ কেউ আর দেয় না । তুমি দিতে , সেটাই বারবার মনে পরে কষ্ট দেয় । ভাবি মাঝে মাঝে তোমায় একটা মেসেজ করি , গুড মর্নিং , আবার ভাবি তোমার কেমন লাগবে , কি ভাববে । এসব , আটঘাট বেঁধে আর পাঠাই না । আচ্ছা , তুমি তো পাঠাতে পারো , নাকি আমায় পুরোপুরি ভুলেই গেলে । আমার আসা আর বিশ্বাস টুকু এভাবে ভেঙে যেতে দিও না , আর জানি পারবেও না ।
আজ তো শনিবার । আমার অফিস ছুটি । বাড়িতে বসে আছি আজ চুপ করে । পড়ানোটাও আজ নেই , সব মিলিয়ে একটা ছুটির দিন , তবে আমার ছুটি নেই । নিজের কাজ করার জন্য এই একটা দিন ই তো পাই , সেটাও হাত ছাড়া করে দিলে চলবো কি করে ।
তোমার আজ কি পরিকল্পনা ? বন্ধুদের সাথে দেখা করে এনজয় নাকি রোজের জীবন । আসলে কি জানতো জীবনটা আমরা যা ভাবি , ঠিক তা নয় । এটা সত্যি খুব কষ্টের । কত যে সমস্যা নিয়ে বেঁচে থাকতে হয় , তা বুঝি না ।
আজ বাড়ি এসে বুঝলাম , বাবার অবস্থা খুব খারাপ । ভাবছি , হসপিটালে ভর্তি করি একবার । মা একলা পেরে উঠছে না । আবার এটাও ঠিক , বাবাকে হসপিটালে ভর্তি করলে সে দৌড় ঝাঁপ কে করবে ? মা অতো বোঝেও না , আর পারবেও না । তুমি সাথে থাকলে অনেক সুবিধা হতো , অনেক ভরসা পেতাম । যাই হোক , যা ভালো বুঝেছ , তাই করেছ ।
তোমার খবর কি বল ? মা কি এখনো হাসপাতালে ভর্তি ? তোমার চোখে যে ফেকো করালে , তার পর আর অন্য কোনো সমস্যা নেই তো ? একটা কথা সত্যি করে বলবে , তোমার কি সত্যি বিয়ে হয়ে গেছে ? না হলে , করে নাও আর হয়ে গেলে বলবো যে পার্টি কবে দিচ্ছো ? এই সুযোগে তোমার বরের সাথেও দেখা হয়ে যাবে ।
সামনে তো পুজো আসছে । ও , তোমাদের ওখানে তো বোধহয় নবরাত্রি হয় । উপোস করো নাকি , আমি তো ওসব কিছু মানি না । আমাদের এখানে অফিস সব ছুটি । দেখা করার মন হলে আওয়াজ দিও । চলে আসব । আর সেটা যে আমি করতে পারি , তা তুমি খুব ভালো বোঝো । মনে আছে স্টেট ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দেখা করতে পালিয়ে গেছিলাম । এর জন্য অনেকে আমাকে বোকা বলে বাট আই ডোন্ট মাইন্ড ।
ঠিক আছে , অনেক কথা বলে ফেললাম । আবার পরে লিখবো , আজ চলি । ভালো থেকো , সবাইকে ভালো রেখো আর কি বলবো বলো ।
ইতি
তোর দুষ্টু প্রেমিক
২৭/০৮/২০১৬
৪।।
Dear love
সুপ্রভাত । আজ রবিবার । আর রবিবার মানে তো জানোই । সবচেয়ে প্রিয় দিন । তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথেই এই প্রিয় দিনটার গুরুত্ব টুকুও বেশ হ্রাস পাচ্ছে । আগে যখন ছোট ছিলাম এই রবিবার সকালে দশটা বাজলেই বেরিয়ে যেতাম , খেলতে আর ঠিক বারোটায় বাড়ি চলে আসতাম , কারণ শক্তিমান দেখবো । সেই দিন গুলোই বেশ ভালো ছিল । আজ কাল আর বন্ধুও নেই আর খেলাও নেই । সবাই আজ সেটল । কেবল আমি ছাড়া ।
বাড়ির কাজ করতে হয় সকাল থেকে । বাবা তো আর পারে না , তাই সকাল বেলায় বাজার করে দিতে হয় ,আর এর পর ও অনেক কাজ থাকে ,
