ছটফট করতে করতে দুম করে টেবিলে একটা ঘুষি মেরে বসল শতক। শালা কাঁহাতক টানা যায়! আজ চোদ্দো দিন হয়ে গেল না একটা সিগারেট না এক পেগ মাল। লাইফটা পুরো বিধবা হয়ে গেল। আজকাল একটুতেই মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। টানা বাড়িতে বসে। মাঝেমধ্যে বাজারের দু একটা দোকান ব্যস্…
মোবাইলটা বেজে উঠল ক্রিং করে।
– কি রে বান.. কি করছিস?
– আরেস্লা সুরত! কি করব আবার! এখানে লকডাউনে বসে বসে ছিঁড়ছি। তোদের কি খবর? ইজরায়েলে লকডাউন হয়েছে?
– দুস্লা আমি ইজরায়েলে কোথায়? এখানে এসেছি দিন কুড়ি হয়ে গেল। ছাড় বাড়িতে না ভাটিয়ে চলে আয়। ফ্ল্যাট ফাঁকা।
– আইব্বাপ্! তুই এখানে! ঠিক আছে আসছি। ওয়েট।
দ্রুত জামা আর প্যান্ট গলাতে গলাতে হেঁকে বলল, “ইনু আসছি একটু। তুমি আর বাবা খেয়ে নিও।”
রান্নাঘর থেকে উদ্বিগ্ন হয়ে বেরিয়ে এল ইনু। “এই অবস্থায় কোথায় যাবে? চারদিকে পুলিশ!”
– আরে চাপ নিও না। এই পাশের পাড়ায় সুরতের ফ্ল্যাটে। ও ফিরেছে, একবার যাই।
গ্লাসে ঢালা হুইস্কিতে ছোট্ট একটা চুমুক দিয়ে এক মুঠো কাজু তুলে নিল শতক। “তুই বাঁচালি। পেটে চড়া পড়ে গেছিল। কিন্তু এই মার্কেটে স্লা পেলি কোথায়?”
– আমি এসেই স্টক মেরেছি। জানতাম এরকম কিছু একটা হবে।
খিক খিক করে হাসতে গিয়ে গলায় কাজুর টুকরো আটকে কাশতে শুরু করল সে।
– আস্তে আস্তে খা না।
– আমি ঠিক আছি। নো চিন্তা বস্! কালও চলে আয়। কি করবি বাড়িতে বসে? তুই কি এত ভাবছিস বল তো শতক। তখন থেকে দেখছি…
– না রে একটা ফেঁসেছি। ফ্ল্যাটের লাস্ট ইন্সটলমেন্ট। প্রায় লাখ দেড়েক শর্ট। বাবার একাউন্ট থেকে তুলে দিতে হবে। কিন্তু এই অবস্থায় বাবাকে বাড়ি থেকে বার করতেই ভয় লাগছে। শুনছি বয়স্করাই বেশি এফেক্টেড হচ্ছে।
– কেন জয়েন্ট করিস নি?
– আরে আজ করব কাল করব করে হয় নি। লকডাউন উঠলে এবার করাবই।
– বোঝ্! বাবার কিছু হয়ে গেলে?
– একদম জলে পড়ব। না রে এখন উঠি। কাল সন্ধ্যেয় আসব।
***
তীব্র গতিতে সাইরেন বাজিয়ে একটা অ্যাম্বুলেন্স পাড়া থেকে বেরিয়ে ছুটল হাসপাতালের দিকে। লকডাউন উঠে যাওয়ার প্রায় আটদিন পরে এই বাড়ির একজন ভর্তি হয়েছিল খুব খারাপ অবস্থায়। বয়স্ক মানুষটা আজ সকালেই মারা গেছে। এখন আবার তার ছেলে।
পুলিশ খুঁজছে সংক্রমণ কিভাবে হল। এই পরিবারে কারো বিদেশ যাওয়ার রেকর্ড নেই।