• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকা -তে পলাশ চৌধুরী (পর্ব – ১০)

স্টেজের পাশেই স্বয়ংসিদ্ধা

দশম পর্ব

মনের মধ্যে উপনিবেশ গঠনের পর প্রেম কেবল প্রেরণের অপেক্ষায় থাকে। তবে নীহার বরাবর প্রেমকে অপেক্ষার চোখে দেখেছে। অপেক্ষা ছাড়া অপরাধীও অপরাধের চরমে পৌঁছুতে পারে না, প্রেম তো পূজা আর পূজিত ঈশ্বর প্রকৃত ভক্তি ও ভক্তের আকুতিতে তুষ্ট হন। প্রথম প্রেমের মৃত্যু হয় না যদিও কিন্তু দ্বিতীয় প্রেমে মৃত্যু হয়। যদিও দ্বিতীয় প্রেমে মৃত্যু হয় কিন্তু দ্বিতীয় প্রেমের মৃত্যু হয় না।
পুরুষ নারী নির্বিশেষে প্রেমের যেটুকু সংজ্ঞা চিরস্থায়ী হয়েছে তা হল কাঠিন্য। নীহারের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আসলে একটা পর্যায়ের পর তৃপ্তির চেয়ে আর্তিকে বেশি গুরুত্ব দেয় মানুষ। এই আর্তির কাছে এসে তখনই বাঁধা হয় যখন অপরপক্ষে শুধু অবহেলা, মিথ্যাচার প্রচারের মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। প্রেমের জন্য তো কোনো সিস্টেম লাগে না, সাফাই তখনই দিতে হয় যখন মনের মধ্যে নিজেকে নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। আর এখান থেকেই নীহার খোঁজ হারিয়ে ফেলে ক্রমশ কাঠিন্য গিলতে শুরু করে।
প্রকৃত প্রেম থেকে কেউ সহজে পালিয়ে যেতে চায় না, তবুও নীহার যেহেতু ক্রমশ নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে তার সাপেক্ষে যুক্তিতো দিতেই হবে তাকে, উত্তর দেওয়াটা জরুরী হলেও সেই মূহুর্তে আবশ্যিক মনে করেনি নীহার। কিন্তু নিজের কাছে উত্তর গচ্ছিত রেখেছিল সে। উত্তরটা এরকম—
“আমি জানি না কি হয়েছে তার, জানি না কেন কান্না আসছে তার, সে শুধু দু-একবার চোখ মেলে দেখে তাকায় আমার দিকে যেন অনেক অপরাধের স্বীকারোক্তি বাকি, আর সময় তার কাছে খুবই কম, আমি তাকে এরকম অপরাধী বেশে দেখতে চাইনি কবেও, তাই তার দেবীত্বটুকুই হৃদয়ে প্রতিষ্ঠা করে, তার থেকে দূরে সরে এসেছি। আমি জানি যৌবন সন্ধ্যা মানে না, শুধু সন্ধান জানে, তার সন্ধানের পথে নিজেকে বসিয়ে রেখে তাকে অপরাধী বানাতে পারবো না, অতএব বিদায়—“
এরপর থেকে নীহার শুধু একটা অপেক্ষা, যার অন্তরে উপেক্ষার বেহিসেবী কাঠিন্য গুঁজে রেখেছে।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *