• Uncategorized
  • 0

অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় মানস চক্রবর্ত্তী

আত্মসম্মান

প্রতিদিন স্কুল সেরে ফাল্গুনি একবার দেবলদার দোকানে আসবেই | এটা এখন ফাল্গুনির প্রাত্যহিক রুটিনের মধ্যেই পড়ে | এসে একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি সে প্রত্যহ দেখে | কী আশ্চর্য মিল দু’জনের আসার সময় একই | দুটো দিন মানে শনি আর রবিবার দৃশ্যটা দৃশ্যমান হওয়ার সুযোগ পায় না |
সিন্টু মানে ঐ ভিখারি ছেলেটা তার হাড়ের কাঠামোটা কোনো মতে টেনে নিয়ে গিয়ে দোকানের সামনে এসে দাঁড় করায় | ‘ ডান পা ‘ টা একটু ছোটো – বোধহয় জন্মগত |
কথা নেই , বার্তা নেই – এসেই ডান হাত খানা বাড়িয়ে দেয় | না | দেবলদা কোনোদিনই নিরাশ করেনি | দু’টাকা , পাঁচ টাকা যেদিন যেমন খুচরো পকেটে থাকে , দেয় | ফাল্গুনি এই নিয়ে দেবলদাকে অভিযোগ জানায় , ” ঐ ভাবে দিয়ে তুমি ওর অভাব দূর করতে পারবে ? ” দেবলদা কোনো যুক্তি দেখায়নি | শুধু হেসে বলে , ” ছেলেটা সৎরে |”
সেদিনও ফাল্গুনি এসে দাঁড়াল | প্রায় সঙ্গে সঙ্গে সিন্টুও এসে উপস্থিত | পরিচিত গলার আওয়াজ দিয়ে তার উপস্থিতি জানিয়ে দিল | দেবলদা তখন ফোন করছিল | হাতের ইশারায় দাঁড়াতে বলল | ছেলেটা মুখ দিয়ে বিরক্তি সূচক একটা শব্দ করে ডান হাতটা উপরে ছুঁড়ে দিল | খাটো পা টা মেঝেতে ঠুকে একটা আস্ফালন করে চলে গেলো|
ফাল্গুনি হতভম্ব | বুঝল ভিখারিরও সম্মানের একটা গর্ব আছে | ওখানটাই আঘাত লেগেছে | দেবলদার ফোন যখন শেষ হলো সিন্টু তখন বহুদূর চলে গেছে | দেবলদা দৌঁড়ে গিয়ে পয়সা ক’টা দিয়ে এলো
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।