• Uncategorized
  • 0

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস

জন্ম- ১৯৬৭, বরানগর। বর্তমানে দার্জিলিং জেলার মিরিক মহকুমার উপশাসক ও উপসমাহর্তা পদে আসীন। চাকরীসূত্রে ও দৈনন্দিন কাজের অভিজ্ঞতায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা সমাধানে তাঁর লেখনী সোচ্চার।

লিখেছেন – মৃদুল শ্রীমানী

আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। মানবাধিকার বলতে ঠিক কি বোঝায় আমার কৈশোরের শেষ লগ্নে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছোটবেলা থেকেই তো তাঁর কবিতা পাঠ করতে আমি অভ‍্যস্ত। আমাদের পল্লীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতা আবৃত্তি করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে আমি খানিকক্ষণ স্তব্ধ হয়ে থেকে বাকি অংশ বলতে শুরু করি। কবিতাটির প্রথম পংক্তিটি ছিল “সোম মঙ্গল বুধ এরা সব আসে তাড়াতাড়ি, এদের ঘরে আছে বুঝি মস্ত হাওয়া গাড়ি?” বলতে বলতে রবিবারের কথা আসে। শিশুর মন নিয়ে কবি বলেন, “সে বুঝি মা তোমার মতো গরিব ঘরের মেয়ে?”
‘গরিব ঘরের মেয়ে’, এই কথাটা রবিবার এই আইডিয়ার সাথে লগ্ন করে দিতে পারাটা এক দুরন্ত ব‍্যাপার। কবির অতটুকু অনুরাগী ওই একটি কথায় টের পেয়ে যায় গরিবের ব‍্যথাটা ঠিক কি! আর, গরিবের মধ‍্যে যে মেয়েরা আরো হদ্দ গরিব, শোষিতের মধ‍্যেও চরমতম শোষিত, সর্বহারার মধ‍্যেও আরো সর্বহারা, ওই কথাটা ফ্রেডারিখ এঙ্গেলস আমার কানে কানে বলেছিলেন আরো অনেক পরে। কিন্তু এঙ্গেলস এর সেই কথাটা প্রাণের পরে কয়ে দেবার কাজটা সেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেরে রেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। আমার তারুণ্যের দিনে “আফ্রিকা” কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, দাঁড়াও ওই মানহারা মানবীর দ্বারে। আফ্রিকার উপর যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আস্ফালন আক্রমণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মানহারা মানবীর কথা বলেন, কেননা কবিকে খবর রাখতে হয়, যারা শাসন করে তারা শুধুমাত্র শাসিত অংশের নিরপরাধ মানুষের বুকে গুলিই ছোঁড়ে না, তাদের ঘরের মা বোনকে ধর্ষণ করায়। শক্তিমানের পক্ষে শাসিত জনগোষ্ঠীর মনোবল ভেঙে দেবার জন্য ধর্ষণ একটা প্রচণ্ড কার্যকর অস্ত্র। গণতন্ত্রের নাম জপতে জপতেও ইন্টারনেট বন্ধ করে রেখে নারী মর্যাদা লুণ্ঠন করতে থাকে শাসক।
আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে গভীর প্রত‍্যয়ে স্মরণ করি।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।