• Uncategorized
  • 0

সেরা দশটি ভারতীয় হাসির সিনেমা – Film Review

এ দেশে সিনেমা বা চলচ্চিত্রের ইতিহাস প্রায় শতবর্ষেরও অধিক। নির্বাক ছবি দিয়ে শুরু করে সবাক ছবির যাত্রা আর তারপর এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে গিয়ে ভারতীয় সিনেমার গতিপথে বহু ক্লাইম্যাক্স এসেছে। তৈরি হয়েছে নানা স্বাদের ও নানান ধরনের ছায়াছবি। বিভিন্ন বিভাগের বা বিভিন্ন genre এর ছবিই কম বেশি সমাদৃত হয়েছে কিন্তু বারবার আমার মনে হযেছে যে কৌতুক ছবি বা যাকে আমরা কমেডি সিনেমা বলে চিনি, তা কিন্তু কোথাও কোথাও কোন না কোনভাবে উপেক্ষিত থেকেছে। অথচ আমার ব্যক্তিগত মতামত এই হাসির সিনেমা তৈরি করা কিন্তু অন্যান্য সিনেমার চেয়ে ঢের কঠিন ব্যাপার। তাই এবারের আলোচ্য বিষয় শতাব্দীর দীর্ঘ পথে আমাদের প্রাপ্য সেরা ১০টি হাসির সিনেমা।

১০.

ভূতের ভবিষ্যৎ (২০১২) – ২০১২ সালে অনীক দত্তের পরিচালক হিসেবে হাতে খড়ি হয় ভূতের ভবিষ্যত সিনেমার মাধ্যমে। প্রথাগত কমেডি সিনেমার ধারণাকে ভেঙে একেবারে অন্য genre এর সাথে কমেডির এক অদ্ভুত মেলবন্ধন ঘটান তিনি, যাকে বলা হয় হরর কমেডি (যদিও এর আগেও কিছু কাজ হয়েছে নিঃসন্দেহে, উদাহরণস্বরূপ ২০০৭ এর ভুলভুলাইয়া)। এতদিন ধরে বাংলা সিনেমায় যে ধরনের ভৌতিক আর কৌতুক সিনেমা তৈরি হত অনীক দত্তের হাত ধরে এই চল হঠাৎ পাল্টালো। ভূতেরাও যে দর্শকের দাঁতের পাটি বের করে দিতে পারে তা এই সিনেমায় প্রমাণিত হল। এই সিনেমার সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল এর গল্প আর এর চিত্রনাট্য, সাথে ছিল ভালো অভিনেতা অভিনেত্রীদের মেলবন্ধন। বাংলা সিনেমা জগতের সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থীরাই এই যুদ্ধে হাতিয়ার হতে নেমেছিলেন মাঠে। দর্শক ভূতেদের দেখে মন খুলে হেসেছে আর এটাই এই সিনেমার সাফল্য বলে মনে করা হয়। সমালোচকদের প্রশংসা, বেশ কতকগুলি পুরস্কার, সাথে ২০১২ সালের সবচেয়ে বেশি টাকা জোটে এই সিনেমার ভাগ্যে।

০৯.

ধামাল (২০০৭) – ভারতের অন্যতম সফল পরিচালক ইন্দ্র কুমারের ধামাল রয়েছেন এই লিস্টে। ইন্দ্র কুমার প্রথমদিকে একেবারে পারিবারিক সিনেমা যেমন, বেটা, রাজা, দিল এই সব দিয়ে নিজের পরিচালনা শুরু করলেও ২০০৪ সালে ‘মস্তি’ সিনেমা দিয়ে কমেডি সিনেমার দিকে সরে আসেন এবং তারপর একের পর এক হাসির ছবি তৈরি করেছেন। আর এখনও তিনি সেই পথেই আছেন। তবে তার সব সিনেমাগুলির মধ্যে ২০০৭ সালে তৈরি ছবিটিই সেরা। এই সিনেমায় এমন কোন দৃশ্য নেই যে দৃশ্যে দর্শকের দাঁত বেরোবে না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হাসির উপাদান দিতে পারে এমন সিনেমা খুঁজে পাওয়া সত্যিই কঠিন, আর এমন লিস্টে এই সিনেমাকে স্থান না দিয়ে থাকতে পারা মুশকিল।

০৮.

দুল্হে রাজা (১৯৯৮) – এই সময়টা এমন ছিল যে কাদের খান আর গোবিন্দা একসাথে কোন সিনেমায় জুটি করে নামলে সেই সিনেমা দেখতে গেলে চড়া দামে টিকিট কিনতে হত। প্রযোজক এর দল থেকে শুরু করে হল ঘরের মালিক পর্যন্ত খুশিতে মিষ্টি মুখ করতেন। অনেকটা কার্টুন এর ‘tom & jerry’ এর মতো এদের জুটি। তবে যতগুলি সিনেমা তাঁরা করেছেন, তাদের মধ্যে সেরার সেরা এই সিনেমাটি। কী নেই এই ছবিতে? গল্প? অভিনয়? হাসি? কান্না? গান? নাচ? আর সবচেয়ে বড় পাওনা এই সিনেমায় হিন্দি কমেডির ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর অর্থাৎ গোবিন্দা-কাদের খান-জনি লিভার আর তার সাথে নারদ মুনি আসরানি কে একসাথে এক পর্দায় দেখা।

০৭.

গল্প হলেও সত্যি (১৯৬৬) – কমেডি সিনেমা নিয়ে আলোচনা হবে আর ভারতের অন্যতম খ্যাতনামা পরিচালক তপন সিনহার ‘গল্প হলেও সত্যি’ এর নাম আসবে না, এ তো ভাবলেও পাপ হবে। সিনেমাটি নিয়ে কোন কিছু না বললেও যদি শুধু দু জন অভিনেতার নাম বলে শেষ করি তাও যথেষ্ট হবে- এক ভানু বন্দোপাধ্যায় আর দ্বিতীয় রবি ঘোষ। এই দুজনের মধ্যে যা রসবোধ আছে তা শুধু বাংলা কেন সারা ভারতের মধ্যে দুর্লভ। এই ছবিটির সফলতা সম্পর্কে আরেকটা তথ্য দিয়ে দিলে হয়ত পাঠকগণ বুঝতে পারবেন এর মূল্য। এই সিনেমাটি পরবর্তীকালে হিন্দি ভাষায় ‘বাবুর্চি’ নামে, তামিল ভাষায় ‘সাময়ালকারণ’ (samaylkaaran) নামে, আর কন্নড় ভাষায় দুবার যথা- ‘sakala kala vallabha’ এবং’ NO. 73, SHANTI NIVAAS ‘নামে তৈরি হয়েছে। যার মধ্যে মূল বাংলা ছবি তো সুপারহিট ছিলই, তাছাড়াও ‘bawarchi, NO. 73, SHANTI NIVAAS’ এই দুটি ছবিও হিট ছিল। এ ছাড়াও ‘bawarchi’ সিনেমাটি ১৯৭৩ সালে দুটি পুরস্কারও সংগ্রহ করে সেরা অভিনেতার জন্য। বাবুর্চি চরিত্র রূপায়ণে ছিলেন তখনকার বলিউডের সুপারস্টার রাজেশ খান্না।

০৬.

চাচি ৪২০ (১৯৯৭) –  ১৯৯৩ এ হলিউডে তৈরি হয়েছিল এক কমেডি সিনেমা, নাম ছিল Mr. Doubtfire। ভারতে ১৯৯৭ সালে সেই ছবির অনুপ্রেরণায় তৈরি হয় এক ইতিহাস সৃষ্টিকারী হস্যবিনোদনের সিনেমা ‘চাচি ৪২০’। সিনেমাটি অনেক দিক দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল সে সময়। ভারতে আধুনিকতার ছোঁয়ায় স্বামী স্ত্রী বিচ্ছেদের খবর ধোঁয়ার মতো ছড়াচ্ছিল সেসময়। সেই সময় পর্বে দাঁড়িয়ে এরকম বিচ্ছেদের মতো মর্মান্তিক পারিবারিক ও সামাজিক ঘটনার পরিণতিকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার খুব প্রয়োজন ছিল, আর সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম বলতে ছিল সিনেমা আর সেটা যখন কমেডি সিনেমা হয় তখন দর্শকের সংখ্যা অনেকগুণ বেড়ে যায়। আরেক তাৎপর্যপূর্ণ দিক হল এই সিনেমা দিয়েই ভারতের অন্যতম দক্ষ অভিনেতা কমল হাসান নিজেকে পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। এটাই ছিল তার পরিচালক হিসেবে প্রথম ছবি। পরিচালনার পাশাপাশি এই সিনেমায় চাচির মতো কঠিন চরিত্রে অভিনয় করা সত্যিই দুঃসাধ্য ব্যাপার। এই সিনেমাটি সেইসময় ৮ থেকে ৮০ সকলের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পেরেছিল। তার পেছনে যেমন এই পরোক্ষ ঘটনাগুলি কারণ হিসেবে কাজ করেছিল, তেমনই এই সিনেমাকে হিট করতে সাহায্য করেছিল এর প্রত্যক্ষ কারণগুলি। এর সংলাপের জন্য আর গানের শব্দের জন্য কলম ধরেছিলেন গুলজার, অভিনয়ের দায়ভার ছিল সে সময়ের সমস্ত পরিপক্ক খেলোয়াড়দের কাঁধে। কামাল হাসান নিজে একজন অতি গুণী শিল্পী, সাথে পেয়েছিলেন তাব্বু-র মতো একজন সঙ্গী, আমরিস পুরী, ওম পুরী, জনি ওয়াকারের মতো অভিনেতাদের। গানের দায়িত্বে ছিলেন বিশাল ভরদ্বাজের মতো গুণী সংগীতশিল্পী ও সুরকার।

