“ওয়ার্ল্ড ইনস্টিটিউট অফ্ সুপার পাওয়ার এ্যান্ড ম্যাজিকাল এবিলিটি”!!!!! সংক্ষেপে ” ইসপ্যামা “…. খুব ছোট থেকেই বেড টাইম স্টোরি অর্থাৎ ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই পৃথিবীর প্রতিটা ছোট ছেলেমেয়ে ভূত, প্রেত,পরী,ডাইনি,প্রিন্স,প্রিন্সেসের গল্পের সাথে রুদ্ধনিঃশাসে যে জায়গাটার গল্প শোনে সেটা এই ইসপ্যামা…যেখানে গিজ্গিজ্ করে ভ্যাম্পায়ার, লাইক্যান অর্থাৎ নেকড়ে মানুষ, ডাইনী এমন কি পরী ও দেবদেবীরও থাকার গল্প ও ছোট বেলায় বাচ্চারা হাঁ করে শোনে……… মনে প্রাণে বিশ্বাস করে, আর
যেটা সত্যিই আছে কিনা তা নিয়ে বড় হওয়ার পর প্রত্যেকেই একটা বিশ্বাস অবিশ্বাসের , সন্দেহের দোলাচলে দুলতে থাকে। তার মানে…তার মানে ইসপ্যামার অস্তিত্ব সত্যি ই আছে!!! কিন্তু আমি?!!!!! আমি কি করে!!! এই অপার্থিব সৌন্দর্যের অধিকারীনী মহিলা টি.. মিরান্ডা না কি যেন নাম বললেন…এনাকে দেখে তো ভূত প্রেত বা ভ্যাম্পায়ার বলে মনে হচ্ছে না…আর বাকী দুজনকে ও তো আমার মতো মানুষ ই মনে হচ্ছে…. না মানে… ঠিক আমার মত না হলেও খুঁজলে এত সুন্দর দু একজনকে কি পাওয়া যাবে না?আর….আর….ইনি কি বললেন?? আমাকে ফ্যামিলিতে ওয়েলকাম বললেন?? তার মানে আমিও কি সেই যেরকম ছোটো থেকে শুনে আসছি… সেরকম ই…দিম্মা যেটা বললো কালকে?? চোজেন??? নির্বাচিত??…আমরা ছোট্ট থেকে শুনে আসছি…. আমাদের মধ্যে থেকে যদি কেউ অলৌকিক শক্তির অধিকারী হয় ইসপ্যামা তাকে নির্বাচন করে …… । তাকে তার চেনা জগৎ ছেড়ে চলে যেতে হয় এক অজানা জগতে ….ইসপ্যামা তে… সেটা যে কোথায় তা কেউ জানেনা ..অনেকে বলে সেখানে নাকি টাইম ট্র্যাভেল করে যেতে হয়..অনেকে বলে সেটা নাকি অন্য প্ল্যানেটে … আবার অনেকে বলে এটা নাকি গভর্নমেন্টের ই একটা গোপন সংস্থা … কিন্তু আসল সত্যি টা যে কি তা কেউ ই জানে না সেখানে যে যায় তার সাথে যে কি হয় কেউ জানেনা।পুরো ব্যাপারটা ই সিক্রেট। কিন্তু…এদের রূপ, গাড়ি, লাইফস্টাইল দেখে তো মনে হচ্ছে না এরা অন্য জগতের বাসিন্দা….
আদতে এই সব ভাবতে আমার একমিনিটের ও কম সময় লাগলো।। আমার চিন্তার জাল ছিন্ন হয়ে গেল প্রিন্সি ম্যামের গলার আওয়াজে।…. স্রোতস্বিনী ডিয়ার… তুমি ভাবতেও পারবে না আমরা তোমার জন্য কত টা প্রাউড। আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে এই স্কুল….না না এই কলেজ থেকে একজন স্টুডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিল…আর এত দিন পরে… ওহ্ কি যে আনন্দ হচ্ছে !!! মিরান্ডা ম্যাম আপনি বলুন এরপর আমাদের কি করতে হবে। আপনি যা বলবেন যা যা ফর্মালিটি আছে সব…. মিরান্ডা অসম্ভব কর্তৃত্বের সাথে হাত তুলে প্রিন্সি ম্যাম কে থামিয়ে দিলেন …ম্যাডাম জারভিস ঠিক আছে ঠিক আছে ইটস্ ওকে,…সে তো আপনি করবেন ই। তার আগে …উনি আমার দিকে ফিরলেন… স্রোতস্বিনী…..কাম হিয়ার…. এসো তো… একটু আমাদের কাছে এসে বোসো। আগে আমাদের সাথে তোমার আলাপ টা হোক।… আমার পরিচয় তো আগেই দিয়েছি। ইনি হচ্ছেন আমাদের ইনস্টিটিউটের একজন অনারেবল্ প্রফেসর এ্যান্ড প্রিস্ট ‘আদিল হাসান’….