মানুষ পরিচয়ের পর, জাতি- জ্ঞাতি-সংস্কৃতি পরিচয়ের পর, আমার একটি রাজনৈতিক কর্মী সত্ত্বা আছে।যে রাজনৈতিক দল ও দর্শনকে আমি গৌরব অহংকারের সহিত ধারন করি,চর্চা করি,পরিচয় দি সেই অহংকারী দর্শনের নাম মুজিববাদ, আর এই দর্শনের চর্চাকারী রাজনৈতিক সংগঠনের নাম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ।তবে এই নয় এই দর্শন চর্চাকারী রাজনৈতিক দল ও দর্শনের প্রত্যেক হর্তা-কর্তাদের আমি ধারন করি।যিনি এই রাজনৈতিক দর্শন এই দেশ এ জাতির জন্য রেখেগেছেন, তিনি বিশ্বের যে ক’জন সংগ্রামীজন যারা জন মানুষের সামনের কাতারে থেকে লড়াই সংগ্রাম করে বিশ্ব মাজারে স্থান করে নিয়েছেন, তিনি আর কেউ নন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ, মুজিববাদ বিষয়ে ভাবনা বিস্তারের পূর্বে একটু ইতিহাস পাঠস্মৃতি আওডাতে চাই।
প্রবাসী কবি দাউদ হায়দার
তার এক কবিতায় “আমার জন্মই আজন্ম পাপ”উল্লেখ করেছেন।এই লাইনের একটি গভীর তাৎপর্য আছে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায়।
একবার চিন্তা করুন,৪৭এ এই পুর্ব বঙ্গের মানুষেরাই সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানের জন্য আন্দোলন করেছিলেন।যা পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের মানুষেরা তখনো ঘুমে,সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগছিলেন।
আর বৃটিশের পৃষ্ঠপোষকতায় পশ্চিমা নেতারা বৃটিশ লর্ডরা যা বলছেন তা তারা তোতা পাখির মতো আউড়াচ্ছেন।
সেই সব নেতারা অবশ্য এক একজন সামন্ত প্রভু।এমনিতেই তাদের বহু সাংস্কৃতিক,ভাষা বিভাজন ছিলই।ছিল ধর্মীয় গোড়ামি।জিন্না অধিক শিক্ষিত হলেও মাতাল থাকতেন।তাদের প্রয়োজন যেনতেন প্রকারে ক্ষমতা।এসব বিষয় মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ছাড়া অন্য কেউ আঁচ করতে পেরেছে কি না আমার জানা নেই।কিন্ত তারও কিছু করার ছিল না।কারণ, তার প্রাণের বন্ধু জওহর লাল নেহেরুও জিন্নার অধিক উগ্র হয়েছেন ভারতের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য।গান্ধি যখন কাকে ফেলে কাকে রাখবেন, সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতেন। কারণ তিনি এতই উদারনৈতিক যে, তিনি কারো চোখে চোখ রেখে নির্মোহ কঠিন সত্য কথাটি দৃঢ়দ্বীপ্ততার সহিত বলতেন না বা বলতে পারতেন না।এমনকি গান্ধির হত্যাকারি নাথুরাম গডসেও গান্ধির বাড়ি আসা-যাওয়া করতেন।এবং তার গতিবিধি সম্পর্কে গান্ধি ওয়াকিবহাল হলেও তাকে বারণ করার মতো মানসিক শক্তি নিয়েও আজ অনেকে প্রশ্ন তুলছেন।
বাষ্পীভূত রাজনৈতিক অস্থিতিশীল অবস্থায় বৃটিশ উভয় অঞ্চলে এমন সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছেন,এ সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ক্রমাগত উগ্র উষ্ণতা থেকে অগ্নিশর্মা।
পশ্চিমবঙ্গে অবাঙ্গালি মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীরা সমাজ সংস্কৃতি রাজনীতি এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন তাদের ব্যবসায়িক কারণে
পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতারাও সাম্প্রাদায়িক উগ্রতায় আচ্ছন্ন।এ বিষয়ে কমরেড মোজাফফর আহমদ এর ভারতীয় ‘কমিউনিস্ট পার্টি ও আমার জীবন’পড়লে বুঝা যাবে।বুঝা যাবে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এর ‘ইন্ডিয়া উইংস ফ্রিডম’ বইটি পড়লে। তবে পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালিদের মানসিক পীড়ণ,মেরুদন্ড ক্ষয়ে যাওয়ার বিষয় টি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু অনুভব করেছিলেন।তাই তিনি কংগ্রেসের মাধ্যমে সমগ্র বাঙ্গালির মুক্তির লক্ষ্যে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেছিলেন।