০৫.

মুন্নাভাই MBBS (২০০৩) – একেবারে নতুন পরিচালক রাজকুমার হিরানির আগমন এই ছবি দিয়ে একেবারে একটা নতুন ভাবনা নিয়ে এলেন। এমন বিষয়বস্তু কেউ কোনদিন আগে দেখেনি। বম্বের এক গুন্ডা তার নিজের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জীবনের নীতিগত মূল্য বোঝাতে থাকে প্রতি দৃশ্যে। একটা সিনেমায় কী মাত্রায় হাস্যরস থাকতে পারে, তা এই সিনেমাটি না দেখলে কেউ ভাবতেও পারবে না। অতি সূক্ষ্ম অনুভূতির সাথে হাস্যরস পরিবেশনের পদ্ধতি এত ভালো ভাবে আর কোন ছবিতে কোন নির্মাতা দেখিয়েছেন ঠিক মনে পড়ে না। ২০০৪- এ জাতীয় পুরস্কার, সমালোচকদের মতে সেরা ছবির পুরস্কার, সেরা পরিচালকের পুরস্কার সবই রাজু হিরানির পকেটে ঢুকে পড়ে। ২৫ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সিনেমা হলে ভিড় দেখতে পাওয়া গেছিল। সঞ্জয় দত্ত এর প্রতিটি সংলাপ দেশের যুব দলের মধ্যে ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ল। এই সিনেমা থেকেই আমরা আরেকজন ভালো অভিনেতাকে আবিষ্কার করলাম,তিনি হলেন, বোমান ইরানি। আরশাদ ওয়ারসি প্রথমবার সারিকিট এর মত এত বড় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান আর সেই সুযোগেই বল মেরে বাউন্ডারি পের করে দেন।

০৪.

থ্রি ইডিয়টস (২০০৯) – আরেকবার এই লিস্টে নাম আনতে হল রাজকুমার হিরানির। হ্যাঁ, এই ছবিটিও তাঁরই সৃষ্টি। এই সিনেমাটির ব্যাপারে বেশি কিছু না বললেও হবে। “কাময়াবি কে পিছে মত ভাগো, কাবিলিয়াত কে পিছে ভাগো, কাময়াবি তো ঝক মার কে তুমহারে পিছে আয়েগি” কিম্বা “all is well” এর মতো প্রাণবন্ত সংলাপগুলো এই off-age কমেডি ছবি সম্বন্ধে সবকিছু বলে দেয়। ইতিহাসে এমন কৌতুক সিনেমার উদাহরণ খুব কম আছে, আসলে এই সিনেমাটি প্রথমবার আমাদের সমাজের ছাত্র-ছাত্রী কে শিক্ষার এক নতুন সংজ্ঞা দিল, অভিভাবকদের আবার নতুন করে ভাবতে শেখালো। চিরাচরিত সমাজের শিক্ষা পদ্ধতির চোখে আঙুল দিয়ে তার ভুল গুলো তুলে ধরল। আসলে রাজু হিরানির যে কোন সিনেমায় বারবার ফুটে আসে সমাজের ভুল রীতিনীতির ওপর কুঠারাঘাত করা আর এটাই তার সিগনেচার স্টাইল। এই সিনেমাটি বর্তমান যুগের চলচ্চিত্র শিল্পে একেবারে খাঁটি প্রহসনের উদাহরণ। এক একটা চরিত্র উদাহরণ হিসেবে দর্শকের সমাজে গৃহীত হয়, সে অচলায়তন এর পঞ্চকের মতো অমির খানের চরিত্র রেঞ্চো হোক, কিম্বা বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতি থেকে ভীত চরিত্র রাজু রস্তোগি কিংবা সে হোক কলেজের সবচেয়ে কড়া প্রিন্সিপাল রূপে আবির্ভূত ভাইরাস, বা ক্লাসের মুখস্থ যন্ত্র সাইলেন্সার- এদের মধ্যে কেউই ভুলে যাওয়ার পাত্র নয়। এদের দুর্দান্ত অভিনয়, দুর্দান্ত সহজ সরল সংলাপ এই সিনেমার হিট হওয়ার অন্যতম কারণ।

