[ কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নেট বন্ধ করে দিয়েছে… তা দিক… সেটুকু মেনে নিতে বলেছে… নিশ্চয় কারণ থাকতে পারে… কিংবা ঠিকই আছে!! অর্কপ্রভর অবশ্য একটু অস্বস্তি বোধ হয়। তা হোক। সবটাই তো কেমন বিস্ময়কর লাগছে!!
পরেরদিন সকালে মেয়েটি অনেক পরে এলো…প্রায় দুপুর বেলা, তাও অর্কপ্রভ আগের রেশ টেনে কিছু লেখার পর ]
অঃ: — বেশ তো, আমার প্রেমে তোমাকে ‘বোঝাপড়াহীন, শূন্য মনে, খোলা আনন্দে’ উপর্যুপরি ভিজে যাওয়া অবস্থায় দেখার প্রতীক্ষায় রইলাম 😍। সেই ছবি পাঠিয়ো, বুকে করে নিয়ে ঘুমোবো 😃। কথায় আর কাজে কতটা ফারাক, মেপে নেবো কিন্তু! 😎
পাগলী 😊 ! প্রেম, ভালবাসা এসব ঈশ্বরের দান। সহজে মেলে নাকি! পেলে, মাথা নত করে গ্রহণ করতে হয়। দেহি পদপল্লব মুদারম্ ।
আর, ‘নির্দ্বন্দ্ব, নিষ্কলুষ ভালো থাকার ভরসা’র কি বোঝা নেই! সেটা কি নিঃশর্ত হল!! সে বোঝা না থাকলে, সেটা তো শুধুই উন্মাদনা, হয়তো প্রেম নয় 🙂।
কেউ কেউ অবশ্য ‘তোমার প্রেমে হব সবার কলঙ্কভাগী, সকল দাগে ‘ দাগী হতে ভয় পায় না। তবে, তোমার অতুল সৌন্দর্যে আমি অবশ্য সে কলঙ্কদাগ লাগিয়ে দেওয়া, ভাবতেও পারবো না। নিশ্চিন্ত থেকো 🙂
মোঃ: — আমি তো রাজি… কিন্তু মানিয়ে নেওয়ার বোঝাপড়া আপনার দিক থেকে অবিচল থাকলে আনন্দ ধারা ঝরবেই বা কি করে আর আমি ভিজবোই বা কেমনে… 🙂
কথায় আর কাজে বিস্তর ফারাক থাকে গো… সত্যিই… কেনো জানেন…!? আমরা হৃদয় টুকু তালাবন্ধ করে বুদ্ধিটুকু ব্যবহার করি শুধু… খামতিটা সেখানেই তৈরি হয়….
সত্যিই প্রেম ঐশ্বরিক… আমিও একমত… তাই ঈশ্বরের ইচ্ছে না হলে পাওয়া যায় না বুঝি….
কী করে আপনার সাথে যোগাযোগ হল!… নতুন করে!!
ভরসার ও বোঝা হয়!!…. জানা নেই তো আমার…ভরসা তো আসলে বিশ্বাস … সে যাই করুক আমি তার প্রতি অবিচল।… জানিনা ঠিক… খুঁজছি আসলে তেমন ভরসাটুকু… ঈশ্বরের পরে যাকে করা যায়….. 🙂
আহা… ” তোমার প্রেমে হবো সবার কলঙ্কভাগী… “… এমন কেউ চায়ই না যে মোটে…. কলঙ্ক খানিক বাড়িয়েই বুঝি গরিমা বাড়ে…. 🙂
কিন্তু,কোথা খুঁজি সে প্রেম…!
অঃ:– আচ্ছা!!… তবে তো অভিসারে যাওয়া যেতে পারে! যাবে নাকি এখন!?… কথা বলা দিয়েই শুরু হোক না হয়!!