আর পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম নেতা সোহরাওয়ার্দী মেয়র মন্ত্রী হলেও সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পের কারনে আলাদা পাকিস্তান না চাওয়ার বিকল্প ছিল না।কারণ মাড়োয়ারিরা অবিভক্ত বাংলা ফেড়ারেশন করতে দিল না। অবিভক্ত বাংলা ফেড়ারেশন হলেও নেতৃত্বে থাকবে মুসলিম নেতাদের হাতে। এমনি আশংকায় মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীরা সাম্প্রদায়িক রাজনীতিক ও সংগঠনের পেছনে প্রচুর বিনিয়োগ করতে লাগলো।
তো পশ্চিমবঙ্গ,পূর্ববঙ্গ, আসাম,ত্রিপুরার বাঙ্গালিরা আর এক হতে পারলো না।
সেই অভিশপ্ত ৪৭ বিভক্তি থেকে বাঙ্গালি ও বাংলাদেশের জন্য একটি রাজনৈতিক,ভাষা ভিত্তিক, সাংস্কৃতিক, আন্তধর্ম সম্প্রীতি, সামাজিক, অর্থনৈতিক, বৈষম্যহীন রাষ্ট্রিক,জীবন দর্শন আওয়ামীলীগ নেতা বাঙালি জাতির ভাগ্যকর্তা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জন্য তার জীবন দিয়ে রেখে গেছেন একটি রাজনৈতিক দর্শন। সেই জীবন দর্শনের নাম “মুজিববাদ”।আমি এ দর্শনকে বিশ্বাস ও চর্চা করি।যদিও বা তাঁর রাজনৈতিক সংগঠনটির নাম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ।
আওয়ামীলীগ,মুক্তিযুদ্ধ, মুজিববাদ বিষয়ে কথা লেখার পূর্বে,বাংলাদেশের তৎকালীন রাজনৈতিক দল কি কি তারও নাম উল্লেখ প্রয়োজন। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রাচীন দল হিসাবে আওয়ামীলীগকে দেখা যায়।অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলের মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি,কৃষক প্রজা পার্টি,ন্যাপ (ভাসানি)ও ন্যাপ( মোজাফফর)।
এরপর ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনৈতিক দল হিসাবে নেজামে ইসলাম,জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম।
জামাতে ইসলামি বাংলাদেশে গড়ে উঠা কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটি মুলত ভারত ও পাকিস্তান ভিত্তিক রাজনৈতিক দলের এদেশীয় শাখা সংগঠন।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলামি, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম, জামাতে ইসলাম এই সংগঠন সমূহ মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারি ও যুদ্ধাপরাধী দল।
মুসলিম লীগ এর প্রত্যেক বিভক্ত গ্রুপ বা স্ব-নেতার নামে পরিচালিত মুসলিম লীগ কিন্ত ব্রেকেট বন্দি।এসব দল সমূহ পাকিস্তান ভিত্তিক,তবে বাংলাদেশে তাদের প্রাদেশিক শাখা সংগঠন ছিলো ।
শেরে-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টি দল টি যেহেতু ফজলুল হক কেন্দ্রিক তাই এটি আর নানা কারণে বেশিদুর আগাতে পারেনি।বিশাল এই নেতা ও ব্যক্তিত্বের দলটি সিংহভাগ নেতা পরে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল সমূহে বিলিন হয়ে যায়।এমন কি মহান মুক্তিযুদ্ধে ফজলুল হক সাহেবের সন্তানদের মধ্যে অনেকেই যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন।যাক ওসব কথা, এ বিষয় গুলি প্রাজ্ঞজনেরা জানেন।
বিএনপি, জাসদ,জাতীয় পার্টি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল গুলো বাংলাদেশ সৃষ্টির বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গঠিত। এর মধ্যে বিএনপি এখনো আওয়ামী লীগের পর সর্বাধিক জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দল।
