• Uncategorized
  • 0

কবিতায় গৌতম ভরদ্বাজ

হেমন্ত ও মান্না — দুই সুরের ঈশ্বর

ঘুমছুট পৃথিবী কী দু গন্ডুষ শান্তি চেয়েছিল!
অলোকা তিলক শ্রান্ত অগোছালো।
অলখ ঝোরা বিশুষ্ক মহাকালের
চোখ দুটি খর।
অনুদার দৃষ্টিপাত কঠোর কুঠারের মতো
অভিঘাতী যেন দিগ্বিদিক।
মা-এর স্পর্শের মতো শুশ্রূষার কাঙাল
আমার শহর, দেশ ভূমিশয্যায়
তনছট তখন।
অন্তর্গত অসুখের ভারে রাতের আত্মা
ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে, পুষ্টি কোথায়
আছে তাহলে!
সুরধারা আবদ্ধ  গিটকিরি- ড্যাম-এ
স্বরণ্যাস প্রস্বর পুনঃপৌনিক
সমর্থ-উদ্দিপক জনুঃক্রম রক্তের
মতো প্রয়োজন সুরতানে তখন
মহাকালের গর্ভিণী দেহবল্লরী মাঝে
সুরধারা ভার স্তনযুগলের মতো
সুর ভ্রূনাক্ষ দুটি শহরের উত্তর দক্ষিণ
জুড়ে উদ্ভিন্ন –-কিন্নর কন্ঠ তাঁরা
কালের নৌকা চড়ে এসেছিল।
গ্যাঁজানো বাতাসে মাতালের আম্লিক সন্ধানের মতো তাঁরা স্বর-সুখা-বালি
চার হাতে খুঁড়ে আনে ফল্গু সুরের সন্ধান।
‘ তারপর কী যে হোল গান শুধু গান’।
হংস  মেলে দিল তার পাখা
সরস্বতী বসলেন আসনে।
সুরের নিব্যূঢ় স্বত্ব নির্জল কোহল পাত্র
ভরে যেন ঢেলে দিল তাঁহাদের গলায়।
আনন্ত্য-আবিষ্টের মতো যেন
সবাই ঘুমোলো।
অপার শান্তি নেমে এলে চারিধার—
প্রেমিকের মতো, দুখির মতো
মাতালের মতো, খুকির মতো
গাঁয়ের বধুর মতো, গোপন অভিসার
দুষ্টুমির মতো, শুশ্রূষার মতো দুটি
কন্ঠ সুরে কথায় বিস্তৃত হলে
মান্না আর হেমন্ত উদ্ভাসিত হলেন
যেন দুটি সুরের গৃহস্থ ঈশ্বর –
জলসাঘরে বেলোয়ারি ঝাড় একজনা, চেনাপথের ধাঁধায় ঘুরে পথ হারানোর
ইচ্ছা মগ্ন পথিক  অন্যজন।
ঘুম জমা ছিল মানুষের চোখে।
মা-এর স্পর্শের মতো সহজিয়া অলোল
শুশ্রূষা-সুরে ফের পাড়া জুড়িয়ে সবাই ঘুমোলো।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *