দৈনিক ধারাবাহিক উপন্যাসে মৃদুল শ্রীমানী (পর্ব – ৬৩)
by
·
Published
· Updated
পর্ব – ৬৩
১৬২
কারখানার কাছে নেমে অনসূয়ার গাড়ির চালককে ধন্যবাদ দিতে গেল শ্যামলী।
শ্যোফার বলল, মালিকের নির্দেশ আছে আপনাকে একদম বাড়ি পৌঁছে দিতে হবে।
শ্যামলী বলল, সে কি? আমি এখন কারখানার হিসাব নেব। তারপর বন্ধ করিয়ে তবে তো বাড়ি যাব।
চালক বলল, আপনি তাড়াতাড়ি নিলে আমি তাড়াতাড়ি ছুটি পাব।
শ্যামলী আর কোন কথা না বলে কারখানায় ঢুকে দেখল শ্রমিকরা জনা দুয়েক বসে ঝিমোচ্ছে। আর বাচ্চা ছেলেটা একটা পুঁটলি বুকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে।
শ্যামলীর পায়ের শব্দ শুনে ধড়মড় করে উঠে পড়ল বাচ্চাটা। বলল, ছোড়দি, তুমি এত দেরি করলে কেন?
তারপর নিচু গলায় বলল, সেই সকাল থেকে ক্যাশ পাহারা দিচ্ছি। জানো, আমার মা খুঁজতে এসেছিল। তবু আমি ক্যাশ ছেড়ে যাইনি ছোড়দি।সব হিসাব এখানে আছে।
শ্যামলী দেখল, একটা কাগজে কাগের ঠ্যাং বগের ঠ্যাং ছাঁদে হিসাব লেখা। বাচ্চাটা বলল, পাই পয়সা অবদি গুনে রেখেছি দিদি। অনেকবার গুনেছি। হিসেব সব ঠিক আছে।
তাদের কথা শুনে ঝিমন্ত দুটো শ্রমিক বলল, ছুটি দাও, আজকের মতো বাড়ি যাই।
বাচ্চাটার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিয়ে শ্যামলী বলে, আচ্ছা, আজ সব বাড়ি যাও।
যাকে হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেই শ্রমিকটি বলল, দিদি হিসাব মেলাবেন কি?
শ্যামলী পুঁটলিশুদ্ধ ব্যাগে ঢুকিয়ে নিয়ে বলল, আজ যাও। কাল মিলিয়ে নেব।
গাড়ি তার বাড়ির দরজায় পৌঁছে গেলে শ্যোফার বলল, শশাঙ্কদা’র সাথে একটু দেখা করতাম।
শ্যামলী বাবা জেগে আছেন টের পেয়ে বলল, উপরে আসুন।
সিঁড়িতে ওঠার সময় তার ষষ্ঠেন্দ্রিয় বলল, শান্তনু আর অতনু মিলে তাকে লক্ষ্য করছে। শ্যামলী মুহূর্তে শক্ত ও সাবধান হয়ে উঠল।
ক্রমশ…