মোঃ: এখন মেয়ে রয়েছে যে… তাই প্রতিবন্ধকতা বর্তমান 🙂
অঃ : — হা,হা,হা… আচ্ছা, পরে হবে।
[ অর্কপ্রভ খানিকক্ষণ সরিয়ে নিতে চাইল নিজেকে। মেয়ে থাকলে আসবেই কি করে!!
অদ্ভুত লাগছে মেয়েটিকে। এর আগে যারা ঘনিষ্ঠ হতে চেয়েছে তারা এভাবে প্রেমের প্রত্যাশার কথা সরাসরি বলে নি। এমন হয়েছে, কেউ কেউ বন্ধুত্বকে ব্যবহার করে টাকা পর্যন্ত চেয়েছে।… তবে, অধিকাংশই ভাল একটা সম্পর্ক রাখা ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে আসেনি, যদিও।]
(অনেকক্ষণ পরে)
মোঃ:– কোথায় যে গেলো ভদ্রলোক…!?
মেঘের সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়ে বৃষ্টি হলো বুঝি…!! 🙂
অঃ: — মানে!?… মেঘের দেখা মিললেই বৃষ্টি হয় নাকি!?
আর, তুমি মেঘ নও!?… ভাসমান!?… তা যদি না হও, তবে এখানেও ভাল করে মেঘ জমতে দাও!… ঝড় উঠুক… তবে তো বৃষ্টি ঝরবে!! 😊
ভরসা রেখো ভদ্রলোকের(!) ওপর। 😊 সবাই ‘হৃদয়কে তালা বন্ধ করে ‘ শুধু ‘বুদ্ধিটুকু ব্যবহার’ করে চলে না। তাতে ছলনা মিশে যেতে পারে। কিংবা হৃদয়ের accelerator এ চাপ না দিয়ে শুধু বুদ্ধির ব্রেক কষে গেলেও যে গাড়ী চলবে না!! accident এড়াতে যেমন brake থাকা দরকার, তেমন হৃদয়ের accelerator এ চাপ না দিলেও তো প্রেমের highway তে উড়ে যাওয়া যাবে না!!
আগে বলেছিলে, ‘’কিন্তু মানিয়ে নেওয়ার বোঝাপড়ায় আপনার দিক থেকে অবিচল থাকলে আনন্দধারা ঝরবেই বা কি করে আর আমি ভিজবোই বা কি করে ‘’ ইত্যাদি, ইত্যাদি…
…. প্রলোভিত কোরো না, হে ঐশ্চর্যময়ী! আমায় আরো সাহসী কোরো না। এই নিয়ে পরে একটা কবিতা দেবো… গান… শোনাবো।
ভরসা করাটা বোঝা নয়, ভরসা দেওয়াটা বোঝা 😊… সেটা দায়িত্ব, সোজা কথায় দায়। এই দায় না থাকলে ভরসা করা যায় না। দায়/দায়িত্বটাও বহন করতে হয়। যার জন্য মেয়েরা সাধারণতঃ বাবার মত কিংবা একটু বেশী বয়সের পুরুষকে পছন্দ করে(আমার কথা বলছি, ভেবো না!)।
‘প্রতিবন্ধকতা’র কথা তুললে কেন?
তোমার একান্ত আপন সময়টিই তো গোপন অভিসারে যাবার সময়। অন্য সময় যাবে কেন? সে সময় এসো। এখন মেয়ে আছে। থাক।
তবে, আনন্দধারায় তোমার ভিজে যাওয়ার বাসনায় তুমি কতটা মানিয়ে নেওয়ার বোঝাপড়ায় থাকতে পারো, জানিও, ইশারায় বা লেখনীতে। 🙂🙂
মোঃ: — ❤❤❤❤
শব্দ গুলো তোলা রইলো… আপাতত মুগ্ধতা ব্যক্ত করলাম…!! 🙂
ভালোবাসা তো সাহসই প্রদান করে জানি… তবে সাহসী তো হতেই হবে… হা হা…. আমি তো অকপট হতে শিখেছি সমর্পণে…. এখন তা যদি প্রকারান্তরে সাহসের উদ্দীপক হয়…. আমার কি করার থাকে কিছু….!? 🙂
” তোমার অশোকে-কিংশুকে অলক্ষ্য রঙ লাগলো আমার অকারণের সুখে…. ”
….. মনে এলো….!! ব্যক্ত না করে থাকতে পারলাম না। 🙂
অঃ: — ❤❤❤❤❤
আচ্ছা, হৃদয়কে তালাবন্ধ রেখে অকপট হওয়া যায়!!! 🙂
মোঃ:– হা হা… যায় নাকি…!?
