বড়ো হয়ে আমি আমার বাবার মতো হবো’, এমন কথা অবুঝবেলায় কতই না ভেবেছি,
শেষমেশ বড় হলাম, বুঝলাম বাবার মতো হওয়া যায় না, বাবারা উঠে আসে স্বপ্নের পাতা থেকে, পালিশ জুতো পরে দাঁড়ায় বাস্তবের মাটিতে,
তারপর ঢাল হতে থাকে সমস্ত জীবন,
বাবা মানে একটা আস্ত শহর,
প্রাচীন, অটল।
বাবা একটা বৃক্ষবলয়,
সব রোদটুকু পকেটে পুড়ে তারা ছায়া হয়ে যায়, রোদের ভিতর জ্বলতে থাকে অন্য পুরুষ,
ছায়ার ভিতর সংসার ।
কর্তব্যের জোয়াল টানা কাঁধের উপর জন্মায় অরণ্য, যার শিকড় বুকের ভিতর বাড়তে থাকে,
বাবাদের চুলের সাদাকে কেমন যেন ফ্যাকাসে সকাল মনে হয়, সেই সকাল তার নিজের, তার পেরিয়ে আসা ঘুমের ।
পুরুষ বাবা হলে বোধহয় ঝাঁক বেঁধে পাখি উড়ে যায়, তারপর তারা আর পুরুষ নয় শুধু বাবা হয়ে যায়, যাদের জামার ভিতর লেগে থাকে মাটির সোঁদা গন্ধ। বাবাদের স্নেহে কোনো আতিশয্য থাকে না, থাকে ধ্রুপদী গাম্ভীর্য,
একটা দূরত্বের সূক্ষ্ম জালিকার মধ্যে মিশে যায় মায়া, গভীর মায়া, সেই মায়ার আড়ালে সুখে বাঁচে শৈশব, কৈশোর ।
তবুও তো মায়ের মতো বাবাকে ছুট্টে গিয়ে বলা হয় না ‘ভালোবাসি ‘,
তাই কোনো কোনো দিন, নিছক বাহানায় আলগোছে, নিশ্চুপে বলে ফেলতে হয়;
বাবা মায়ের মতো নয়, তুমি তোমার মত ভালো! আলোর মতো ভালো! ভালোর মত ভালো!