• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকা -তে সৌরভ বর্ধন (পর্ব – ১৪)

কবিতায় আমি কলার তুলতে চাই (পর্ব – ১৪)

তোমরা কানে কানে বলতে পারো সে আসেনি এখনও, কিন্তু আমি তার আসার পথ দেখতে পাচ্ছি, ওই দূরে ঘন বনের সোপান দিয়ে দুই পা দুই পা করে সে আসছে, আমার প্রত্যঙ্গ ক্রমশ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে তার জন্য, তোমরা শিথিলকে বলো আজ ওর ছুটি, নীল পাহাড়ের পাথর থেকে ওকে বকশিশ দিয়ে দাও কিছু, ওর অনন্ত ছুটি হলো আজ, মাথার ছাদ খুলে দাও, মেঝেটাও খুলে দাও পায়ের কাছে, আমার দুহাতে এসো, সত্যিকারের ডানা বেঁধে দাও, আমি ডানা ছাড়িয়ে উড়তে চাই অনেক উঁচুতে যেখানে বায়ুর উত্তাপ জমাট বাঁধে না, যেখানে মাধ্যাকর্ষণ কাজ করে না, যেখানে একটি পাতার ঘূর্ণন থেকে আরেকটি পাতার ঘূর্ণনে অন্ধ হয়ে আসে মুখ, আমিরা শুধু আমিদের ভেতর কাজ করে যায়, প্রচুর কাজ, বসে থাকার সময় নেই একদম, সময় তো উড়ে বেড়াবার জন্য, তাই গাছের পাতা থেকে জল উবে যাচ্ছে, মাছের আঁশ থেকে শব্দ গুলে যাচ্ছে, জল, জল হয়ে যাচ্ছে বাতাস, আমার শরীর বাতাস দিয়ে তৈরি হোক, নতুন করে তৈরি হোক, আমি গ্যাসীয় নাভিকুণ্ড হয়ে যাই, পর্বতগ্রন্থি থেকে আমি ছড়িয়ে পড়ব সারা ব্রহ্মাণ্ডে, টেথিস সাগর থেকে আমরা ছড়িয়ে পড়ব, আমরা শূন্য থেকে ভাঙতে থাকবো… একটি শূন্য ভাঙলে কতগুলি আটক শিবির ভয়শূন্য হয়, কতগুলি কাঁটাতার ভাঙাচোরা হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া যায় কাছের গোলায়, সেসব কথাই অজস্র পাহাড়ের সানুতলে লিখে রাখতে চাই, সেজন্যই দীর্ঘ দিন ধরে আমি চেষ্টা করছি একটা নতুন লিপি আবিস্কার করার, লিপি আমার আত্মজা হোক আমি চাই না, আমি চাই সাঁওতাল তার নিজের ভাষায় কথা বলুক রাষ্ট্রপুঞ্জে, আমি চাই বাংলার ওপর চাপিয়ে দিলেও আমার কবিতা অনুবাদ হবে রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে, রন্ধ্রে রন্ধ্রে। পারসিক চাকায় জীবন পেলে বীর্যবান বেলাভূমির মতন আমরা খুঁটে খাবো বৃত্তের জলজ ফলমূল, শীতরাতে অবসর খুব কম ও প্রগলভ, তাই হেঁকে ওঠে নিরেট শৃঙ্খল, লেপের তলায় গ্রাম্য উষ্ণতা ভরে যায়, গভীর রাতের প্লাস্টিকগুচ্ছ যেভাবে ফুটপাতে পুড়তে পুড়তে উড়ে যায় সেভাবে আমিও নিজের গর্তে উলঙ্গ হই, ধোঁয়া, ধোঁয়া ওড়ে পোশাকে, পোশাক উড়ে যায়, অচেনা কুক্কুরী সততার ওমে কিনে নেয় শীতের বিনিময়, বিনিময়ে অর্জন করি হরপ্পার দাবানল, মুখ ঢাকা মুখাগ্নিতে রাত, রাত হয়ে যায় আহ্নিক অক্ষরের দোসর, আমি তাদের ভালোবাসি, ভালো লাগে তাদের অত্যাচার, একেকটা ভালোলাগা গিলে নিতে যেমন আপোষ লাগে, নতুন রং করা আলনার মতো শুঁকতে ভাল্লাগে চোখ, শিল হয়ে ঝরছো যেমন পাঁজর ঘেঁষে তেমন ঝড়ে অস্থির শোক, বেড়ে দিই অন্ধকার, শুধু জেগে থাকে আমার সাদা জামাটির কলার, আমি তাকে আকন্ঠ তুলে দিই কবিতার হাতে, তাতে তৃষ্ণা হয়তো মেটে, জলতেষ্টা মেটে না, কারণ আত্মজৈবনিক একটি ভ্রমণের নাম হলো ধ্যান, তার কাছে হাঁটুমুড়ে বসার প্রয়োজন আছে বৈকি!

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।