অঃ:– তুমি যে বললে! 🙂
মোঃ — আসছি।
(একটু পরে)
মোঃ: — জানলেন, আজ সারাদিন ভাল করে আসাই হল না!… সামনে পরীক্ষা আছে মেয়ের… তাই একটু বেশীক্ষণ পড়ানোর সময় লাগল। ওর বাবা বাড়িতে থাকলেও তার কাছে পড়তে চায় না। আজকে তিনি আবার বাড়িতে আছেন… অফিসের কাজ নিয়ে এসেছেন দুদিনের জন্যে। ব্যাস, আমার ডানা মেলে হৃদয়ের acceleratorএ চাপ দেওয়া আর হল না!😊
অঃ : রেকলেস হবে কেন!? গাড়ীতে ব্রেক থাকা তো ভালই!! গিয়ার… গতির প্রয়োজন অনুযায়ী পাল্টাতে তো হয়ই ! 😊
মোঃ : এখন ভিজতে যাবার মতো গতি বদলের তাগিদ পাচ্ছি না 😁😁
অঃ : 😄
মোঃ: আসলে সাধ আর সাধ্য, জীবনদর্শন আর জীবনচর্যা… এই দুইয়ের মাঝে যে জার্নি, তারই নাম তো জীবনযাপন। তাই অনন্ত ব্যালেন্সের খেলা চলতে থাকে…. চলতেই থাকে। আমরা একমুখী হতে পারিনা।
অঃ : বাঃ। সে কথাই তো আগে বলেছি… reality… জীবনযাপন! অস্বীকার করি নাতো… তাতে স্বপ্ন গুঁজে দেবার কথা তুমিই বলেছিল… সেটাও তো ঠিকই আছে… প্রয়োজনীয়।
ইচ্ছা থেকে ইচ্ছাপূরণের যাত্রাও তো বহুমুখী… কিন্তু, মুস্কিল হল জীবনযাত্রা একমুখী। তাই, কোথাও থেমে পিছিয়ে এসে অন্য কোন রাস্তা নতুন করে বেছে নেওয়া যায় না…. হয়তো যেতে যেতে রাস্তায় কোন তীব্র বাঁক আসে… সেখানে বাঁক না নিলে জীবন যেন খাদে পড়ে যায়!
আসলে, পাহাড়ের চূড়াতেই তো মন্দির স্থাপনা হয়
… সেখানে পৌঁছতে পাকদণ্ডী পথই থাকে… সোজা ওঠা যায় না। 😊
মোঃ : জানেন, ভালোলাগা সততই স্বাধীন… তার চেয়ে স্বাধীন শক্তিশালী আর কিছুই হয়না…
আর কে না জানে, নিজের হৃদয়বত্তার ভার ও দাবী নিজেকেই বহন করতে হয় 😊🙏
অঃ : বেশ। কিন্তু,দাবী তো কিছু করনি!! তবে, তোমার কথা মত, আমার ভাললাগার স্বাধীনতা যদি ভালবাসা হয়ে তোমার ওপরে ঝরে পড়তে চায়!?
মোঃ : সে আমার সৌভাগ্য হবে… দান হিসেবে মাথা পেতে নেবো!!
