প্রত্যেকেরই মনে কিছু না কিছু কথা জমা হয়ে আছে। আর সেগুলো সবাই বলতেও চায়। তাই মঞ্চ তো একটা দরকার হয়ই। সেটা বাঁশের তৈরিই হোক আর খোলা আকাশের নিচে দাঁড়াবার মাটিই হোক – মানুষ সেখানে যাবেই। এই পর্যন্ত সব ঠিক আছে। কিন্তু এর পরের অংশটা নিয়েই যত আপত্তি। অর্থাৎ যিনি বলছেন তিনি সবসময় তার সামনের মানুষগুলোকে তার থেকে অনেক নিকৃষ্ট মানের ভেবে নিচ্ছেন। তাই তার কথাগুলো ভালোবেসে বলা নয়, মানুষকে সচেতন করতে বলাও নয়। অশিক্ষিত মানুষকে শিক্ষিত করতেই তার মঞ্চে ওঠা। একজন শিক্ষকও এই ভাবনা ভেবে থাকেন। মানুষকে বোকা ভাবার মতো বোকামি আর নেই। আমাদের দেশের মানুষেরা কবে ভালোবেসে বন্ধু হয়ে একজন আরেকজন সব কথা জানাবে ?
১৯
শঙ্খ ঘোষের একটি কবিতায় আছে – ” আমাদের ইতিহাস নেই “। কেন নেই ? আসলে আমরা অকৃতজ্ঞ। আমরা উপকারীর উপকার স্বীকার করতে জানি না। শৈশব থেকেই এই অভ্যাস আমাদের মজ্জাগত। একটা ছোট্ট শিশু জ্ঞান হওয়া থেকে দেখে তাদের পরিবারের সবচেয়ে দরকারী মানুষটা সবচেয়ে বেশি অপমান নিয়ে বেঁচে থাকে। তিনি হলেন বাড়ির কাজের মেয়ে। তাই সমাজে এত বড় বড় মানুষ থাকা সত্ত্বেও একজন কবিকে দায়িত্ব নিতে হয় “মেথর”-কে চিনিয়ে দিতে হয় —– “শুচিতা ফিরিছে সদা তোমারি পিছনে।” তাই যুগে যুগে যে ইতিহাস লেখা হয়েছে তা সবই বানানো। শাসক শক্তির জয়গান। মিথ্যে ইতিহাস। প্রকৃত ইতিহাস লেখা আছে দুই লাইনের মধ্যের সাদা অংশে।