০৩.

গোলমাল (১৯৭৯) – সাল ১৯৭৯। ভারতের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে। ঘটে গেল মরিচঝাঁপির মতো অভিশপ্ত ঘটনা, গুজরাটের বন্যায় মারা গেল হাজারো হাজারো প্রাণ, রাজনৈতিক চাপে ভারত সরকার মণ্ডল কমিশন গঠন করল। এইসব দ্রুত ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর ঘটনায় প্রভাবিত হয়ে যখন সারা দেশ গভীর চিন্তায় ডুবে আছে, ঠিক সেই সময় হৃশিকেশ মুখার্জি হঠাৎ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিলেন একটা সিনেমা। মাত্র ৪০ দিনের শুটিং এ কম অর্থ খরচে তৈরি করে ফেললেন গোলমাল সিনেমা। কিন্তু দর্শকের মাঝে এই সিনেমা গোলমাল একেবারে করেনি বরং সে বছরের সবচেয়ে সফল সিনেমা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করে। এইরকম পরিস্থিতিতে মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলা সত্যিই একটা কঠিন তপস্যার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। এই সিনেমাটি পরবর্তীকালে ভারতীয় তিনটি ভাষায় পুনর্নির্মিত হয় এবং প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কাতেও সিংহল ভাষায় তৈরি হয়। এই ছবিতে আমোল পালেকার তাঁর সুদক্ষ ও নিপুণ অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শক মনে স্থায়ী জায়গা করে ফেলেন আর তেমনই ছাপ রেখেছেন উৎপল দত্ত। এটি ভারতে তৈরি অন্যতম ক্লাসিক্যাল কাল্ট সিনেমা হিসেবে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেয়।

০২.

হেরাফেরি (২০০০) – প্রযোজক ও পরিচালক এর জুটি কখনো কখনো জাদু খেলা দেখিয়ে দেয়। ঠিক এমনই এক জুটি হল Nadiadwala-Priyadarshan এর জুটি। যাদের পরিচয় আর যাই হোক না কেন, ইতিহাস তাদের মনে রাখবে হাস্যখোরাক প্রদানকারী ডাক্তার হিসেবেই। নাদিয়াদওয়ালা প্রযোজনা কোম্পানির অবদান না থাকলে আজ দেশের কমেডি সিনেমার এত চল কখনোই হত না, ঠিক একই অবদান পরিচালক হিসেবে প্রিয়দর্শন এর। মোট ৪ টি ভাষায় নিজের চলচ্চিত্র নির্মাণের দক্ষতা প্রমাণ করে যখন হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করে প্রিয়দর্শন, হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন কমেডি সিনেমাকে। আর তার গল্পের মূল উৎস হিসেবে খুঁজে নিয়েছিলেন মালায়ালাম এর ১৯৭০-৮০ দশকের ক্লাসিক্যাল কমেডি সিনেমার গল্পগুলোকে। এমনই এক মালায়ালাম সিনেমা ‘Ramji Rao Speaking (1989)’ এর গল্প অনুসরণে তৈরি করলেন ভারতের চলচ্চিত্র ইতিহাসে তৈরি অন্যতম সেরা কৌতুক সিনেমা হেরা ফেরি। যার সিকোয়েল আজও তৈরি হচ্ছে। Best comedy film of the century হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে এই সিনেমা।

০১.

আন্দাজ আপনা আপনা (১৯৯৪) – এই সিনেমা নিয়ে যতই আলোচনা করব, কম হবে, কারণ এটা ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসে মহাকাব্যের মতো জায়গা দখল করে আছে। ভারতের অন্যতম সফল পরিচালক রাজকুমার সন্তোশির হাত থেকে তৈরি এই সিনেমা ১৯৯৪ এ একের পর এক মুক্তি পাওয়া হাম আপকে হ্যা কৌন, বেটা, 1942: A love story এর মতো হিটের ভিড়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। যেনতেন প্রকারেন প্রযোজকের খরচ করা টাকা উঠে এলেও বাজারে বেশিদিন হলের বাইরে এই সিনেমার পোস্টার টিকে থাকতে পারেনি। কিন্তু পরবর্তীকালে এই সিনেমাটি যখন সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষন করে তখন এই সিনেমার মার্কেটভ্যালু ছেড়ে সাধারণ মানুষ এর সিনেমাটিকভ্যালু বুঝতে শুরু করে আর এই সিনেমাটি লিপিবদ্ধ হয়ে যায় চলচ্চিত্র ইতিহাসে তৈরি হওয়া অন্যতম সেরা কৌতুক ছবি বা কমেডি সিনেমা হিসেবে । এটি যদিও ১৯৮৪ এর তেলুগু সিনেমা allulostunnarru এর অনুপ্রেরণায় নির্মিত কিন্তু পরবর্তীকালে আন্দাজ আপনা আপনা-র অনুপ্রেরণায় ৪টি ভারতীয় ভাষায় ৪টি সিনেমা তৈরি হয়- Ullathai Allitha, Veedevadandi Babu, Galate Aliyandru এর মতো দক্ষিণী ভারতের বিভিন্ন ভাষায় তৈরি কৌতুক সিনেমাগুলোর গল্পের মূল উৎস কিন্তু এই সিনেমাটি। এই সিনেমাটি এতটাই সাধারণের জোয়ারে ভেসেছিল যে এত বছর পরেও এর এক একটা চরিত্র, সংলাপ সবকিছুই মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত। উদাহরণস্বরূপ আজও ক্রাইম মাস্টার গোগো এর সেই , “আঁখে নিকাল কর গোটিয়া খেলুঙ্গা” হোক কিংবা পরেশ রাওয়াল এর “ম্যে তেজা হু” এর মতো সংলাপ এর কথাই হোক।

আবারও বলে দিই, সেরা ১০ মানে কিন্তু এগুলিই যে সর্বসেরা তা কিন্তু ঠিক নয়, কারণ এগুলি বিচার করার মাপকাঠি একটি নয় বরং অনেকগুলি আছে। তবে নিঃসন্দেহে এগুলি অন্যতম সেরা ছবি। এছাড়াও কতকগুলো সিনেমা নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে থাকলেও দৈর্ঘ্যের জন্য পারা গেলো না। যেমন, নাসিরউদ্দিন শাহ অভিনীত ও কুন্দন শাহ পরিচালিত ‘জানে ভি দো ইয়ারো’, প্রিয়দর্শন এর ‘মালামাল উইকলি’, শ্রীনিবাস রাও সৃষ্ট ‘পুষ্পক’। পাঠকরা বা সিনেমাপ্রেমীরা এই সিনেমাগুলিও দেখতে পারেন। কথা দিলাম, হতাশ হবেন না।।

Anirban Chatterjee – জন্ম তৎকালীন বিহারের অন্তর্গত ‘কয়লার রাজধানী’ নামে পরিচিত ধনবাদ শহরে। প্রাথমিক শিক্ষা ওখানেই হয় পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গের লাল মাটির দেশ পুরুলিয়ায় আসায় বাংলা সাহিত্যের সাথে পরিচয় ঘটে এবং ভালোলাগা থেকে ভালোবাসায় পরিণতি পায়। সাথে নানান ভাষার সাহিত্য পড়তে শুরু করে। লেখা শুরু হয় গল্প দিয়ে। ২০০৯ সালে প্রথম লেখা গল্প প্রকাশিত হয় লিটিল ম্যাগাজিনে। ২০১১ সালে আশাবরী প্রকাশনী থেকে প্রথম বই প্রকাশিত হয় “অনির্বাণ”, তারপর “অনুভব”। ২০১৮ সালে অনির্বাণের কয়েকটি কবিতা নিয়ে নতুন ধরার শ্রুটিপাট করার চেষ্টা করেন সতীনাথ ব্যানার্জি ও কয়েকজন আবৃত্তিশিল্পী র দল। সাহিত্যের পাশাপাশি অনির্বাণের নেশা সিনেমা। নিজে একসময় বাংলা সিনেমায় সহ- পরিচালকের কাজও করেছে এবং কয়েকটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিও করেছে। অভিনয় করে জাতীয় স্তরে পুরস্কৃত।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।