অঃ : না, না, দান করার মত অতুল সম্পদ কিই বা আছে!! তবে, ভাবের বিনিময়ের ক্ষেত্রে ‘আদানপ্রদান’ শব্দে ‘দান’ শব্দটি ব্যবহৃত হয় এবং সেটি উভমুখী।
তবু যদি কোনকিছুকে দান হিসেবেই ধরো, তাহলে ‘অন্যের মনের ওপর নির্ভর’ করাও যে বাঞ্ছনীয়…. নাহলে, তাতে উপেক্ষার হাওয়া লাগতে পারে, অপ্রয়োজনের অবহেলা থাকতে পারে,… তাতে অসম্মানের সংক্রমণ ঘটতে পারে যে ‘দাতা’র হৃদয়ে, মনে। 😊
তবে, সে স্বাধীনতা নিজের সীমানাটুকু পর্যন্তই চলতে পারে, যদিনা, অন্য দেশের সংগে অবাধ বাণিজ্যের সীমানা লঙ্ঘনের চুক্তি থাকে!! 😊
মোঃ : কী এসে যায় অবহেলিত হলে? সেই কবিতাটি মনে পড়ে না ?
“তোমায় কিছু দেব বলে চায় যে আমার মন
নাই-বা তোমার থাকলো প্রয়োজন” … তবে যে আমিও ধন্য হই 🙏🙏
আর, অবাধ বাণিজ্যের সীমানা খুলে দেওয়ার চুক্তি করে নিলেই হয়!
অঃ: তোমাকে কী আর এমনি এমনি ভাল লেগেছে!!
কী সুন্দর প্রকাশ করেছ!!…ঠিক এই কবিতাটির উল্লেখ করতে যাচ্ছিলাম.. তুমিই দিলে…
তবে কী জানো!!… ‘ বড় বড় কারবারে ( বাড়ী, গাড়ী, সম্পত্তি কেনা…) প্রয়োজন না থাকলেও ধার দিয়েই ক্রয় করাতে বিক্রেতারাও উৎসাহী করে… লোকসানের প্রভূত সম্ভাবনা সত্তেও।
‘হৃদয়বেত্তা’র ভার ও দাবী’ এখন আর বোধহয় বড় কারবার নয়!!… ‘মাল নিজ দায়িত্বেই রাখবেন’ লিখে দেওয়া অনেক নিশ্চিন্তের!!!😊😊😊
মোঃ : এখন আর কাঁদাবেন না আগের কথা তুলে ধরে।… এতক্ষণ কেঁদেই তো এলাম!!
অঃ : কাঁদছিলে?… কেন?
মোঃ : কেন আর!… বাড়ীতে আসলেই কিছু না কিছু নিয়েই…
মেয়েকে পড়াচ্ছিলাম… ওর রেজাল্টা ভাল হয়নি… টিউশন যায়, তারপরেও আমি পড়াই।.. ওর বাবা এমন প্রশ্রয় দেয়, মেয়ে আজকাল আমায় মানতেই চায় না… অথচ, আমাকে ছাড়া তো চলেও না। এই নিয়ে কথা কোথা থেকে কোথায় চলে যায়…
(কিছুক্ষণ চুপ করে গেছে দেখে অর্কপ্রভ লিখল)
অঃ : তুমি কাঁদছ!?.. আমি তো বুঝতে পারিনি!
আমি তোমার গালে চুমু দিতে চাই… তোমার কপালে, তোমার ঠোঁটে… নাও… গ্রহণ করো।
মোঃ : দাও, দাও, ” শ্রাবণের ধারার মত ঝরুক পড়ে”
পথ আমারে সেই দেখাবে
যে আমারে চায়,
আমি অভয় মনে বাইবো তরী
সেই শুধু মোর দায়।
অঃ : 👍👍 তবে,
পথ দেখানোর মালিক তো নই
ভেসে যেতে নেই মানা
কূল হারানোর ভয় না পেলে
বাঁধে কোন সীমানা!?