প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি
রবার্ট লুই স্টিভেনসন (১৮৫০ – ১৮৯৪)
লিখেছেন – মৃদুল শ্রীমানী
ডাক্তার জেকিল আর মিস্টার হাইড। একটি মানুষের দুটি আলাদা চরিত্র। এই গল্পটাও আমার ছোটবেলায় বাবা উল্লেখ করেছেন। এমন নয় যে গোটা গল্পটা তন্নতন্ন করে পড়েছি। কিন্তু গল্পের মূল কাঠামোটা জানতাম। ডাক্তার হেনরি জেকিল একটা সিরাম আবিষ্কার করেন। যেটা খেলে তিনি বদলে আরেকটি মানুষ হয়ে যেতেন। হয়ে উঠতেন মিস্টার হাইড। জেকিল একজন ভদ্র সভ্য লোক। কিন্তু হাইড ছিল নিষ্ঠুর, খুনে, বদমাশ। রাসায়নিক পদার্থটি খেয়ে ভদ্রলোক জেকিল হয়ে যেত খুনে গুণ্ডা হাইড। শহরের বিভিন্ন স্থানে খুন ঘটতে থাকত। খুনিকে পাওয়া যেত না। তারপর জেকিলের ভাঁড়ারে সিরামের কেমিক্যালটি গেল ফুরিয়ে। নতুন করে বানানো কেমিক্যাল সেভাবে কাজ করল না। সেই গল্প একটু আধটু উল্লেখ করেছেন বাবা আমার ছোট বেলায়।
মানুষের ভিতরে ভাল মন্দের দ্বন্দ্ব তো থাকে। দশজনের সামনে যে ভদ্রলোকের মুখোশ এঁটে ঘোরা হয়, ব্যক্তিগত পরিসরে তার অন্য চেহারা দেখা যায়। ডাক্তার জেকিল আর মিস্টার হাইড যেন প্রবাদ বাক্য হয়ে গিয়েছিল। মানুষের ভিতরের বৈপরীত্য, রূঢ় নিষ্ঠুর সত্য উন্মোচন করতে এই ধারণার কোনো তুলনা দেখিনি।
১৮৮৬ সালের ৫ জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয় স্ট্রেঞ্জ কেস অফ ডাঃ জেকিল অ্যাণ্ড মিঃ হাইড। ইংরেজি ভাষায়। তার পর বিস্তর ভাষায় অনূদিত হয়েছে ওই বই। লেখক রবার্ট লুই স্টিভেনসন প্রয়াত হন আজকের দিনে, ১৮৯৪ সালে। বয়স হয়েছিল চুয়াল্লিশ। জন্মেছিলেন ১৮৫০ সালের নভেম্বরে, তেরো তারিখে।