এর অন্যতম কারন আমি ব্যক্তিগত পঠন পাঠন ও ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় ৭০এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ৭০থেকে ৮০শতাংশ ভোটে সর্বাধিক আসনে বিজয়ী হলেও ২০-৩০শতাংশ আওয়ামী লীগ বিরোধী ভোট ও ভোটার বাংলাদেশ ছেড়ে পাকিস্তান চলে যায়নি। ওরাই একাত্তর মেনে নিতে পারেনি।ওই ভোটারের সমর্থনকারী নেতা ও কর্মীরাই যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিল।এর মধ্যে কেউ কেউ মত ও পথ পরিবর্তন করলেও বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশ বিরোধী সক্রিয় ছিলো,আছে থাকবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর কেউ কেউ ভিড়ে যান জাসদ,সর্বহারা, পুর্ব বাংলা কমিউনিষ্ট পার্টিতে কর্মী হিসাবে।আওয়ামীলীগ কে অপছন্দ ও বাংলাদেশ কে অপছন্দ,পিতা মুজিব কে মেনে নিতে না পারার কারনে।
আবার রাজনৈতিক ভাবে ধুর্ত,চালাক,চতুর,সুবিধাবাদী রা আওয়ামীলীগ এ থাকা আত্মীয় স্বজন,প্রতিবেশীদের হাত ধরে আওয়ামী লীগ বনে যান।এটাই সত্য।অনেক রাজাকার, আল বদর,আক শামস,যুদ্ধাপরাধে ব্যবহৃত অস্ত্রও মুক্তিযোদ্ধা ফেরত তরুণ যোদ্ধাদের সাথে মিশে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সনদও জোগাড় করে নেয়।
মুক্তিযুদ্ধে যে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে ট্রেনিং নিয়ে যুদ্ধ করতে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে,তাঁদের ক্যাম্প কমান্ডার,গ্রুপকমান্ডাররা যেখানে নির্দেশ দিয়েছে সেখানেই সে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে।
তরুণ প্রজন্মের না জানা,
কু-তর্ক করা কতিপয়কে উদাহরণ দিয়ে উল্লেখ করি
যেমন-বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বান।তিনি সাবেক ছাত্রনেতা ও বিএলএফ কমান্ডার।তাঁর বাড়ি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায়।তিনি ভারতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।আমার জানা মতে তাঁকে দায়িত্ব দেয়া হয় দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়াল খালি, আনোয়ারা এসব অঞ্চলে।
আবার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা জহরলাল পাল চৌধুরী যুদ্ধ করেন সাতকানিয়া ও লোহাগড়া উপজেলায়।
তাঁরা যুদ্ধ শেষে ফেরত এলো নিজ গ্রামে নিজ উপজেলায়।সে জানেনা এই নয়মাসে তার এলাকায় কে দুর্ধর্ষ রাজাকার ছিল, কে স্পাইছিল, কে শান্তি কমিটি ছিল।দেখা গেলো তার এক আত্মীয় রাজাকার ছিল, যোদ্ধা বাড়ী ফেরার সাথে সাথে রাতের আধারে কৌশলে মিশে গেছে তার সাথে।
আবার সংগ্রাম কমিটির নেতাদের সাথে হাত করেও অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা বনে গেছে।সংগ্রাম কমিটির নেতাদের মধ্যে অনেকে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও বয়স্করা আশ্রয় ক্যাম্পে থাকতো।ওনারা উপদেশ সেবা কার্যক্রমে জড়িত ছিলো,যার যে দক্ষতা আছে সে সেই কাজটা করেছে।
তাঁরাও তো দেশ স্বাধীন হলে গ্রামে আসে।তাদের হাত ধরে তাদের অনেকেই যুদ্ধাপরাধ করেও মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছে।এটাই ঘটেছিল সেই ৭২থেকে ৭৫ পর্যন্ত। এর পরের বিষয়টি জিয়া এরশাদ খালেদা, খালেদা -নিজামি যা ইচ্ছা তাই করেছে।
বাঙ্গালির হাজার বছরের একটাই মহাকাব্য ১৯৭১-র মহান মুক্তিযুদ্ধ।আর বাঙ্গালির হাজার বছরের ট্রাজিক কাহিনি ১৯৭৫এর ১৫আগস্ট।এ দুটি ঘটনা ও বিষয়ের ভেতর দিয়ে আমার জন্ম ও বেড়ে উঠা।রাজনীতি সচেতন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসাবে, আমি শৈশব থেকে দেখতে দেখতে আজ এ এপর্যন্ত। তাই আমি আমার ভেতর এসব চর্চা করি। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ অন্তত আমার কাছে উৎসব,বেদনার বিজয়ের। তাই আমি রাজনৈতিক ভাবে মুজিববাদী চেতনা লালন,দর্শন চর্চা আমাকে প্রাণিত করে।নাড়া দেয়।
রক্তের সাথে মিশে যাওয়া মুজিববাদী প্রণোন্মদনা থেকেই শিল্প সাহিত্যের সাথে বসবাস।
