বাবার কাছে কোনও দিন সাদা শাড়ি
কোনও দিন জংলা ছাপা
আবার কোনও দিন হাওয়ায় ওড়া আঁচল আসত।
ওরা আসার আগেই আমাকে আর দিদিকে
বাবা বসিয়ে দিয়ে আসতেন গলির মুখে, একটা রকে।
বলতেন, যে-গাড়িগুলো যাবে সেগুলোর নম্বর লিখে রাখ তো দেখি।
আমরা লিখতাম।
পরে নিজেরাই মিলিয়ে মিলিয়ে দেখতাম কার ক’টা বাদ গেছে
বাদ গেলেই কানমলা
আর যে লিখত, সে পেত কখনও কাগজের উড়োজাহাজ
কখনও ঘটি চানাচুর।
আমি বাবার কাছে রোজ রোজ কানমলা খেতাম।
সতর্ক হতে হতে যখন বুঝলাম
দিদি আসলে ওগুলো পাওয়ার জন্য মিথ্যে মিথ্যে নম্বর টুকে রাখে
বাবাকে বললাম।
বাবা চালু করলেন নতুন খেলা।
বললেন, বসে বসে লোক দ্যাখ,
দেখবি, এত মানুষ, তার ওইটুকু একটা মুখ
তবু কী অদ্ভুত! কারও সঙ্গে কারও মিল নেই।
যদি কখনও একই রকম দুটো মুখ দেখতে পাস
দ্বিতীয় জনের নাম-ঠিকানা লিখে রাখিস
বকুলের দানা দিয়ে শিস-বাঁশি বানিয়ে দেব।
বাবার কাছে কোনও দিন সাদা শাড়ি
কোনও দিন জংলা ছাপা
আবার কোনও দিন হাওয়ায় ওড়া আঁচল আসত,
মা তাই চলে গিয়েছিলেন মামার বাড়ি।
আমরা একই রকমের আর একটা মুখ খুঁজতাম।
তখন মেলাতে পারিনি
এখন বুঝতে পারি, সাদা শাড়ি, জংলা ছাপা
আর হাওয়ায় ওড়া আঁচলের মুখগুলো আসলে একই
হুবহু এক।