গৃহস্থের সংসারে নতুন এক বিড়ম্বনা শুরু হয়েছে।প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চারটে কল আসছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে।নানারকম স্কীমের লোভনীয় অফার।গৃহিনী হ্যাঁ না বলে রিসিভার নামিয়ে রাখেন।একদিন ভর দুপুরে টেলিফোন –‘হ্যালো ম্যাম আমি অনুরাগ বলছি। গত পরশু শ্রেয়া আপনাকে হেলথ চেক আপের কমবো অফার যেটা দিয়েছিল সেটা নিয়ে কিছু ভাবলেন?অফারটা কিন্তু দারুণ, একজনের খরচায় দুজনের হয়ে যাবে।‘ ঘুমের ঘোরে রিসিভার নামিয়ে রেখে গৃহিনী সে যাত্রা রেহাই পেলেন।
সন্ধ্যেবেলায় আবার ফোন এল।এবার গৃহকর্তা ফোন ধরলেন এবং অন্যপ্রান্তের কন্ঠকে কোন সুযোগ না দিয়েই দাপটের সঙ্গে বলতে শুরু করলেন।স্বাস্থ্যজনিত কোন সমস্যা আমাদের নেই। বুড়ো বয়সে গ্যাস-অম্বল ,হাঁটুর ব্যাথা, মাথা-ঘোরা ছাড়া অন্য কিছু নেই।সেজন্য হেলথ চেক-আপ অফারে আমরা বিন্দুমাত্র আগ্রহী নই।
অন্যপ্রান্ত থেকে সাবলীল ভঙ্গিমায় মহিলা কন্ঠস্বর –স্যার আমি সেলফ হেলপ ট্যুরিজিম থেকে অনুপ্রিয়া বলছিলাম।বয়স্কদের জন্য আমাদের অভিনব কিছু ট্যুর প্ল্যান আছে।
গৃহকর্তা কিছুটা অপ্রস্তুত হলেও নিজেকে সামলে নেন। –সরি কদিন ধরে হেলথ নিয়ে চলছিল কিনা তাই ভাবলাম আপনিও সে বিষয়েই বলবেন।এনিওয়ে আমাদের বেড়ানোর নিজস্ব একটি গ্রুপ রয়েছে। ছেলেমেয়েরা সব ব্যবস্থা করে দেয়, আমরা মজা করে ঘুরে বেড়াই। অন্যপ্রান্তে এবার পুরুষ কন্ঠ।
— নমস্কার স্যার আমি রাজর্ষি।অনুগ্রহ করে দুমিনিট শুনুন প্লীজ।বেড়ানোর সমস্ত রকম ঝক্কি ঝামেলা আমরা সামাল দিই, স্পেশালি এল্ডারলি পিপল লাইক ইউ।
গৃহকর্তা কথা না বাড়িয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে ফোন রেখে দেন। অভিযোগের সুরে গৃহিনীকে বললেন – শোন গিন্নি এবার থেকে যত্রতত্র টেলিফোন নম্বর দেওয়া বন্ধ কর। যতো সব বেকার বাউন্ডুলের দল।এর পরেই ট্রাভেল ইন্সিওরেনস নয়তো ফ্রি অ্যাকসিডেন্ট কভারেজের গল্প শোনাত!
গৃহিনীর কন্ঠে অনুযোগের সুর।‘আমি আবার কবে কাকে ফোন নম্বর দিলাম !
—আগের মাসে এক কিচেন চিমনি কোম্পানির সেলসম্যান এসেছিল। এই কথা সেই কথা বলার পর ফোন নম্বর চাইল আর তুমি দিয়ে দিলে। কী মনে পড়ছে!সব এক সুতোয় বাঁধা বুঝেছ।মার্কেট সার্ভের নামে খদ্দের ধরার ধান্দা।এর পোশাকি নাম টেলি মার্কেটিং।