আর ও হচ্ছে এরিক সিম্পসন্। আমাদের ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্ট আর ব্রিলিয়ান্ট ট্র্যাকার। ও ই তোমায় প্রথম ট্র্যাক করেছিল।….বলতে বলতেই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে মিরান্ডা বুঝতে পারলেন আমার একবর্ন ও বোধগম্য হয়নি’। উনি আমার কাছে এগিয়ে এলেন। ওনার গায়ের অদ্ভুত মিষ্টি পারফ্যুমের গন্ধে আমার ঝিম ধরে গেল। আমার কাঁধের উপর হাত টা রেখে আমার দিকে সেই অদ্ভুত অন্তর্ভেদি অপূর্ব চোখ দুটো দিয়ে তাকিয়ে বললেন …. আমি তোমার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি স্রোতস্বিনী… তোমার মনে এখন প্রশ্নের পর প্রশ্ন জন্ম নিচ্ছে।…বিলিভ মি ডিয়ার…মনে হয় তোমার সব প্রশ্নের উত্তর ই আমরা দিতে পারবো। শুধু তার জন্য কিছুটা সময় তোমায় আমাদের সঙ্গে কাটাতে হবে। আমার দিক থেকে চোখ না সরিয়েই তিনি প্রিন্সি ম্যাম কে বললেন …ম্যাডাম জারভিস… কালকের দিন টা যদি আমি আপনার ছাত্রীর সঙ্গে কাটাই আপনার কি কোনো আপত্তি আছে??… আমাদের প্রিন্সি ম্যাম যেন বিগলিত হয়ে বিনয়ের অবতার হয়ে পড়লেন …না না কি যে বলেন ম্যাডাম মিরান্ডা…ও তো এখন বলতে গেলে আপনাদের ই। ….. দ্যাটস্ সো নাইস অফ ইউ ম্যাডাম জারভিস।… স্রোতস্বিনী তুমি কাল হোটেল রয়্যাল পেন্ট হাউসে আসতে পারবে??আমরা একসাথে লাঞ্চ করবো আর তোমার সাথে আমাদের বেশ একটা কোয়েশ্চেন আনসার সেশনও হয়ে যাবে।…বলো আসবে? …..হোটেল রয়্যাল পেন্ট হাউস!!! সেখানে তো শুনেছি বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট, ধনকুবের আর সেলিব্রেটি রা ই থাকতে পারে!! সেখানে কি আমাকে ঢুকতে দেবে!!! এ সব কথা মনে মনে ভাবতে ভাবতেই শুনলাম প্রিন্সি ম্যাম (বেশি ভালো হওয়ার জন্য) কথা বলে উঠলেন ..ভূমিসূতা আপনিও স্রোতস্বিনীর সাথে কাল যেতে পারেন তো । আপনিই তো ওর লিগ্যাল এ্যান্ড অফিসিয়াল গার্ডিয়ান..তাই না?? আপনারও তো একটা চিন্তা হচ্ছেই।… আমি অনুভব করলাম আমার কাঁধে র উপর রাখা মিরান্ডা প্রিস্টলির হাত টা একটু শক্ত হয়ে উঠলো… এবং….এক ন্যানো সেকেন্ডের জন্য কপালে একটা কুন্ঞ্চন দেখা দিয়েই মিলিয়ে গেল।… খুব ভদ্র গলায় উনি বললেন ..হ্যাঁ হ্যাঁ নিশ্চয়ই। মিসেস বসুমল্লিক ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম… আমি বাজি রেখে বলতে পারি দিম্মাও নিশ্চিত ম্যাডাম মিরান্ডার এই সামান্য পরিবর্তন টুকু লক্ষ্য করেছে …..এত ক্ষণে এই প্রথম মুখ খুললো দিম্মা…… আপনার ইনভিটেশনের জন্য অনেক ধন্যবাদ ম্যাডাম মিরান্ডা…. কিন্তু কালকে স্রোতস্বিনী একাই যাবে। আমি ওকে এভাবেই বড় করে তুলেছি, যাতে নিজের জীবনের প্রশ্নের উত্তর ও নিজেই খুঁজে নিতে পারে …..আর নিজের সমস্যার সমাধানও নিজেই করতে পারে।…নির্ভয়ে…..কারণ ও জানে, ওর পুরো জার্নি তে ওর পাশে ওর দিয়া শারিরীক ভাবে না থাকলেও মানসিক ভাবে সবসময় থাকবে, ওকে সাপোর্ট করবে ,… ওকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি যোগাবে…..এই বলে দিম্মা আমার দিকে তাকিয়ে আমার দিম্মার সেই স্পেশাল হাসি টা হাসলো…যে হাসিটা দেখলেই আমার মন থেকে সমস্ত ভয় দূরে গিয়ে আমার মন আত্মবিশ্বাসে ভরপূর হয়ে ওঠে।