কালাজাদু
আফ্রিকা নামে যে একটা মহাদেশ ছিল পৃথিবীর
সেই ছায়াচরাচর মহামারিকালে আজও আছে?
খররোদ তুচ্ছ করা কালো মানুষের বোবা নাচে
এখনো কি জেগে আছে সীমাহীন দুর্ভিক্ষ শিবির?
যখন ছেয়েছে বিশ্ব শ্বাসরোধী মারণ ভাইরাস;
ঘোর মৃত্যুভয়ে কাঁপছে আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপ;
প্রতিদিনই বেড়ে যাচ্ছে ভয়ঙ্কর রোগের প্রকোপ;
হাঁপাচ্ছে বিজ্ঞানী আর ডাক্তারেরা লড়ছে রুদ্ধশ্বাস।
সুসভ্য মিডিয়া সেই কাঁপনের তালে থরহরি;
এমনকী মাস্ক পরে বাকরুদ্ধ সংবাদপাঠিকা;
সংবাদ সমূহে তবু দুনিয়ার কোথায় আফ্রিকা !
পৃথিবীর গল্পে তার স্থান শুধু কালাজাদুকরি ?
বাকি পৃথিবী কি জানে সে-ভূখণ্ড কোথায় নিখোঁজ ?
‘ওদের বাঁচামরার কী ভেদ, ওরা তো মরে রোজ’…
অসভ্যসংগীত
সভ্যতা ধ্বংসোন্মুখ হলে চরাচর নেচে ওঠে;
ফোয়ারার মতো নেচে ওঠে সারা উদ্ভিদজগত;
ঘাসের সংসারে সুখ হিরাকুচি ফুল হয়ে ফোটে;
নীল আকাশের ছায়া আরো ব্যাপ্ত, উদার, মহৎ…
কত লাখ লোক মরল, পাখিদের কী বা আসে যায়;
হারিয়ে ফুরিয়ে যাওয়া যত রঙ তাদের ডানার
শত রেখাচিত্র আঁকে, কত রুদ্ধ গানের ভাষায়
ডাক পাঠায়— যেন পায় অবকাশ জীবনকে জানার।
সভ্যতা, বিমূঢ় হলে গেয়ে ওঠে অসভ্য হৃদয়;
‘মর শালা ক্যান-খেকো, টিন-খেকো রাক্ষসের দল’…
আজন্ম কঙ্কালসার অসভ্যের মরণে কী ভয়;
যার কাছে দুর্ভিক্ষের দু’চারমাস আয়ুই সম্বল?
সেই সুরেই গান গায় এই মাটি আর এ-আকাশ;
সভ্যতার সর্বনাশে যেন প্রকৃতির পৌষমাস।