• Uncategorized
  • 0

বিশ্ব কবিতা দিবসে তন্ময় সরকার

একগুচ্ছ অণুকবিতা

একা ও আফিম

।।১।।

বাইরে বৃষ্টি দারুণ
তুমি ছাতাহীন…
রাত আমার সমব্যাথী, বৃষ্টি এনেছে

।।২।।

চোখের সামনে দুটো অবাধ নদী
আমি একা শুয়ে মরুভূমি

।।৩।।

নিথর আধ্বোজা চোখে পোড়ে আছি
তোমার ফোনের অপেক্ষায়…
অথচ ফোনটা বন্ধ
সমস্ত পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পোড়ে আছি
তোমার ফোনের অপেক্ষায়

।।৪।।

তোমার মুখোশটা জরুরী, তুমি জান
আমি জানি, রাতে একা অশরীরি মোম কেন জ্বলে

।।৫।।

আজকের বিস্তীর্ণ সন্ধ্যা
স্লিপ্ কেটে ঢুকে পড়ল
জয়তীর সেলফোনে

।।৬।।

জনসাধারণের সামনে নিজেকে দূর্বোধ্য রাখি
আর তুমি গণবিচারের হাত থেকে রেহাই পাও

।।৭।।

বাসে বসে আছি, অথচ মনেহচ্ছে যেন জেট বিমান
কত দূরের পথ কি দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে
আরে বাবা, পাশের সীটের সহযাত্রিনী কিছু হয় না আমার

।।৮।।

ভোরের আলো-ছায়া-আলোয় ব্যালকনি থেকে দেখা যায়ঃ
বই-খাতা হাতে হেঁটে যাওয়া এক চুম্বক
আর কিছু না

।।৯।।

মধ্যরাতের ব্রিগেড সমাবেশে
ঘাসেরা নড়েচড়ে বুঝে নিতে চায়ঃ
‘আমাদের শরীর এতো হলুদ কেনো’?

।।১০।।

তিনবার স্ট্রোকে ছ্যাঁকা খাওয়া প্রেমিক
প্রথমবার ছুঁয়ে ফেলল মৃত্যু

।।১১।।

ভয় নেই।
তাই বন্দুক বা ঈর্ষা কোনোটাই পুষি না

।।১২।।

রেলের পাটির মত দু’জন সমান্তরাল সারাদিন
আটটা পঁচিশে গোবরডাঙায় ক্রসিং আছে

।।১৩।।

নতুন কেউ ঠোঁট বেঁকিয়ে তাচ্ছিল্ল করলে বুঝিঃ
নির্বুদ্ধিতা সংক্রামিত হচ্ছে

।।১৪।।

সারাদিন নাকি তোমার মাথা চিবিয়ে খাচ্ছি
অথচ তোমার ঘুম পাচ্ছে
স্পর্ষরা পার্কে গেছে

।।১৫।।

অভাব আছে, অর্থ গভীর
অভাব কাটলে অর্থে ফাটল

।।১৬।।

রাগ করেছি, ঘুম পেল যে
ফুলটা তবু ড্রেসিং-মিরর সামনে রেখে
মিথ্যে মিথ্যে মুখোশ সাজে

।।১৭।।

ভোর হয়েছে, ঘুম ভেঙে যায়
কারুর তবু রাত্রিবেলা

।।১৮।।

ধুর্ত-রাতে ইচ্ছে হল, খুব ভেঙেছ
এখন তুমি ভাঙতে পার, ভাঙছ না তো!

।।১৯।।

যা কিছু ঘুরপথে দূরপথে নট্রিচ্এবল্
সেটুকুই ভালবাসা, বাকি যা সব আবলতাবল

।।২০।।

তখন বোধহয় তিনটে আঠাশ, ঘুম ভেঙে যায়
ভয় পেয়েছ, ফোন করেছ, ভয় পেয়ে যাই

।।২১।।

ক্রমাগত ঘুপ্চি খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়ে
অবশেষে সবার সামনেই বসে পড়ি

।।২২।।

কারা যেন কোনোদিন হাসেনি জীবনে

।।২৩।।

কবিতার খাতা থেকে গুনে গুনে তিনটে বিষোদ্গার তোমাকে পাঠাব
ফসল ফলেছে, সোনা, উপভোগ কর

।।২৪।।

একা মানেই ধ্বস্তাধ্বস্তি
নিজের সাথে, খিদের সাথে

।।২৫।।

কেমন যেন মাথার মধ্যে একগাদা জং
প্রেম পেয়েছি। হারিয়ে গেছে সবকটা রং

।।২৬।।

দেখলে তুমি — এইযে আমার কষ্ট হল?
বলার মত শব্দ পেলে নিজেকে বোলো

।।২৭।।

একটা অপরিচিত মুখ
পরিচিতির আশঙ্কায় কাঁপে

।।২৮।।

দীর্ঘদিন মিথ্যার সাথে বসবাস করে
আজ আমাদের বুকে কোন জ্বালা নেই
আমরা ভাল নেই

।।২৯।।

সবাই তো বড় হবে, সবাই হারিয়ে যাবে ছাদে…
ফাঁকা ঘর, একা-একা –
ভুল অংকের
              রাফ খাতা
                           পুড়ে যাচ্ছে
                                         দূরত্বের জ্বরে

|| ৩০ ||

সব ভুলে বসা মানুষ – একটা অশান্ত রাত
সম্পূর্ণ নতুন একটা মানুষ
 ধরে আছে অক্ষম করাত
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *