“আমি ও রবীন্দ্রনাথ” বিশেষ সংখ্যায় ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত
by
·
Published
· Updated
রবীন্দ্রনাথ
যখন হিংস্রতা গ্রাস করে প্রতিবাদ ও নীরবতা
আমরা কি দানব প্রজাতি প্রশ্ন ভাসে মনে
অজস্র বিভ্রান্তি থেকে উঠে আসে
আমরা কেউ সাধু নই শয়তান নই,
যে হাতই লহমায় জীবন ছিনিয়ে নেয়
সে হাতই তুলে দেয় অমৃত
মানুষ নুইয়ে দিতে পারে উদ্ধত দুর্বিনীত স্বৈরাচারী মস্তক
এক আদিম নৌকো পৃথিবী ভাসে মহা জাগতিক সরোবরে
কাণ্ডারি এক ঋষি
রবীন্দ্রনাথ
পঁচিশে বৈশাখে
একটা বিশাল জাহাজ ভেসে আসে প্রতিটি পঁচিশে বৈশাখে,
ছোটো ছোটো এঁকে বেঁকে চলা নদীগুলোর হাঁটু জল পেরিয়ে
মানুষ মাঝে মাঝে জাহাজ দেখতে যায়।
সঙ্গীত শুনি প্রতিটি বৈশাখে,
নিবিড় আলিঙ্গনে
এই দাবদাহের মাসটি আমার কাছে প্রিয় হয়ে ধরা দেয়,
এই মাসটি প্রভু, মৃদু বাতাস স্পর্শ করে তপ্ত কপাল,
সবটুকু ক্লান্তি কেড়ে নেয়,
আমি যে প্রান্তিক সে কথা ভুলে যাই
নিজেকে ভাবি মহারাজা
যদিও আমার নিতান্তই একলা চলা।
অনেকদিন বাদে আজ নতুন পাণ্ডুলিপি,
পৃথিবী বড় শান্ত কোথাও বিরোধ নেই,
কেউ আক্রান্ত নয়, গোলাগুলি নেই,
মেঘলা দিনে আমরা সমুদ্র-স্নানে।
আকাশ থেকে নামে রামধনু জলধারা,
ধূসর আলখাল্লায় দীর্ঘদেহীর
দৃষ্টি সমাহিত অরণ্যগভীরে,
নিরাপদ নিদ্রায় শ্বাপদ, শিকারি ও শিকার,
শতাব্দীর রোদ মেখে তিনি চুম্বন করলেন-
মেঘ বৃষ্টি বাতাসের আগমনী।
কেন যে তিনি জ্বলে ওঠেন সমস্ত অন্ধকারে,
কেন যে তাঁর মৃদু হাসি ভাসে
সর্বদা অনিমিখ দিনে রাত্রি গভীরে;
কেন যে তাঁকেই সঁপে দিই প্রস্তাবিত পতঙ্গের
সবুজ উদ্ভাস!
তিনি অন্ধকারে উজ্জ্বল
এক বিষণ্ণ ছবির ক্রম উত্তরণ,
তাঁর কাছে ফিরে আসি বারবার-
একমেবাদ্বিতীয়ম, রবীন্দ্রনাথ!
রবীন্দ্রনাথ
ভাস্কর্য ছুঁয়ে কিছু অন্তিম হাহাকার মিশে গেল নভোচারী আলোকের মত;
আমাদের শরীরে কোন স্থায়ী সঙ্গীত নেই অভ্যাসবশত তবু উজানের তাল
বাজে; ঈশ্বর কি এতটাই ভঙ্গুর- শিথিল ধমনী দিয়ে উড়ে যাচ্ছে যন্ত্রণা।
শেকড় আঁকড়ে বাঁচতে চাইছি আমি- প্রতি মুহূর্তে দুর্বল হয় বোধ- এই
শূন্যতা ভরে দিতে কোন ঈশ্বর পারে না- কতবার আর কতবার, প্রাণ
হাতে দ্রুত লয়ে ছুটে যাব জেব্রা ক্রসিং- আমারও তো থামতে ইচ্ছে করে।
নিশ্বাস বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে চলে আসছি দীর্ঘ পথ, হাইওয়ে জিপিএস অজানা
শহর- প্রেমহীন আকাশ ভেঙ্গে যাচ্ছে বারবার- বিপ্লব ভেঙ্গে যাচ্ছে- ভেঙ্গে
যাচ্ছে ছোট সুখ- টুকরো হচ্ছে ছাতিম গাছ, রবীন্দ্রনাথ পঁচিশে বৈশাখ।