সারা সপ্তাহের পড়ে থাকা কাজ । মা বুঝতেই পারছো ততটা বোঝে না , পারে না । সেগুলো আমাকেই করে দিতে হয় । এই দেখতে দেখতে সকাল পার । তারপর দুপুর থেকে স্টুডেন্ট আসে , তাদের দেখিয়ে দিতে দিতেই দিন পার ।আজ অবশ্য সব ছুটি । কেউ আসবে না । তাই বেশ আরাম । অবশ্য আমার ওই জীবনটাই ভালো লাগে , ব্যস্ত রাখা যায় নিজেকে ।
কাল সকাল হলেই আবার দৌড় । অফিস যেতে হবে যে । এ কোনো জীবন হলো , বলো । এই জীবন তো চাইনি । একলা একলা পচে মরছি , এটাও স্বপ্নেও ভাবতে পারি না । মাঝে মধ্যে ছুটির দিনে সুযোগ পেলে খাতা পেন নিয়ে বসে যাই । লেখালেখির বদ অভ্যেস টা আছে না ! ওটুকুই তো বেঁচে থাকার স্বম্বল । নানা জিনিস কল্পনা করি আর লিখি । সবচেয়ে বেশি কল্পনায় ভেসে ওঠে , তোর মুখটা আর তাই বেশির ভাগ লেখার বিষয় বস্তুও আমাদের ভালোবাসা ।
একটা ইচ্ছে আছে , লেখাগুলো ছাপানোর । লোকে আমার লেখা পড়বে , আরও বেশি পাঠক বা পাঠিকা এর মজা নেবে , এটুকুই আশা । তবে সব স্বপ্ন কি আর সত্যি হয় ? প্রকাশক আর পাচ্ছি কই ? চেষ্টা করে যাচ্ছি , কিন্তু কেউ ছাপতে রাজি নয় ।
তোমার খবর কি ? আজকের কি স্পেশাল প্ল্যান ? কিছু ভেবেছো নাকি ? আমার মতো বোরিং জীবন নিশ্চই তোমার নয় ? আচ্ছা আমি তো ফ্রি আছি , যদি খুব বোর লাগে আমাকে কল করে নিয় , আর না হলে একটা মিস কল দিও , আমি কল করে নেব । অনেক দিন কথা হয় নি । এক ঢিলে দুই পাখি ধরা যাবে । এই , এতে আবার রাগ করলে না তো ?
আজ চলি । রাগ করো না , সত্যি বলছি আজ অনেক কাজ । তোমার দিব্বি , কাল আবার লিখবই লিখবো , যদিও জীবনে কাল কি হবে কে জানে ? ভালো থেকো ।
ইতি
তোর দুষ্টু প্রেমিক
২৮/০৮/২০১৬
৫।।
Dear love
প্রথমেই বলি , আই এম সরি । আজ একটু দেরি হয়ে গেল । কি করবো বল , সোমবার মানেই ট্রেন ধরার তারা থাকে । আজ বাড়ি থেকে বেরোতে বেরোতে সাড়ে সাতটা বেজে গেল । তার পর বাইকে আসানসোল আসা । আজ আবার সব ট্রেন লেট । বেশ চাপে ছিলাম ,টাইমে অফিস ঢুকতে হবে যে । ভাগ্য ভালো , যে পাঞ্জাব মেল পেয়েছি । এখন এতেই চললাম ।
তুমি ভাবছো নিশ্চই , আমি আগের মতোই কোনো মিথ্যে কথা বলছি । কিন্তু বিশ্বাস করো , আমি একটুও মিথ্যে বলছি না , পুরো ষোলো আনা সত্যি কথা । আর মিথ্যে বলি না , আর তাই অনেকেই আমার ওপর খছে যাচ্ছে ।
যাই হোক , আজ তো এদিকে খুব গরম । তোমাদের ওখানেও কি তাই । উত্তর প্রদেশে তো আবার বন্যা হয়েছে , খবরে দেখলাম । তোমাদের ওখানে কি অবস্থা , সব ঠিক আছে তো ? সাবধানে থেকো , বন্যা হলে আবার খুব রোগ ছড়ায় ।
এই দেখো , খবর টা শুনে আবার চিন্তা করতে শুরু করে দিয়েছি । আসলে এটাই বোধহয় ভালোবাসা যে তুমি কাছে না থাকলেও , তোমাকে নিয়ে সবসময় এত ভাবি ,আর এই ভাবনাতেই আমি মরলাম ।
এ সপ্তাহে বাড়ি গিয়ে একটা জিনিস দেখে খুব নিশ্চিত হলাম । বাবার শরীর আগের তুলনায় অনেক টা ভাল , তবে পুরপুরি নয় । কেমন যেন একটা বাচ্চা বাচ্চা ভাব । কি আর করা যাবে , প্রকৃতির নিয়ম কেউ বদলাতে পারবে না । ডাক্তারের ওষুধ শুধু কিছু আরাম দিতে পারে । তাই না ?
তোমার প্রোফাইল পিকচার টা খুব সুন্দর । লাল শাড়িতে একেবারে মহারাণী লাগছে । ভয় হয় নজর না লেগে যায় ।
এই একটা ভালো খবর তো দেওয়াই হয় নি । আমার দুই ছাত্র lic র ado পোস্ট এ চাকরি পেয়েছে । দারুন খবর না । অনেক দিন ধরে লেগে ছিল , খুব খেটেছে । তুমিও খাটো , তুমিও পাবে । এবারে এস এস সী পরীক্ষা দিচ্ছো নাকি ? পরীক্ষা কবে ? প্রশ্ন তো খুব সোজা হচ্ছে শুনছি । এবারের টা হওয়া চাই কিন্তু । নাহলে আরো খারাপ লাগবে ।
আজ চলি সোনা , কেমন । নামতে হবে । বর্ধমান এসে গেল । নাহলে তোমাকে ছেড়ে যেতে কি আমার একটুও ইচ্ছে হয় বলো । তুমি বরং আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ । আমি তো আজও তোমারই অপেক্ষায় বসে । পারলে একদিন স পরিবারে বাড়ি চলে এস । মনের রাগটা দেখবে ধুয়ে জল হয়ে যাবে ।
আজ চলি গো । পরে আবার কথা হবে । ভালো থেকো আর যা বললাম , সেগুলো মনে রেখো ।
ইতি
তোর দুষ্টু প্রেমিক
২৯/০৮/২০১৬
৬।।
Dear Love
শুভ বিকাল । কি হলো সোনা , রাগ করে আছ । অনেকদিন কোনো চিঠি লিখি নি তাই । কি করবো বল , বাবা কে নিয়ে খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি । বাবা হাসপাতালে ভর্তি । ডাক্তার বলছে খুব সিরিয়াস অবস্থা । সোজা আই সি ইউ তে ঢুকিয়ে দিয়েছে । এখন আমাদের কাউকে চিনতেই পারছে না । ডাক্তারের ভাষায় , ব্রেইন এ ইনফেকশন হয়েছে । মারাত্মক অবস্থা । তাই সময় পাই নি । অফিস ছুটি নিয়ে বাড়িতে বসে আছি । শুধু হাসপাতাল আর বাড়ি । বাবার যে কি হবে তাই নিয়ে খুব চিন্তিত গো । তবে তাই বলে তোমার কথা যে ভাবিনি তা নয় । সবসময় ভাবতাম যে তুমি যদি আমার কাছে থাকতে , তবে একটা সাহায্যের হাত পেতাম । খুব একলা লাগছে নিজেকে । মা আর কত সামলাবে ।
তুমি তো এ বিষয়ে পোক্ত । তোমার মায়ের বেলায় কত দৌড় ঝাঁপ তো করেছ ।
ভালো কথা , তোমার মা এখন কেমন আছেন ? ভালো আছে তো ? উনারও তো ব্রেন প্রবলেম । কত মিল না আমাদের । শুধু দুরত্বটাই বড্ডো বেশি ।
এই দেখো না , তোমার বাবাও রেলে আমার বাবাও রেলে , তোমার পছন্দ এস এস সি , আর আমারও তাই । এখন এখানেও মিল এসে গেল । তাহলে আমরা কেন আলাদা ? চলো না , আমরাও এক হয়ে যাই ।
আচ্ছা এই ক দিনে তুমি আমাকে কখন মনে করতে ? কতবার করতে ? মনে পড়ত যদি , একটা ফোন করলেই পারতে । আমি এত ব্যস্ত ছিলাম , মন টাও খুব খারাপ । একটু মনটাও ভালো হতো ।
যাই হোক তোমার একটি উত্তরের আসায় রইলাম । প্রশ্নটা আগেই করে দিয়েছি তাই আর লিখলাম না । তোমার পরীক্ষা কবে ? মন দিয়ে পড়াটা চালিয়ে যাও আর কোনো সমস্যা হলে আমাকে বল । আমি তোমার সাথে সব সময় আছি । আজ আসি । খুব তারাতারি আবার লিখবো ।
LAST WORDS
এখন দুপুর দুটো ,
বাইরে কাঁচের জানালায় রোদ
তবে ভিতরটা বেশ অন্ধকার ,
নিজেকেই চিনতে কষ্ট হচ্ছে বেশ
পৃথিবীটা তো মনে থাকছে না কিছুতেই ।
কৃত্তিম কি সব যন্ত্রপাতি ,
কোনোটা গলা , আর কোনোটা নাক
আবার কোনোটা শরীর ভেদ করা
কি যেন মেপে যাচ্ছে প্রতিবার ।
খাবারে শুকনো রস , আর ভালোলাগছে না
মন চাইছে আমিষ কিছু ভালোবাসার ছোয়া ।
চেয়ে চেয়ে অতীতটা দেখছি ,
বর্তমান তোমার কাছেই থাকুক
অনেক ভারী বোঝ , দ্বায়িত্ব এবার তোমায় দিলাম
রাত পোহালেই যাবার সময় হলো ।
কান্না হাসি অনেক দিলাম ,
অনেক বদনাম কুড়িয়ে গেলাম
এবার মাফ করো ভাই ,
যাবার সময় হলো , দেখো
সন্ধ্যা নেমে এলো ,
অচেনা একটা কাঁচের ঘর আমার
আসে পাশে চেনা যে আজ কেউ নাই ।
বাবার অবস্থা নিয়ে একটা লেখা । পড় , অনেক কিছু জানতে পারবে ।

ইতি
তোর দুষ্টু প্রেমিক
০১/০৯/২০১৬ ” ….

( চলবে )

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।