শিল্প ও সাহিত্য কর্ম নিছক আমার সময়ের জাবরকাটা কর্ম নয়।এটাকে চেতন সাহিত্য বা চৈতন্য বোধের অবস্থান থেকেই দেখি। তাই কবিতা কর্ম।আমি এভাবেই দেখি ও বুঝি।এই সবুজ বৃক্ষ, অরণ্য, বিশাল সমুদ্র, নদী আমার কৌম সমাজ থেকেই বারে বারে ফিরে যাই মুজিববাদের কাছে।
কারন মুজিববাদ একটি সুসম সমাজ জীবন নির্মাণের পথ নির্দেশিকা। মুজিববাদী দর্শন চর্চাকারী বা এই দর্শন কে ভিত্তিমূল হিসাবে গড়ে তোলা আওয়ামীলীগ কতটুকু গ্রহণ ও বর্জন করেছে তা সময় বলবে।
আওয়ামীলীগের নব প্রজন্ম তা জানে কিনা বা শুনেছে কিনা, মুজিববাদ কিতাব টি তারা দেখেছে কিনা,আমার জানা নেই।মুজিববাদকে বিশ্বাস ও ব্যক্তিগত ভাবে চর্চাকারী দলীয় নেতা এমপি মন্ত্রীর পায়ের কাছে বসে থাকিনা।
পিতা মুজিবের প্রতিটি কর্মই এখনো যুগোপযোগী, কিন্তু বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদের একচেটিয়া বাজার অর্থনীতির কারনে, বিশ্বায়নের কুফলে তা ব্যক্তি রাষ্ট্র সমাজ ও পারিবারিক জীবনে প্রভাব বিস্তারের কারণে আজ মুমুর্ষ অবস্থায়।রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার অবস্থা।হ্যাঁ, অবশ্যই এই দেউলিয়াত্বের প্রভাবে অনুভুতির রাজনৈতিক দলটিও আজ অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি তারা।
তবে পিতা মুজিবের সম্মোহনী প্রভাবের কারনে আজও মানুষ ব্যক্তিকেন্দ্রিক,গোষ্ঠি কেন্দ্রিকতা থেকে আর্থসামাজিক অস্থিরতা বিরাজ করে বিশেষ করে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র সমূহে।
সাম্রাজ্যবাদ ও তার অপরাপর সহযোগী সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, গোষ্ঠী, শক্তির হাত থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হলো রাষ্ট্র ও সমাজে মুজিববাদ চর্চা ও প্রতিষ্ঠা করা।
একটি রাষ্টের কাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি রাষ্ট্রের সংস্কার, পরিবর্তন করা, সাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরি করাও আবশ্যিক। একই সাথে রাষ্ট্রের জনগণের সাহিত্য, সাংস্কৃতিক মান ও চর্চা যদি না বাড়ে তাতেও সমুহ বিপদ সমুহ ওৎ পেতে থাকে। এবং এসব অপরাধী শক্তিগুলো সুযোগ বুঝে যখন যে শক্তি ব্যবহার করা প্রয়োজন তাই তারা হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে।
সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মোকাবিলা শুধু যুদ্ধ দিয়ে সম্ভব নয়।তাদের মোকাবিলা করার পূর্ব মানুষের মনোদৈহিক উন্নয়ন, বিকাশ প্রয়োজন।
বাংলাদেশ, বাঙালি এই বিশাল জনগোষ্ঠী আমাকে ভাবায়। আমি এসব ভাবি চর্চা করি বলেই স্রেফ দলীয় পদবিধারি নেতা,আকস্মিক হয়ে যাওয়া এমপি মন্ত্রীর ড্রইং রুমে গিয়ে আত্মা বিসর্জন দিয়ে জুতা লেহন করতে পারিনা।পারিনা বলেই মুজিববাদের নিরিখে শিল্প সাহিত্যের সাথে উঠবস করি সাহিত্য চর্চা করি বলেই আওয়ামী লীগের ক্ষমতার চুড়ান্ত অবস্থায় থাকার পরও মুজিববাদ বিচ্যুত কর্মকাণ্ড ও নেতাদের কঠোর সমালোচনা করতে পারি।সমালোচনা করি জাতীয়তার মূলনীতি বিরোধী কার্যক্রমের,কারো দ্বারা বা গোষ্ঠীর কারণে মহান মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কার্যক্রম করে ক্ষমতাকে ব্যবহার করে,গোষ্ঠীগত স্বার্থ উদ্ধার করে তখনই আমি জ্বলে উঠতে দ্বিধা করিনা।কারণ আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান।
না দেখা মুক্তিযুদ্ধ, না দেখা জাতির পিতা, মুজিববাদ ও বর্তমান বাংলাদেশ নিয়ে পড়ে ভেবে ভেবে খেই হারাই।হই উদাসীন রাখাল প্রেমিক, নেই সিদ্ধান্ত তবে অবিরত চর্চার ভেতর দিয়ে দেখা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, তৎপরবর্তী বাংলাদেশ, মুজিববাদী রাজনীতি, দর্শন, সাহিত্য সংস্কৃতি সমাজ নিয়ে এই আমার একান্ত ভাবনা।